E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দীর্ঘ ১০ বছর পর চট্টগ্রাম সফর

সুস্বাগতম বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা 

২০২২ ডিসেম্বর ০৩ ১৬:১৫:০২
সুস্বাগতম বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা 

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনাকে আপামর চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সু স্বাগতম ও অভিবাদন।চতুর্দিকে জয়জয়কার। চট্টগ্রামবাসী অধীর আগ্রহে জননেত্রীর আগমনের অপেক্ষায়। কতরকম আনন্দ-আয়োজন! বিজয়ী বীরকে কে না অভিনন্দন জানায়! রাস্তার ভিখারি থেকে অট্টালিকাবাসী সবারই একই সুর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য সম্মান, গৌরব ও অহঙ্কার নিয়ে আসছেন, জয় হোক শেখ হাসিনার! মহান আল্লাহ তায়ালা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দীর্ঘায়ু কামনা করুন। রবিবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২২। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ দশ বছর পর পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় যোগ দিবেন চট্টগ্রামে এ উপলক্ষে উৎসবের আমেজ পুরো চট্টগ্রামে।চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর জনসভা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে নৌকার আদলে। জানা যায়, রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখান থেকে দুপুরে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে আসবেন। স্টেডিয়াম থেকে গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রী পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় যোগ দেবেন।

২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর লালদীঘি ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ হাতে তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কথা রেখেছেন, সে অঙ্গিকার পূরণ করেছেন। আবার ২০১২ সালের ২৮ মার্চ চট্টগ্রামে সর্বশেষ জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন তিনি পলোগ্রাউন্ডে ১৪ দলের মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। ১০ বছর ৯ মাস পর একই মাঠে আবার ভাষণ দেবেন তিনি। আজকের বিষয় নিয়ে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা.এম এম মাজেদ তার কলামে লিখেন- প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চতুর্থবারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর শাসনামলে যুগান্তকারী অনেক অর্জন বাংলাদেশের। এর ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে সক্ষম রাষ্ট্রের মূর্ত প্রতীক হিসেবে।

বিজয়ের মাসে ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার জনসভা অনুষ্ঠিত হবে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে।এই জনসভার পরপরই ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী জনসভা করবেন। এর আগেও বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি ও বিপ্লব তীর্থ চট্টগ্রাম থেকেই নেত্রী নির্বাচনী রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেছিলেন।এসময় চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। সে কথা রেখেছেন তিনি। সেই থেকে টানা ১৪ বছরে এই অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, একাধিক ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চার লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, সিটি আউটার রিং রোড, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ নানা মেগা প্রকল্পে বদলে গেছে চট্টগ্রাম।

বর্তমান সরকারের চট্টগ্রামে উন্নয়ন নিয়ে তথ্য

দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম উন্নত হওয়া মানে পুরো বাংলাদেশের উন্নয়ন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানিসহ সব ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের অবদান আছে।আর ব্রিটিশ আমল থেকে কলকাতার পর চট্টগ্রামই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। সারা দেশে ১০০টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে। শিল্পখাতে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে যাচ্ছে । বঙ্গবন্ধু টানেল থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মেট্রোরেল যেতে পারে। যেহেতু সেখানে শাটল চলাচল করে। এছাড়াও নদীর ওপাড়ে কীভাবে মেট্রো রেল নিয়ে যাওয়া যায় এসব বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা উচিত।আর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে মেট্রোরেল স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং সেটি বাস্তবায়নের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের উন্নয়ন তিনি নিজের হাতে তুলে নেবেন। সেটি শুধু ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আজকে চট্টগ্রামকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে।আর চট্টগ্রাম বন্দরের দ্বিগুণ সক্ষমতা নিয়ে বে-টার্মিনাল হচ্ছে। এটি একটা রিজিওনাল বন্দর হবে। এর পাশাপাশি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে, সবমিলিয়ে যে কর্মকাণ্ড চলছে তাতে চট্টগ্রামের নগরায়ন আগামী ১০ বছর অনেক দ্রুত হবে। সেটি মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ দেখতে পান। আমরা অনেক কিছু দেখতে পাই না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অনেক কিছুই দেখতে পান। সে কারণে তিনি দেশের উন্নয়নের স্বার্থে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।

মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে জানা যায়।স্বাধীনতার পরে দেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ছিল ৭ শতাংশের একটু বেশি। আজকে কৃষিখাতের অবদান ১২ থেকে ১৩ শতাংশে এসেছে। শিল্পখাতের অবদান ছিল ৬ থেকে ৭ শতাংশ। আর এখন শিল্পখাতের অবদান ৪০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ দেশ শিল্পোন্নত হচ্ছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে আমাদের শিল্পখাতের অবদান আরও বাড়বে। জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সংস্থা (কোইকা) চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে। এ কাজে মোট ৭০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে কোইকো ৫১ কোটি টাকা এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২০ কোটি টাকা দেবে।

আর বিগত প্রায় দেড় দশকে চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি প্রকল্প ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। নগরীতে চারটি ফ্লাইওভার হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। সিটি আউটার রিং রোড, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিং রোড, মেরিনাস সড়কসহ নগরীর সড়ক অবকাঠামোয় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকায় পানিবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন হয়েছে। এখন ছয় লেন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সড়ক টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ শেষ পর্যায়ে।

চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণও এগিয়ে যাচ্ছে। মীরসরাইতে দেশের সর্ববৃহৎ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। আনোয়ায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় পানি সঙ্কটের অবসান হয়েছে। ওয়াসার পয়ঃনিস্কাশন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ হয়েছে। বে-টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেন করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রকল্পও এগিয়ে যাচ্ছে। মহানগরীতে মেট্রো রেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাছাই শুরু হচ্ছে।

উদ্বোধন করবেন ৩০ প্রকল্পের কাজ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সফরে এসে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। একইসাথে আরও চারটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনও করবেন তিনি।প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে তিনটি প্রকল্প। তা হল ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলায় হালদা নদী ও ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, সন্দ্বীপ উপজেলার ৭২ নং পোল্ডারের ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্লোপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প ও বাঁশখালী উপজেলার ৬৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১সি পোল্ডারের সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের স্থায়ী পুনর্বাসন প্রকল্প (২য় সংশোধিত)।

সংবাদমাধ্যমে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের লালদীঘি মাঠে নির্মিত ৬ দফা মঞ্চসহ চট্টগ্রামের ১৮টি স্কুল–কলেজ ভবনের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে আধুনিক জাতিসংঘ পার্ক এবং মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণসহ ৪টি প্রকল্পের। কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, ফটিকছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এবং রাউজান টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া কোতোয়ালী থানাধীন দারুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসার একটি ৬ তলা ভবন এবং সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুলে একটি ৫ তলা ভবন ও একটি ৪ তলা প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার্কশপ, একতলা সার্ভিস এরিয়া ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে কোতোয়ালী থানাধীন গুল–এ জার বেগম সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবন, কুসুমকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, মীরসরাই উপজেলার করেরহাট কে.এম. উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, পাঁচলাইশ থানাধীন বন গবেষণাগার উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, বোয়ালমারী উপজেলাধীন হাজী মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, সন্দ্বীপের সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন এবং ডবলমুরিং থানাধীন সরকারি সিটি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হবে।এছাড়া উদ্বোধন করা হবে পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবন সমপ্রসারণ এবং খুলশী থানাধীন সিএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনের সমপ্রসারণ কাজ।উদ্বোধন করা হবে নৌ–পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন (প্রতিটি ৫০০০ বিএইচপি/ ৭০ টন বোলার্ড পুল) টাগবোট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প ও ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী সেদিন একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি–আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন প্রকল্প, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের মীরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষাঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, চট্টগ্রামস্থ বিপিসি ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। এ জন্য জনসভার মঞ্চের পাশে ভিত্তিফলকগুলো স্থাপন করা হয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চল উন্নয়ন

বর্তমান সরকারের আমলে পার্বত্য জেলার উন্নয়নের পথ সুগম হয়েছে।আর সব ভয় আর আতঙ্ক ছাপিয়ে আজ সমতলের সঙ্গে একইভাবে এগিয়ে চলেছে পার্বত্য তিন অঞ্চল। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা ও কৃষিতে এসেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। সহজ যোগাযোগ, বিদ্যুতের আলো আর আধুনিকতার মিশেলে তিন পার্বত্য অঞ্চল যেন সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের মডেল। সবুজ পাহাড়ে সাদা মেঘ। চুলের সিঁথির মতো একেবেঁকে চলা সড়ক। তিন কন্যার রূপ যেন আচ্ছন্ন করে রাখে ‌পার্বত্য এলাকায় আসা পর্যটকদের।তবে আগের অবস্থা এমন ছিল না। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যেতেই সময় লাগতো ৭ দিন। আর এখন মাত্র ২ ঘণ্টার দূরুত্ব। দুর্গম অন্ধকার পাহাড় আলোকিত হবার কথা একসময় যেন ছিল অসম্ভব কল্পনা। কিন্তু আজ হাজার ফুট উচ্চতার পাহাড়ের টানে ছুটে যান পর্যটকরা। তাদের কাছে আতঙ্কের পাহাড় আজ এক বিনোদনের নাম।১৯৯৭ এর ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তির পর পাহাড়ে বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়েছে ১ হাজার ৫৩৭টি। পাড়াকেন্দ্র করেও শিক্ষা ও চিকিৎসায় দেয়া হচ্ছে বিশেষ সুবিধা। চুক্তির আগে সড়ক ছিল ২ হাজার ৮০৩ কিলোমিটার, যেটি বর্তমানে ৭ হাজার ৯৪৯ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতাল ও ক্লিনিক মিলে ছিল মাত্র ২৪টি যা বর্তমানে ২৭০টি। অবহেলিত পাহাড়ে বিপ্লব এসেছে কৃষিতেও।পর্যটকদের কাছে এক সময়ের অবহেলিত থাকা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এখন এক বিষ্ময়। উন্নয়ন স্পর্শে তা আজ অপার সম্ভাবনার।

পরিশেষে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন। শেখ হাসিনা দেশকে বদলে দিয়েছেন। বিশ্ব এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে।গত সাড়ে ১৩ বছরে যারা শেখ হাসিনাকে প্রত্যক্ষ করেছেন তারা এ কথা অস্বীকার করতে পারবেন না যে নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছেন। তার নেতৃত্বের গুণাবলী শুধু দেশের জনগণের মধ্যে প্রশংসিত হয় নি, বরং তার নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছেন বিশ্ব দরবারে। বাংলাদেশের নেতা থেকে তিনি বিশ্ব নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দেশের ভেতরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অনান্য বিষয়ে তিনি সব সময় সরব থেকেছেন বিধায় আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বড় বড় দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা তার কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নেতারা প্রশংসা করেছেন। কোভিড-১৯ মোকাবেলাই সরকারের সফলতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন গত সাড়ে ১৩ বছর। আর আমাদের বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের আজকের যে অবস্থান সেটা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কারনে। তবে তার এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করেছে সরকারের ধারাবাহিকতা কারণ বাংলাদেশের মতো দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের জনগণ তার ওপরে আস্থা রেখে তাকে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবার সুযোগ করে দিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস আগামী ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ একই রকমভাবে তার উপরে বিশ্বাস রাখবে কারণ এই মুহূর্তে আমাদের সকলের মাথায় যে বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত সেটি হচ্ছে- বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার বিকল্প এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ যেমন সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয় ঠিক তেমনিভাবে শেখ হাসিনা বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়নের আরেক নাম হয়ে উঠেছেন। ফলে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন উন্নত দেশের অভিমুখে ধাবমান।আর বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে নিবেদিত জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার যোগ্য উত্তরসূরি এই কন্যা এক অনন্য ব্যক্তি হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছেন।

আর আপনি আসছেন, চট্টগ্রামে আপামর জনতা তাই আনন্দিত! আপনাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাতে সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ। ফুলের পাপড়ি বিছিয়ে, হৃদয়ের সব উষ্ণতা দিয়ে আপনাকে বরণ করবে চট্টগ্রাম বাসী। আপনার উপস্থিতি আমাদের সাহস জোগায়, প্রেরণা জোগায়, উজ্জীবিত করে। সামনে বহু পথচলা। যেতে হবে বহুদূর। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও কুচক্রীদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আপনার নেতৃত্বে জাতি এগিয়ে যাবে আগামী দিনের সোনালি দিগন্তে! আপনাকে অভিনন্দন প্রিয় প্রধানমন্ত্রী! আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক, প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test