E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শীতের মৌসুমে আদার ঔষধি গুণাগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা

২০২৩ জানুয়ারি ০২ ১৫:১৭:৪২
শীতের মৌসুমে আদার ঔষধি গুণাগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


কথায় বলে ‘আদা সকল রোগ নিরাময়ে দাদা’। যার অর্থ আমাদের শরীরে সব রোগ নিরাময়ের জন্য আদা যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট বিদ্যমান। যার কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন।

জেনে নেওয়া যেতে পারে আমাদের কোন কোন সমস্যা নিবিড়ভাবে কাজ করে আদা:- আসলে, আদা খাওয়া এতটাই উপকারী যে প্রতিদিন প্রতিটি বাড়িতে আদা ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া আদার অনেক গুণ রয়েছে। আপনি কি জানেন আদাও একটি ভেষজ, এবং পরিপাকতন্ত্র, প্রদাহ, শরীরের ব্যথা, সর্দি এবং কাশির মতো রোগে ব্যবহার উপযোগী। শুধু তাই নয়, আদার ঔষধি গুণ হৃদরোগ, রক্তের সমস্যা, পাইলস ইত্যাদি রোগেও উপকারী।

শীতে বাইরের প্রকৃতিই যে কেবল রূপ পরিবর্তন করে তা কিন্তু নয়। শীতের তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পোশাক, খাবার এবং চারপাশের পৃথিবীও বদলাতে শুরু করে। শীতের খাবারের তালিকায় গাজরের হালুয়া, সর্ষে শাক, খেজুর গুড়ের পিঠা-পায়েস তো থাকেই, সেইসঙ্গে একটি উপাদান আমাদের প্রতিদিনের খাবারে রাখা জরুরি। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, আমাদের স্যুপ, চা, সবজি, মাংসের কারি সবকিছুতেই বাড়তি স্বাদ ও গন্ধ যোগ করে আদা। শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচতে খাবারে আদার ব্যবহার করা জরুরি। কারণ এটি আমাদের ঠান্ডাজনিত অসুখ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

আদার উপকারিতা ও অপকারিতা

আয়ুর্বেদে, আদার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অনেক ভাল জিনিস বলা হয়েছে, যা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুধামন্দা, বদহজম, বাত-পিত্ত দোষ ইত্যাদিতে আদার ঔষধি গুণের উপকারিতা নিতে পারেন। ক্ষত, পাথর, জ্বর, রক্তস্বল্পতা এবং প্রস্রাবের রোগেও আদার উপকার পাওয়া যায়।

আসুন এখানে এক এক করে জেনে নেওয়া যাক আদা সেবনে অনেক রোগে উপকার হয়, সেই সাথে জেনে নিই আদার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি হতে পারে।

আদা সুগন্ধযুক্ত। আদা উদ্ভিদ বহু বছর বেঁচে থাকে। এটি প্রায় 90-120 সেমি উচ্চ, কোমল। প্রতি বছর রাইজোম থেকে নতুন শাখা বের হয়। এর রাইজোম সাদা বা হলুদ রঙের যা বাইরে থেকে বাদামী। আদার ডোরা আছে এবং এটি গোলাকৃতির পাশাপাশি এক বা একাধিক অংশে বিভক্ত।

এখানে আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুব সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে যাতে আপনি আদার ঔষধি গুণের সম্পূর্ণ উপকারিতা নিতে পারেন।

আদার ঔষধি গুণাবলী

শুষ্ক আদা তাপের কারণে কফ নিরাময়কারী, প্রদাহ রোধকারী, উদ্দীপক, ব্যথা উপশমকারী, স্নায়ুকে উদ্দীপিতকারী, তৃপ্তিদায়ক, উদ্দীপক, গভীরকারী, হজমকারী, বায়ুচলাচলকারী, শূলরোধক এবং আর্শোগনাকারী। উষ্ণ হওয়া, হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালীগুলিকে উদ্দীপিত করে। আদা তেতো ও আলিফ্যাটিক হওয়ায় এটি কফ ও শ্বাসকষ্ট এর জন্য উপকারি। এর তীক্ষ্ণতার কারণে এটি বিপাক ক্রিয়ায় বাধার উৎসও দূর করে।

আদা সেবন বা ঔষধি ব্যবহারের পরিমাণ ও পদ্ধতি নিম্নরূপ

মাথাব্যথা থেকে মুক্তিতে আদার উপকারিতা: 50 মিলি দুধে 5 গ্রাম শুকনো আদার পেস্ট মেশান। এটি ফিল্টার করুন এবং নাক দিয়ে নিন। এটি তীব্র মাথাব্যথা নিরাময় করে।

আদার ঔষধি গুনাগুন দিয়ে কানের ব্যাথার চিকিৎসা: আদার রস হালকা গরম করুন অথবা আদা, মধু ও কলা মিশিয়ে তেলে রান্না করতে পারেন অথবা চারটি মিশিয়ে কানে ১-২ ফোঁটা দিতে পারেন। এটি কানের ব্যথা নিরাময় করে।

ক্যাথ ফলের রস, বিজৌড়া লেবুর রস এবং আদার রস সমান পরিমাণে মিশিয়ে নিন। একটু গরম করে নিন। এটি ছেঁকে নিন এবং 1-2 ফোঁটা কানে দিন। এটি কানের ব্যথা নিরাময় করে।

জলপাই তেলে আদা, লিকোরিস মিশিয়ে নিন। একটু গরম করে নিন। এটি ছেঁকে ১-২ ফোঁটা কানে দিলে কানের ব্যথায় খুব উপকার পাওয়া যায়।

2-5 ফোঁটা শুকনো আদার রস কানে লাগালে কানের ব্যথা দূর হয়।

দাঁতের ব্যথা নিরাময়ে আদার ব্যবহার

দাঁতের ব্যথায় আদা ব্যবহারের উপকারিতা রয়েছে। এক টুকরো শুকনো আদা দাঁতের মাঝে চেপে রাখলে দাঁতের ব্যথা নিরাময় হয়।৫ মিলি আদার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে কাশি দূর হয়।

কাশি এবং সর্দির সাথে লড়াইয়ে আদার ব্যবহার

100 মিলি দুধে 2 গ্রাম আদা গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। এটি ঠান্ডায় উপকারী।২ চা চামচ আদার রসে মধু মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা সেবন করুন। এটি শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি ইত্যাদি রোগে উপকারী।5 মিলি আদার রসে এক-চতুর্থাংশ মধু মিশিয়ে নিন। সকাল-সন্ধ্যা খেলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, সর্দি ও জ্বর ভালো হয়।সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে দিনে দুবার আদার ক্বাথ পান করুন।

বমি বন্ধ করতে আদার ব্যবহার: 10 মিলি আদার রস, 10 মিলি পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পেটে দিন।

জ্বরের সঙ্গে লড়াইয়ে আদার উপকারিতা

জ্বরে শুকনো আদা ও ধামসার ক্বাথ পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

সমান পরিমাণে শুকনো আদা, পিত্তপাপদ, নাগরমোথা, খুস, লাল চন্দন এবং সুগন্ধি মিশিয়ে একটি ক্বাথ তৈরি করুন। এর 10-30 মিলিলিটার পান করলে জ্বর ও অতিরিক্ত তৃষ্ণার সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।

শুকনো আদা, গন্ধবালা (সুগন্ধ), পিঠা পাপড়া, খুস, মোথা এবং লাল চন্দন দিয়ে একটি ক্বাথ তৈরি করুন। শীতল হওয়ার পর এই ক্বাথ সেবন করলে অতিরিক্ত তৃষ্ণা, বমি ও পিত্তদোষের কারণে জ্বর এবং শরীরের জ্বালাপোড়ার সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়।

জ্বরের সময় ক্ষুধা না থাকলে 5 মিলি আদার রসে 1 গ্রাম করে গরম করে খান।

প্রথম দিনে 2 মিলি তাজা আদার রস দিন। এর পরে, প্রতিদিন 2 মিলি পরিমাণ বাড়ান। এভাবে ২০ মিলি পরিমাণে পৌঁছে গেলে এক মাস এভাবে দিতে হবে। একইভাবে, এটি 2 মিলি দ্বারা কমিয়ে বন্ধ করুন।

ওষুধ হজম হওয়ার পর প্রতিদিন দুধ বা রসের সাথে খাবার খেতে হবে। এভাবে টিউমার, পেটের রোগ, পাইলস, ফোলা, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, ক্ষুধামন্দা, ডিসপেপসিয়া, রিকেট, জন্ডিস, মনোরোগ, কাশি ও কফ বৃদ্ধির মতো রোগে আদা খেলে উপকার পাওয়া যায়।

পাচনতন্ত্র সম্পর্কিত ব্যাধির জন্য আদার ব্যবহার

10-20 মিলি আদার রসে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে রোগীকে দিলে পেটের জ্বালা পোড়া থেকে মুক্তি পাবে।

বদহজমে আদার উপকারিতা

গুড়ের সাথে সমপরিমাণ শুকনো চূর্ণ খাবার আগে খান। এটি পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্যে উপকারী।

কারো বদহজম হলে হরতকি ও শুকনো আদা সমপরিমাণে ২-৩ গ্রাম গুঁড়ো করে খাবার আগে সেবন করুন। এটি বদহজম রোগে উপকারী।

শুকনো আদা, আতিস ও নাগরমোথার ক্বাথ আম হজমে সাহায্য করে। শুকনো আদা, আতিস, নাগরমোথা পেস্ট, শুধু হরতকি গুঁড়া বা শুকনো আদার গুঁড়া নিয়ে কুসুম গরম পানি (২ গ্রাম) নিন। এটি আম হজমেও সাহায্য করে।

সকালে যদি মনে হয় রাতের খাবার হজম হচ্ছে না, তাহলে মিরবলান, শুকনো আদা ও কলার গুঁড়া জলের সঙ্গে খান। বিকেলে বা সন্ধ্যায় অল্প খাবারের পর এটি নিন।

প্রতিদিন 10-20 গ্রাম শ্রিংভেরাদ্য ঘি খেলে বদহজম, ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা, বাত, কোমর ব্যথা, অন্ত্রের রোগে উপকার পাওয়া যায়।

প্রতিদিন ২-৩ গ্রাম হরতকি ও শুকনো আদা সমান পরিমাণে খান। এটি খেলে বা শুকনো আদার গুঁড়ায় গুড় মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে হজম ভালো হয়। এটি পরিপাকতন্ত্রের রোগ নিরাময় করে এবং পাইলসের ক্ষেত্রে উপকারী।

শুকনো আদার একটি ক্বাথ তৈরি করুন। 10-30 মিলিলিটার মধ্যে মধু মিশিয়ে পান করলে হজম শক্তি শক্তিশালী হয়।

ধনে ও শুকনো আদা সমান পরিমাণে নিয়ে ক্বাথ তৈরি করুন। 10-30 মিলি পরিমাণে খেলে হজম শক্তি উন্নত হয়।
1-2 গ্রাম শুকনো আদা গুঁড়োতে 5 মিলি লেবুর রস যোগ করুন। চার গুণ চিনির সিরায় মিশিয়ে নিন। এতে 1 গ্রাম ত্রিকটু পাউডার যোগ করে সেবন করুন। এটি হজম শক্তির উন্নতি ঘটায় এবং ক্ষুধা বাড়ায়।

1 গ্রাম শুকনো আদা গুঁড়ো 2-5 গ্রাম বেল পেস্টে মেশান। এটি গুড়ের সাথে সেবন করুন এবং বাটার মিল্ক খান। এটি ডিসপেপসিয়াতে উপকারী।

অ্যাসিডিটি চিকিৎসায় আদার ব্যবহার

শুকনো আদা এবং পারওয়ালের একটি ক্বাথ তৈরি করুন। 10-30 মিলি পরিমাণে এটি গ্রহণ করুন। এটি অ্যাসিডিটি, বমি, চুলকানি, জ্বর, ফোঁড়া এবং শরীরের জ্বালাপোড়া নিরাময় করে।


> ক্ষুধা বাড়াতে আদার ব্যবহার

জ্বর, বদহজম, অত্যধিক তৃষ্ণা ও ক্ষুধামন্দা শুকনো আদা ও পিঠাপাপা রান্না করে খেলে সেরে যায়। এটি প্রতিদিন 5-10 গ্রাম পরিমাণে নিন।

শুকনো আদা, অ্যাবসিন্থ, নাগরমোথা এবং গুদুচি রান্না করুন এবং প্রতিটি 5 গ্রাম খান। এটি জ্বর, অত্যধিক তৃষ্ণা এবং ক্ষুধা নিরাময় করে।

1 গ্রাম যবক্ষরের মধ্যে সমপরিমাণ শুকনো আদা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এতে দ্বিগুণ ঘি দিন। এতে ক্ষুধার অভাব দূর হয়।

প্রতিদিন সকালে 2 গ্রাম শুকনো আদা কুসুম গরম পানির সাথে খান। এতে ক্ষুধামন্দা ও দূর হয়।

শুকনো আদার গুঁড়া ২ গ্রাম ঘিসহ বা শুধু শুকনো আদার গুঁড়া গরম পানির সঙ্গে প্রতিদিন সকালে খেলে ক্ষুধা বাড়ে।

প্রতি খাবারের শুরুতে নুন ও আদার চাটনি খেলে জিহ্বা ও গলার রোগ নিরাময় হয়। ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং হৃদপিন্ড শক্তিশালী হয়।

আদার আচার খেলে ক্ষুধা বাড়ে। ক্যারাম বীজ, মেথি, মাইরোবালান এবং শুকনো আদা গুঁড়ো সমান পরিমাণে রাখুন। 2-4 গ্রাম পরিমাণে খেলে ব্যথার উপশম হয়। এতে ক্ষুধা বাড়ে।

> ডায়রিয়া বন্ধ করতে আদার উপকারিতা

পিপলি, শুকনো আদা, ধনে, ভুটিক, হরতকি, ভাচা ও হরিবড়, নাগরমোথা, বেল, শুকনো আদা ও ধনেপাতা খেলে ডায়রিয়া বন্ধ হয়।

3-6 গ্রাম শুকনো আদা গুঁড়ার সাথে সমান পরিমাণ ঘি যোগ করুন। ক্যাস্টর শীট দিয়ে মুড়িয়ে রান্না করুন। পাকা পাউডারে সমপরিমাণ চিনি মিছরি মিশিয়ে সকালে সেবন করলে ডায়রিয়া ও শূল রোগের উপশম হয়।

শুকনো আদা দিয়ে রান্না করা পানি পান করলে ডায়রিয়ায় উপকার পাওয়া যায়।

কফ ও সাধারণ দোষের কারণে ডায়রিয়া হলে ১-২ গ্রাম শুকনো আদা কুসুম কুসুম গরম পানিতে সেবন করুন। এটা লাভজনক।

শুঁথি, ঘি সেবন প্রদাহ, অন্ত্রের রোগ, সাধারণ রোগ, রক্তশূন্যতা, প্লীহা রোগ, কাশি ও জ্বর ইত্যাদিতে উপকারী।

শুকনো আদা, পোস্ত বীজ, বেল কার্নেল, কলার মোথা, ধনে, মুচির রস দিয়ে একটি ক্বাথ তৈরি করুন। 10-30 মিলি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া ও পিত্ত-কাফজ জ্বরে উপকার পাওয়া যায়।

ধনে (10 গ্রাম) এবং শুকনো আদা (10 গ্রাম) মিশিয়ে একটি ক্বাথ তৈরি করুন। 10-30 মিলি পরিমাণে সকালে এবং সন্ধ্যায় রোগীকে দিন। এটি জ্বর, ব্যথা এবং ডায়রিয়া নিরাময় করে।

আমলকি বা মসুর ডালের পেস্ট দিয়ে নাভির চারপাশে বৃত্ত তৈরি করুন। এতে আদার রস ভরে দিন। রোগীকে যতক্ষণ সম্ভব অচল থাকতে দিন। এটি ডায়রিয়া বন্ধ করে এবং ডায়রিয়ার ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।

> পেটের গ্যাসের সমস্যায় আদার উপকারিতা

আদার রস দুধে গরম করে সেবন বা চিবিয়ে খেলে পেটের রোগে উপকার পাওয়া যায়।

দুধের সাথে আদার পেস্ট খেলে গ্যাস ও পেটের রোগে তাৎক্ষণিক উপকার পাওয়া যায়।

শুকনো আদার গুঁড়া (2-4 গ্রাম) দুধ বা জাম্বুরার রসের সাথে খান। এতে পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়।

25 গ্রাম কালো তিল (খোসা ছাড়া), 100 গ্রাম গুড় এবং 50 গ্রাম শুঁথির গুঁড়া মেশান। দুধের সাথে 2-5 গ্রাম খেলে পেটের গ্যাস, অন্ত্রের রোগ এবং বাত দোষের কারণে যোনি ব্যথার সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।

25 মিলিগ্রাম হিং এবং সৌরচাল লবণ (1 গ্রাম) 25-50 মিলি শুকনো আদা ও রেড়ির মূলের ক্বাথের মধ্যে মিশিয়ে খেলে পেটের ব্যথা দূর হয়।

> শরীরের ব্যথার জন্য আদার ব্যবহার

শুকনো আদা, রেড়ির মূল এবং বার্লি সমান পরিমাণে একটি ক্বাথ তৈরি করুন। এটি 25-50 মিলি পরিমাণে পান করলে শরীরের ব্যথা দূর হয়।

শুকনো আদা ও সরিষার ক্বাথ তৈরি করে 10-30 মিলি পরিমাণে খেলে শরীরের ব্যথা দূর হয়।

10-30 মিলি শুকনো আদার ক্বাথের মধ্যে 1 গ্রাম বিট লবণ, 125 মিলিগ্রাম হিং এবং 2 গ্রাম শুকনো আদার গুঁড়া মেশান। এটি সেবন করলে হৃৎপিন্ডের ব্যাথা, পাঁজরের ব্যাথা, কোমর ব্যাথা, অ্যাসাইটিস এবং কলেরা ইত্যাদি রোগে উপকার পাওয়া যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্যের অভিযোগ থাকলে এর গুঁড়ো ক্বাথ দিয়ে পান করতে হবে।

কলেরার চিকিৎসায় আদা ব্যবহার করে

শুকনো আদা এবং বেল (10-30 মিলি) এর ক্বাথ বমি ও কলেরায় উপকারী।

10 গ্রাম আদার মধ্যে 5 গ্রাম পিপলি মিশিয়ে উভয়ের খোসা ছাড়িয়ে নিন। এর কালো মরিচ (65 মিলিগ্রাম) সমান একটি ট্যাবলেট তৈরি করুন। এই ট্যাবলেটগুলো হালকা গরম পানির সাথে খেলে কলেরা রোগে উপকার পাওয়া যায়।

> আমাশয়ের চিকিৎসায় আদার ঔষধি গুণাবলী

শুকনো আদা, নাগরমোথা, আতিস ও গিলো সমপরিমাণে নিয়ে পানি দিয়ে ক্বাথ তৈরি করুন। এই ক্বাথ সকাল-সন্ধ্যায় (20 থেকে 25 মিলি) খেলে ডিসপেপসিয়া, দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডিসপেপসিয়াতে উপকার পাওয়া যায়।

> অন্ত্রের রোগ সারাতে আদার উপকারিতা

গিলয়, আটিস, শুকনো আদা এবং নাগরমোথার ক্বাথ (20 থেকে 25 মিলি দিনে দুবার) পান করা অন্ত্রের রোগে উপকারী।

> পেটের রোগের জন্য আদার ব্যবহার

ভিনেগার ও আদা সমান পরিমাণে মিশিয়ে নিন। এটি পরিপাকতন্ত্রের রোগ নিরাময় করে।

100 মিলি লেবু, পুদিনা এবং আদার রস একটি রূপার পাত্রে রান্না করুন এবং ঘন করুন। এটি খেলে পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে।

প্রতিদিন খাবারের আগে আদা খেলে জিহ্বা ও গলা পরিষ্কার হয়। এটি ফোলাভাব, হৃদরোগ, পেটের গ্যাস, পাইলস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফাঁপা নিরাময় করে।

মধুর সাথে আদা মিশিয়ে নিয়মিত খান। এটি ফুলে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা, হৃদরোগ, পেট ফাঁপা, পেটের অসুখ, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং জ্বর ইত্যাদিতে উপকারী। গুড়ের সাথে এর ব্যবহার চোখের উপকার করে। হজম শক্তি ঠিক থাকে।

আরডাকের রস ও মধু সমান অংশে মিশিয়ে নিন। এটি পান করলে পেটের রোগে উপকার পাওয়া যায়।

তিলের তেলে দশগুণ আর্দকের রস রান্না করুন। এটি পান করলে পেটের রোগে তাৎক্ষণিক উপকার পাওয়া যায়।

শুকনো আদা, হরিতকি, বহেরা ও আমলকি সমপরিমাণে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আড়াই লিটার গরুর দুধের ঘি ও তিলের তেল, আড়াই লিটার দই পানি মিশিয়ে ঘি রান্না করুন। এটি প্রস্তুত হলে এটি ফিল্টার করুন। এই ঘি 10-20 গ্রাম সকাল-সন্ধ্যা সেবন করুন। সব ধরনের পেটের রোগে এটি উপকারী। এটি কফ, বাতজা ও পেট ফাঁপা রোগেও উপকারী।

শুষ্ক আদা, ইন্দ্রায়ব ও চিত্রক সমপরিমাণে (2-4 গ্রাম) কুসুম গরম জলের সাথে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা খেলে বাতদোষে খুব উপকার পাওয়া যায়।

> জন্ডিসের সাথে লড়াইয়ে আদার উপকারিতা

3-5 গ্রাম ইন্দ্রায়ণ ও শুকনো আদার গুড় সমপরিমাণ গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে জন্ডিসে উপশম হয়।
আদা, ত্রিফলা ও গুড় সমপরিমাণে খেলে জন্ডিস নিরাময় হয়।

>পাইলসের চিকিৎসায় আদা ব্যবহার

চিত্রকের মূল ও শুকনো আদার গুঁড়া সমপরিমাণে সেবন করলে পাইলস রোগে উপকার পাওয়া যায়।

শুকনো আদা ও ধনেপাতার ক্বাথ (10-30 মিলি) শুকনো গাদাগুলিতে নিতে হবে।

চাতুর সম মোদক (শুকনো আদা, ভিলাভ, বিদরা ও গুড় দিয়ে তৈরি মোদক) খেলে পাইলস সেরে যায়।

2-4 গ্রাম শুকনো আদার গুঁড়ার মধ্যে দ্বিগুণ গুড় মেশান। এই বড়ি সেবন করলে সাধারণ দোষে সৃষ্ট ব্যাধিতে উপকার পাওয়া যায়।

চিনি, পিপলি, শুকনো আদা ও হরিতকি সমপরিমাণে নিয়ে গুঁড়া তৈরি করুন। এই গুড়া (2-4 গ্রাম) গুড়ের সাথে খেলে পাইলস শেষ হয়।

2-4 গ্রাম পাথা ও বায়েলের গুঁড়া বা আজওয়াইন ও পাথা বা শুকনো আদা ও পাথা নিন। এতে পাইলসের ব্যথা সেরে যায়।

সত্তুর মধ্যে সমান পরিমাণে গুড়, ঘি এবং আর্দক মিশিয়ে নিন। কাঞ্জির সাথে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং পাইলস ইত্যাদি নিরাময় হয়।

আদার ক্বাথ তৈরি করে 10-20 মিলি পরিমাণে খেলে পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের ফোলা ও ব্যথা উপশম হয়।

> মূত্রনালীর রোগের চিকিৎসায় আদার উপকারিতা

২ চামচ শুকনো আদার রসে চিনি মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।

250 মিলি দুধে 1 গ্রাম শুকনো আদা, 1 গ্রাম কাতেলির মূল, 1 গ্রাম শিকড়, 1 গ্রাম শাক এবং 10 গ্রাম গুড় সিদ্ধ করুন। সকাল-সন্ধ্যা পান করলে প্রস্রাবের ব্যাথা, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, জ্বর ও ফোলা ইত্যাদি রোগে উপকার পাওয়া যায়।

> কুষ্ঠরোগের চিকিৎসার জন্য আদার উপকারিতা

শুকনো আদা, মাদার পাতা, আদুসা পাতা, জল, বড় এলাচ, কুন্ডুর সমান অংশ নিয়ে গুঁড়া তৈরি করুন। পলাশের ক্ষার ও পনিতে গুলে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি লাগান এবং এটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রোদে বসুন। এতে কুষ্ঠরোগ ভেঙ্গে যায় এবং এর ক্ষত দ্রুত সেরে যায়।

টেস্টিকেল ডিসঅর্ডারের জন্য আদার ব্যবহার

10-20 মিলি রসের সাথে 2 চামচ মধু মিশিয়ে খেলে অণ্ডকোষের বৃদ্ধি হয়।

5-10 মিলি আদার রসে 5-6 গ্রাম মধু মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা সেবন করলে অণ্ডকোষ বড় হওয়া, সর্দি ইত্যাদিতে উপকার পাওয়া যায়।

5 মিলি আদার রস সমপরিমাণ সরিষা তেলের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে অণ্ডকোষের রোগে উপকার পাওয়া যায়।

> বাত দোষের জন্য আদার উপকারিতা

পিপলি ও শুকনো আদার ক্বাথ তৈরি করে সকাল-সন্ধ্যা 20 মিলি খেলে গাউট সেরে যায়।

শুকনো আদা এবং ক্যাস্টর রুটের একটি ক্বাথ তৈরি করুন। 125 মিলিগ্রাম হিং এবং 1 গ্রাম সৌরচাল লবণ 10-20 মিলি ক্বাথের মধ্যে মিশিয়ে খেলে বাতের ব্যথা দূর হয়।

সমপরিমাণ আদার রস, মাতুলঙ্গের রস, চুকরা ও গুড় ঘি বা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন। এটি কোমর ব্যথা, পেট ফাঁপা, সায়াটিকা এবং অন্ত্রের রোগ নিরাময় করে।

তেল ও ঘিতে আদার রস বা মাটুঙ্গের রস মিশিয়ে চুকরা ও গুড়ের প্রক্ষেপণ দেওয়ার পর পান করুন। এটি কোমর ব্যথা, পেট ফাঁপা, সায়াটিকা এবং অন্ত্রের রোগ নিরাময় করে।

> প্রদাহের সমস্যায় আদার উপকারিতা

শুকনো আদা, পিপ্পলি, জামালগোটা, চিত্রক মূল এবং ভাই বিদাং সমান অংশ নিন। এতে দ্বিগুণ পরিমাণ হরিতকি পাউডার দিন। 3-6 গ্রাম এই গুঁড়ো সকাল-সন্ধ্যা কুসুম গরম পানিতে খেলে ফোলাভাব দূর হয়।

শুকনো আদা, পিপ্পলি, গজপিপ্পলি, ছোট কাটেরি, চিত্রক মূল, পিপলা মূল, হলুদ, জিরা ও মোথা সমান পরিমাণে নিন। তাদের একটি কাপড় দিয়ে ফিল্টার করুন। গুঁড়ো মিশিয়ে রাখুন। এই গুঁড়ো 2 গ্রাম হালকা গরম পানির সাথে দিনে তিনবার সেবন করুন। এটি রোগের সাধারণ প্রদাহ এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ নিরাময় করে।

আদার রসে 10 থেকে 20 মিলিলিটার গুড় মিশিয়ে সকালে খেলে ফোলাভাব দূর হয়। এ সময় শুধু ছাগলের দুধ খাবেন।

এক-চতুর্থাংশ আদার পেস্ট, চারবার আদার রস এবং গরুর দুধ নিন। এতে 750 গ্রাম ঘি দিন। এটি রান্না করুন এবং প্রতিদিন এটি খান। এটি প্রদাহ নিরাময় করে।

5-10 মিলি আদার রসে অর্ধেক পরিমাণ পুরানো গুড় মেশান। শুধুমাত্র ছাগলের দুধ খাওয়ার সময় এটি গ্রহণ করুন। এটি সব ধরনের প্রদাহ নিরাময় করে।

আদা ও গুড় সমপরিমাণে মিশিয়ে একমাস খেলে ফোলা উপশম হয়।

রক্ত পিত্তে আদার উপকারিতা (নাক-কান-মলদ্বার-যোনি থেকে রক্তপাতের সমস্যা)

5 মিলি আদার রসের সাথে গুড় মিশিয়ে পান করলে রক্তপিত্তে (নাক-কান-মলদ্বার-যোনি থেকে রক্তপাতের সমস্যা) উপকার পাওয়া যায়।

> শ্বাসযন্ত্রের রোগের সাথে লড়াইয়ে আদার উপকারিতা

1 গ্রাম পিপলি এবং 1 গ্রাম শুকনো আদার গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। 5 মিলিমিটার আদার রসের সাথে ঘুমানোর সময় খেলে হাঁপানিতে খুব উপকার পাওয়া যায়।

২ চা চামচ আদার রসে মধু মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা সেবন করুন। এটি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে উপকারী।

> জয়েন্টের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে আদার উপকারিতা

এক লিটার আদার রসে 500 মিলি তিলের তেল যোগ করুন এবং আগুনে রান্না করুন। রস পুড়ে গেলে শুধু তেল অবশিষ্ট থাকে, নামিয়ে ছেঁকে নিন। এই তেল শরীরে মালিশ করলে জয়েন্টের ব্যথা ভালো হয়।

শুকনো আদা, তিল ও গুড় সমপরিমাণে পিষে নিন। এটি 50-100 মিলি দুধের সাথে 2-4 গ্রাম পরিমাণে পান করুন। এতে করে বাতের ব্যথা ৩-৭ দিনে সেরে যায়।

> সিনকোপে আদার ব্যবহার

আদা ও গুড় সমপরিমাণে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ত্রিফলা চূর্ণের সঙ্গে ৭ দিন খেতে হবে। এর সাথে রাতে মধুযুক্ত ত্রিফলা খান। সেই সঙ্গে ডায়েট মেনে চলুন। অলসতা, মূর্ছা যাওয়া, জন্ডিস ও ম্যানিয়ার মতো রোগে এটি উপকারী।

> ইনফ্লুয়েঞ্জা চিকিৎসার জন্য আদা ব্যবহার

6 মিলি আদার রসে 6 গ্রাম মধু মিশিয়ে দিনে 3-4 বার খান। এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগ নিরাময় করে।

> চর্মরোগের জন্য আদার উপকারিতা

25 মিলি আরার রসে 10-12 গ্রাম পুরানো গুড় মিশিয়ে প্রতিদিন সেবন করলে পিত্তরোগের মতো চর্মরোগ সেরে যায়।

750 গ্রাম আদা, 200 গ্রাম ঘি, 1.5 লিটার দুধ, 750 গ্রাম চিনি নিন। এর সাথে 50 গ্রাম পিপ্পলি, পিপ্পলিমূল, মরিচ, শুকনো আদা, চিত্রকমূল, ভাইভিডিং, নাগরমোথা নিন। এ ছাড়া নাগকেশর, দারুচিনি, ছোট এলাচ, তেজপাতা এবং বেদানা নিন। এই সমস্ত উপাদান রান্না করুন এবং প্রতিদিন সকালে 5-10 গ্রাম খান।

এটি হজম শক্তির উন্নতি ঘটায়। শক্তি, বীর্য বৃদ্ধি ও শরীরের দুর্বলতা দূর হয়। ত্বকের রোগ যেমন পিত্ত নিঃসরণ, যক্ষ্মা, রক্ত পিত্ত ইত্যাদি নিরাময় হয়।

5 মিলি আদার রস গুড়ের সাথে মিশিয়ে পান করলে পিত্ত রোগে উপকার পাওয়া যায়।

আদার উপকারী অংশ

আদার এই অংশটি ব্যবহার করা হয়:-

রাইজোম

> কিভাবে আদা ব্যবহার করবেন?
এই পরিমাণে আদা ব্যবহার করা উচিত:-

গুঁড়া 1-2 গ্রাম
নির্যাস – 0.3-0.6 মিলি
আরাদ্র রস – 5-10 মিলি

> আদার অপকারিতা

প্রচুর পরিমাণে (6 গ্রাম বা তার বেশি) আদা খাওয়ার ফলেও এই অসুবিধাগুলি হতে পারে: –হার্টের ব্যাধি
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি,গ্যাস্ট্রিক ব্যাধি,উচ্চ রক্তচাপ
গর্ভাবস্থায় আদা খাওয়া উচিত নয়।

শিশুদের পিত্ত দোষ এবং জ্বরের কারণে পাথরের রোগ হলে আদা ব্যবহার করা উচিত নয়।

এখানে আদার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে তথ্য খুব সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে। যেকোন রোগে এটি গ্রহণ করার আগে দয়া করে একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন।

আদা সম্পর্কিত কিছু প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন, আদা খেলে কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে?

আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আদার এমন অনেক গুণ রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা শীত মৌসুমে এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনে রোগ (যেমন সর্দি) থেকে রক্ষা পেতে সীমিত পরিমাণে আদা খাওয়ার পরামর্শ দেন। মনে রাখবেন যে কোনও রোগের ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে, আদা সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত কারণ খুব বেশি খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।

হাঁপানি রোগীদের জন্য আদা খাওয়া কি উপকারী?

হাঁপানি রোগীদের শ্বাসকষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ হল কফ জমে এবং আদার মধ্যে কফ শান্ত করার গুণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি মধুর সাথে আদার রস পান করা হয়, তাহলে তা হাঁপানির উপসর্গ কমাতে খুবই কার্যকর কারণ আদা এবং মধু উভয়ই কফ শান্ত করতে সাহায্য করে।

পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের প্রাচীন চিকিৎসাব্যবস্থায় আদা একটি অপরিহার্য উপাদান। এর গুণাগুণের কারণে আমাদের খাদ্যে এর প্রচলন চলে এসেছে। আমরা প্রতিদিন রান্নায় যে আদা খেয়ে থাকি, তাতে কিছু উপকার হলেও ঔষধি উপকার পেতে হলে নিয়ম করে আদা খেতে হবে আর যেখানে আদা ছেঁচে বা পিষে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে তা শুধু যখন খাবেন, তখনই ছেঁচে বা পিষে খেতে হবে।

আদা একবারে পিষে ফ্রিজে রেখে দেয়া উচিৎ নয়।অনেকেই এক মাসের প্রয়োজনীয় আদা একবারে পিষে ফ্রিজে রেখে দেন। এ আদা দিয়ে কিন্তু ঔষধি উপকার পাওয়া যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ হেলথের তথ্য অনুযায়ী, আদার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে হজমে সমস্যা ও পেটফোলা ভাব দেখা দিতে পারে অতিমাত্রায় আদা খাওয়া হলে। প্রতিটি উপাদানেরই নিজস্ব ডোজ থাকে, তেমনি আদার বেলায় ১৫ গ্রাম রস সারা দিনে খাওয়া উচিত। যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁরা মধু কম খাবেন।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test