E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২০২৪-ও নরেন্দ্র মোদীর? 

২০২৩ মার্চ ২২ ১৪:৩৩:২৯
২০২৪-ও নরেন্দ্র মোদীর? 

শিতাংশু গুহ


ভারতে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪, এতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র বিজয় প্রায় নিশ্চিত। তাঁর ধারে কাছেও কেউ নেই? সর্বভারতীয় দল হিসাবে বিজেপি’র আশে-পাশে কোন দল নেই, কংগ্রেসও নয়! সাম্প্রতিক সময়ে ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ড এবং কিছুটা আগে গত বছরে উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, মনিপুর, গোয়া ও পাঞ্জাবে নির্বাচনে বিজেপি ভালো করেছে। পাঞ্জাব কংগ্রেস ক্ষমতাসীন ছিলো, কেজরিলালের ‘আম-আদমি’ পার্টি সেটি ছিনিয়ে নিয়েছে। সেই অর্থে কেজরিলালের হাতে এখন দুই রাজ্য, মমতার হাতে শুধু পশ্চিমবঙ্গ। মমতা ত্রিপুরা ও গোয়ায় হাত বাড়িয়েছিলেন, সুবিধা হয়নি।

কংগ্রেস সামনের নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্যে মোদী-বিরোধী জোট গঠনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আম-আদমী বা তৃণমূল জোটে যাবার কোন কারণ নেই! কারণ মমতা বা কেজরীলাল মনে মনে দিল্লির মসনদে বসার স্বপ্ন দেখছেন। কংগ্রেসের জোটে প্রধানমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত জোট খুব একটা কার্যকর হবেনা। কংগ্রেস এখনো সর্বভারতীয় দল এবং বিজেপি’র প্রধান প্রতিদ্ধন্ধী, স্বভাবত: রাহুল গান্ধী জোটের ‘প্রধানমন্ত্রীর মুখ’ হবেন, তাঁরা ছেড়ে দেবেন এমনটা দুরাশা বটে? কংগ্রেস বলেছে, তৃতীয় জোট হলে মোদী লাভবান হবে।

বিজেপি ও কংগ্রেসজোট ছাড়াও সম্ভবত: তৃতীয় বা এমনকি চতুর্থ জোট হবার সম্ভবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না? রাহুল গান্ধীকে অনেকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মানতে নারাজ। কংগ্রেসের সমস্যাটা হচ্ছে, ভারতীয় জনগণ ‘পারিবারিক’ রাজত্ব মানতে চাচ্ছেনা। সবাই জানেন যে, মল্লিকার্জুন খাড়গে কংগ্রেসের সভাপতি হলেও সকল ক্ষমতা গান্ধী পরিবারের হাতে। মূল নেতা রাহুল গান্ধী। বিজেপি বিরোধী জোট গঠিত হলে এ বছর তেলেঙ্গনা, রাজস্থান, ছত্রিশগড় ও মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে ‘হাওয়া’ কিছুটা গরম হবার সম্ভবনা থাকবে।

‘এক ভারত পদযাত্রা’ কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীর জন্যে কিছুটা সুবিধা এনে দিয়েছে। হয়তো এজন্যে দ্বিতীয় ‘পদযাত্রার’ সময় নির্ঘন্ট ঘোষিত হয়েছে। এতে মোদির বিকল্প সৃষ্টি হয়নি বা হবে না। ভারতীয় দুই-তৃতীয়াংশ জনগণ মোদির পক্ষে। মোদির নেতৃত্বে ভারত বিশ্ব দরবারে সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত। করোনা মোকাবেলায় ভারত ‘বিশ্ব-ফার্মেসি’র মর্যাদা পেয়েছে। মোদী পাকিস্তানকে থমকে দিয়েছেন, চীনের সাথে সমান পাল্লায় দৌড়াচ্ছেন। মোদী-আদানি ইস্যু নিয়ে হৈচৈ হলেও এটি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে ভাবা হচ্ছে।

ভারতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলগুলোর সাথে জোট বা মোর্চা গঠন আবশ্যক, বিজেপিও তা করে বা করতে হয়। উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের বিজয় বিজেপি’র জন্যে আশীর্বাদ হয়েছে। তিনি দোর্দন্ড প্রতাপে রাজত্ব করছেন। যদিও তাকে ‘মুসলিম বিরোধী’ হিসাবে চিহ্নিত করার প্রয়াস লক্ষণীয়, কিন্তু স্থানীয় সাধারণ মুসলমান ভালো আছেন এবং তাঁরা তাকে ভোট দিয়েছেন। মোদীকেও মুসলিম বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত করার প্রয়াস আছে, যদিও বিজেপি’র ভেতরের একটি অংশ মুসলিম তোষণের কারণে মোদিকে ‘মাওলানা মোদী’ হিসাবে আখ্যায়িত করছেন।

জানুয়ারিতে ‘রাম-মন্দির’ উদ্ভোধন, নির্বাচনের আগে হিন্দু-ভোট পক্ষে আনতে কাজে লাগবে। ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা-রাশিয়া হম্বিতম্বি চললেও বলা হচ্ছে, লাভের গুড় খাচ্ছে মোদির ভারত। বিশ্ব রাজনীতিতে মোদির ভারত গাছেরও খাচ্ছে, তলারও কুড়াচ্ছে। সর্বত্র ভারতীয়দের জয়জয়কার। মোদির নেতৃত্বে ভারতীয়রা এগিয়ে যাচ্ছে, তাই তিনি হয়তো আবারো জয়ী হবেন। যারা মোদী বিরোধী, যেমন মমতা, তিনি কতটা বিরোধী? বলা হচ্ছে, গত নির্বাচনে মানুষ বিজেপিকে চাইছিলো, কিন্ত বিজেপি জিততে চায়নি, তাই তৃণমূল জিতেছে? কথা কিন্তু সত্য।

জনতা দল, অখিলেশ যাদবের এসপি বা মায়াবতীর বিএসপি, জগমোহন রেড্ডির ওয়াইএসএর বা চন্দ্রশেখরের ভারত রাষ্ট্র সমিতি, নবীন পট্টনায়করা সবাই ভারতীয় রাজনীতিতে বড় বড় প্লেয়ার। এঁরা প্রায় সবাই প্রধানমন্ত্রী হতে চান, বা নিদেনপক্ষে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে আগ্রহী। এঁরা সবাই বিজেপি’র বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, আম-আদমি ও তৃণমূল রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব মেনে নেবে, এমনটা ভাবা চিন্তার বিলাসিতা মাত্র। তবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোদিকে সরাতে তৎপর আছে। বাংলাদেশেও শেখ হাসিনাকে সরাতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সম্ভবত: মোদী ও শেখ হাসিনা দু’জনই সব বাঁধা কাটিয়ে পুনরায় ক্ষমতাসীন হবেন।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test