E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

প্রধানমন্ত্রী সমীপে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আকুতি

২০২৩ জানুয়ারি ১১ ১৫:১৩:২৬
প্রধানমন্ত্রী সমীপে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আকুতি

আমার পিতা মো: শহিদুর রেজা, অফিসার, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, সোহাগপুর শাখা, সিরাজগঞ্জ (ইনডেক্স নং- ডি-৩০১৭৮)। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে জীবন পন মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি আজীবন জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত সোনালী ব্যাংক এর ট্রেড ইউনিয়নের সিরাগঞ্জ জেলার সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগ করার কারণে বি.এন.পি-জামায়াত জোট সরকার আমার পিতাকে বিভিন্ন সময়ে দূরবর্তী জেলা ও বিভিন্ন শাস্তি মূলক শাখায় বদলী করে ছিল। ০৬/০১/২০১৮ইং তারিখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা পাওয়ার পর তিনি তাঁর নিজ অঞ্চলের সোনারী ব্যাংক লিমিটেড, সোহাগপুর শাখা, সিরাগঞ্জে বদলী হয়ে এসে ছিলেন। আপনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকেই দেশ ও জণগণের সর্বোচ্চ কল্যাণের জন্য কাজ করে চলেছেন। আপনার সরকারের উন্নয়নের কথা এই ছোট একটি আবেদনে বলে শেষ করা যাবে না।

বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ এ পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ সল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়ণশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এ জন্য সারা দেশের চিহ্নিত মুষ্টিমেয় লোক ছাড়া সকল জন সাধারণ আপনার পক্ষে। ২০১০ সালে আপনি সারা দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিদের আত্ম কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনের জন্য সোনালী ব্যাংকের ১) জাগোনারী, ২) দারিদ্র বিমোচনে সহায়তা ঋণ, ৩) গ্রামীণ ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণ, ৪) উন্মোষ ঋণ, ৫) ক্ষুদ্র খামার ঋণ কর্মসূচি সহ বিভিন্ন ঋণ কর্ম সূচি চালু করেছেন। আমার পিতা আপনার সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও জন কল্যাণের জন্য সুপারিশ করে বেশ কিছুক্ষুদ্র ঋণ দিয়েছিলেন। এই ঋণ গুলির প্রত্যেকটির পরিমান ছিল দশ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকা। আমার পিতা চাকরি হতে অবসরে যাওয়ার সময়ে সোনালী ব্যাংক রাজশাহী জি.এম অফিস ও সিরাজগঞ্জ প্রিন্সিপাল অফিসের প্রধান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। তাঁরা দুই জন চক্রান্ত করে আমার পিতা এবং ঋণ গুলির মঞ্জুরী দাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ম্যানেজার দেশে চন্দ্র সান্যাল এর অবসরোত্তর পাওনা না দেওয়া ও চাকরী চ্যুত করে অবসরোত্তর পাওনা না দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করে ছিল। তাঁরা আমার আব্বার সুপারিশে ও মুক্তিযোদ্ধা ম্যানেজার কর্তৃক মজুরি/বিতরণ কৃত ঋণ গুলি বিভিন্ন তদন্ত দল দিয়ে তদন্ত করিয়ে ছিলেন। কোন ভাবে কোনো অনিয়ম না পাওয়ায় তদানীন্তন সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর সি ই ও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে টেলিফোন করে বিশেষ তদন্ত দল ডেকে নিয়ে এসে তদন্ত করিয়ে ছিলেন। সি ই ও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর স্যার সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, প্রধান কার্যালয়ের মানিলন্ডারিং টেররিজম ফাইন্যান্সিং প্রিভেনশন এন্ড ভিজিল্যান্স ডিভিশন (ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্ট) থেকে একজন এসিষ্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার একজন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার সমন্বয়ে তদন্ত দল গঠন করে আমার পিতার সুপারিশে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ম্যানেজারের মঞ্জুরীতে দেওয়া ঋণ গুলি সরেজমিনে প্রত্যেক টি গ্রহীতার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ করে নিয়ে তদন্ত করে ছিলেন। উক্ত তদন্ত দল ২১০টি ঋণের মধ্যে ৩৬টি ঋণ ত্রুটিপূণর্ ভাবে বিতরণ করা হয়েছে মর্মে রিপোর্ট করেছেন। উক্ত ৩৬টি ঋণের মূল টাকা = ১৪,৯৬,০০০/-। ২৯/০৮/২০১৭ইং তারিখ পর্যন্ত উক্ত ঋন সমূহের বকেয়ার পরিমাণ ছিল = ২০,৭৬,৬১০/- টাকা। অনিয়মিত ভাবে সুপারিশ/মঞ্জুরী/বিতরণ করা হয়েছে বলে আমর পিতাকে ৫০% হিসাবে = ১০,৩৮,৩০৫/- টাকা এবং ম্যানেজার স্যারকে ৫০% হিসাবে = ১০,৩৮,৩০৫/- টাকার জন্য দায় বদ্ধ করেন। আমার পিতা ৩০/১২/২০১৫ইং তারিখে অবসরে যান। কিন্তু সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর তদানীন্তন স্থানীয় কর্তৃ পক্ষ অবসরোত্তর পাওনার জন্য উর্ধতন কর্তৃ পক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠান না। আমার পিতা হাজারো আকুতি-মিনতি করেও তাঁর অবসরোত্তর পাওনা টাকা পাওয়ার প্রস্তাব উর্ধতন কর্তৃ পক্ষ সমীপে পাঠাতে পারেন নাই। তিনি বিষয় টিনিয়ে দুশ্চিন্তা করতে করতে বিগত ১৮/০৩/২০১৯ইং তারিখে মৃত্যু বরণ করেন। আমার পিতার মৃত্যুর পর আমার আম্মা আমার পিতার অবসরোত্তর পাওনা টাকা পাওয়া জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু সোনালী ব্যাংক লিমিটেড স্থানীয় কর্তৃ পক্ষ আমার পিতার অবসরোত্তর পাওনার জন্য প্রস্তাব উর্ধতন কতৃর্ পক্ষ সমীপে পাঠান না। দুচিন্তুা করতে করতে আমার আম্মাও গত ০৩/০১/২০২১ইং তারিখে মৃত্যু বরণ করেন। আমার আব্বা এবং আম্মার মৃত্যুর পর সোনারী ব্যাংক আমার আব্বার অবসরোত্তর পাওনা মঞ্জুর করেছেন। কিন্তু অনিয়মিত ভাবে ঋন বিতরণের অজুহাতে যে = ১০,৩৮,৩০৫/- টাকা দায় বদ্ধ করেছিলেন সেই টাকা কেটে রাখেন। সোনালী ব্যাংকের বিদ্যমান বিধি অনুসারে ভূয়াবা বেনামী ঋণ নাহলে কোন অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীর টাকা কেটে রাখা যায় না। আমার পিতার সুপারিশ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ম্যানেজারের মঞ্জুরী কৃত ঋণের মধ্যে কোন ভূয়া বা বেনামী ঋণ নাই। প্রত্যে কটি ঋণের ঋণ গ্রহীতা অথবাতার উত্তরা ধিকারী আছেন। প্রধান কার্যালয়ের তদন্ত দল ও কোন ভূয়া/বেনামী ঋণ পান নাই। ইতিমধ্যে অনিয়ম উত্থাপিত ঋণ গুলির মধ্যে ৩টি ঋণ সম্পূর্ণ আদায় হয়েছে। বাকী ঋণ গুলির অধিকাংশের অংশ বিশেষ আদায় হয়েছে। আদায়ের চেষ্টা অথবা আইনগত ব্যবস্থা নিলেই সকল ঋণ আদায় হবে।

আমার আব্বা এবং আম্মা দুই জনই জীবিত নাই। ভাই বোনদের ভরন পোষণের দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হয়। আমরা অর্থাভাবে আছি। আমি আমার আব্বার কেটে রাখা ১০,৩৮,৩০৫/- টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য ২১/০৮/২০২২ইং তারিখে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর সি ই ও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরাবর আবেদন করেছি। কিন্তু অদ্যাবধি উক্ত টাকা ফেরৎ পাই নাই। আপনি জাতির পিতার যোগ্য উত্তর সূরি। আপনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ করেছেন। আপনি ১৯৯৬-২০০১ এর শাষণ আমলে প্রথম মাসিক ৩০০/- টাকা হিসাবে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা চালু করেন। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা মাসিক ২০,০০০/- টাকায় উন্নীত করেছেন। আপনি প্রত্যেকটি অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বীর নিবাস করে দিচ্ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সহায়তাসহ সর্বোচ্চ কল্যাণ করে চলেছেন। আপনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার কে যত ভালবাসেন পৃথিবীতে অন্য কেহই অত ভালোবাসেনা। আমরা একটি মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ পরিবার। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ভালবাসাহৃদয় থেকে আসতে হয়। যা পৃথিবীর মধ্যে আপনারহৃদয়ে সবচেয়ে বেশী আছে। আপনি বলেছেন- “মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কষ্টে থাকবে আমি তা মানতে পারবো না।” এই কথা পৃথিবীর অন্য কেহ বলেন নাই।

আপনার সমীপে আমার আকুল আবেদন, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, প্রধান কার্যালয়, ঢাকাকে আমার আব্বার কেটে রাখা ১০,৩৮,৩০৫/- টাকা আমাকে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ম্যানেজার দেবেশ চন্দ্র সান্যাল এর কেটে রাখা ১০,৩৮,৩০৫/- টাকা ম্যানেজার স্যার কে বিধি মোতাবেক ফেরৎ দানের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিন।

নিবেদক

মো: মাহমুদুলহাসান (শুভ)
পিতা: মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুর রেজা
গ্রাম ও ডাকঘর: সমেশপুর
উপজেলা, বেলকুচি, জেলা: সিরাজগঞ্জ।

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test