E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২২তম রাষ্ট্রপতি হলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু 

২০২৩ এপ্রিল ০৫ ১৬:২৪:৪৭
২২তম রাষ্ট্রপতি হলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু 

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


অবশেষে নাটকীয় চমক দিয়ে নতুন রাষ্ট্রপতির আসন অলংকৃত করেছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাস ধরে চলা আলোচনার অবসান হয়েছেন এমন রাজনৈতিক চমক বাংলাদেশের মানুষ অনেকদিন পায়নি। কোনো না কোনোভাবে খবর ফাঁস হয়ে যেতো। এবারও সাংবাদিকরা নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে অনেকের নাম অনুমান করেছেন। দিনের পর দিন সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাদের নাম ও ছবি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়, টেলিভিশনে।

অনুমানটা নির্দিষ্ট ছিল না বলে সম্ভাব্য নামের সংখ্যা ছিল বেশি। বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইনে অন্তত ১০ জনের নাম দেখেছি। অনেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার খবরও পড়েছি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী দেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন, এ কথা বলে সংসদ সদস্যরা সংসদেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার মনে ছিল ভিন্ন কথা।

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সংসদীয় দলের সভায় সর্বসম্মতভাবে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় মনোনয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি সেটি মনের গহীনে লুকিয়ে রেখেছিলেন মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন পর্যন্ত। চমকটা হলো মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম কারও রাডারেই ধরা পড়েনি।

ঘুণাক্ষরেও যার নাম কেউ ভাবেনি, তিনিই হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। যিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন, তিনিই রাষ্ট্রপতি হবেন, এটা নিশ্চিত। কারণ রাষ্ট্রপতি ভোটার সংসদ সদস্যরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখ সোমবার২০২৩। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। মো. আবদুল হামিদের উত্তরসূরি হিসেবে তিনি হবেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি৷

এ নির্বাচনের নির্বাচনি কর্তা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে একমাত্র প্রার্থী সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন৷ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নাম ঠিকানাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন৷

দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য৷

এর আগে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি রোববার মো. সাহাবুদ্দিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেন৷ সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তার নির্বাচিত হওয়া ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার৷

সিইসি বলেন, ‘‘দুটি মনোনয়নপত্রজমা দেওয়া হয়েছিল একই প্রার্থীর নামে৷ এরমধ্যে একটি পরিপূর্ণভাবে বৈধ হওয়ায় অন্যটি আর গ্রহণের দরকার পড়েনি৷”

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর প্রস্তাবক আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সমর্থক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন৷

১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করা মো. সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা৷ ২০০৬ সালে তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসরে যান৷ ব্যক্তিজীবনে তিনি সাহাবুদ্দিন চুপপু নামেই বেশি পরিচিত৷

ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন৷ পরে সামলেছেন পাবনা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব৷ ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন তিনি, মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন৷

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সে সময় ক্ষমতাদখলকারীরা৷ সাহাবুদ্দিনকেও তখন কারাবরণ করতে হয়৷

পেশায় আইনজীবী মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে যোগ দেন৷ বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন৷

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়, যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে৷ পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন' গঠন করে, যার প্রধান ছিলেন মো.সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এই মহাসচিব বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত করা সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন৷

তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হন৷ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন৷

মো. সাহাবুদ্দিন জেএমসি বিল্ডার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি হিসাবে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন৷ এ ব্যাংকের অডিট কমিটিরও সদস্য তিনি৷

রাজনীতি, বঙ্গবন্ধু এবং নীতি নির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে তিনি নিয়মিত কলামও লিখেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে।

ব্যক্তিগত জীবনে সাহাবুদ্দিন চুপপু এক ছেলের বাবা৷ তার স্ত্রী রেবেকা সুলতানা যুগ্ম সচিব ছিলেন৷ তিনি বর্তমানে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অ্যাডভাইজারের পাশাপাশি ফ্রেন্ডস ফর চিলড্রেন অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন৷

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল৷ পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই নানা জল্পনা কল্পনা চলছিল৷

আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির সভায় রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ভার দেওয়া হয় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ওপর৷ শেষ পর্যন্ত তিনি বেছে নেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপপুকে, যিনি কৈশোরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন৷

বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদে পরোক্ষ ভোটে৷ সংসদ সদস্যরাই এই নির্বাচনে ভোট দেন৷ তবে মো. সাহাবুদ্দিন একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় ভোটাভুটির প্রয়োজন আর পড়ল না৷

সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবারই সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল৷ পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন৷

স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন৷ বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন৷

বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন৷ সেই হিসোবে নতুন রাষ্ট্রপতি হবেন এই পদে অষ্টদশ ব্যক্তি৷

স্বাধীনতার পর গত একান্ন বছরে যারা সরকার প্রধান ছিলেন তাদের মধ্যে কেউ রাষ্ট্রপতি, কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ প্রধান উপদেষ্টা আবার কেউ সামরিক শাসন জারি করে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দেশ শাসন করেছেন। তবে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ২১ জন। মো. সাহাবুদ্দিন চুপপুকে এই দায়িত্বে ২২তম রাষ্ট্রপতি পাচ্ছেন বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার করে রাষ্ট্রপতি হোন। আবার ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পুনপ্রবর্তন করে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে রাষ্ট্রপতি হিসেবে কারা কারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের নাম-তালিকা নিম্নে তুলে ধরা হয়েছে।

০১। শেখ মুজিবুর রহমান : ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ মোট ২৭০ দিন।

০২। সৈয়দ নজরুল ইসলাম : ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ মোট ২৭০ দিন। (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)।

০৩। আবু সাঈদ চৌধুরী : ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩ মোট এক বছর, ৩৪৬ দিন।

০৪। মোহাম্মদউল্লাহ : ২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪ মোট ১ বছর, ৩৪ দিন। (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)।

০৫। মোহাম্মদউল্লাহ : ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ মোট ৩৬৩ দিন।

০৬। শেখ মুজিবুর রহমান : ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ থেকে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ মোট ২০২ দিন।

০৭। খন্দকার মোশতাক আহমেদ : ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ মোট ৮৩ দিন।

০৮। আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম : ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ থেকে ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ মোট এক বছর, ১৬৬ দিন।

০৯। জিয়াউর রহমান : ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ থেকে ৩০ মে ১৯৮১ মোট চার বছর, ৩৯ দিন।

১০। আবদুস সাত্তার : ৩০ মে ১৯৮১ থেকে ২০ নভেম্বর ১৯৮১ (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)

১১। আবদুস সাত্তার : ২০ নভেম্বর ১৯৮১ থেকে ২৪ মার্চ ১৯৮২ মোট ২৯৮ দিন।পদ খালি (২৪ – ২৭ মার্চ ১৯৮২)।

১২। আ ফ ম আহসানউদ্দিন চৌধুরী : ২৭ মার্চ ১৯৮২ থেকে ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৩ মোট ১ বছর, ২৫৮ দিন।

১৩। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ : ১১ ডিসেম্বর ১৯৮৩ থেকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ মোট ৬ বছর, ৩৬০ দিন।

১৪। শাহাবুদ্দিন আহমেদ : ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ থেকে ১০ অক্টোবর ১৯৯১ মোট ৩০৮ দিন।

১৫। আবদুর রহমান বিশ্বাস : ১০ অক্টোবর ১৯৯১ থেকে ৯ অক্টোবর ১৯৯৬ মোট চার বছর, ৩৬৫ দিন।

১৬। শাহাবুদ্দিন আহমেদ : ৯ অক্টোবর ১৯৯৬ থেকে ১৪ নভেম্বর ২০০১ মোট পাঁচ বছর, ৩৬ দিন।

১৭। এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী : ১৪ নভেম্বর ২০০১ থেকে ২১ জুন ২০০২ মোট ২১৯ দিন।

১৮। জমির উদ্দিন সরকার : ২১ জুন ২০০২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর ২০০২ মোট ৭৭ দিন।

১৯। ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ : ৬ সেপ্টেম্বর ২০০২ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ মোট ছয় বছর, ১৫৯ দিন।

২০। জিল্লুর রহমান : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ থেকে ২০ মার্চ ২০১৩ মোট ৪ বছর, ৩৬ দিন।

২১। মো. আবদুল হামিদ : ১৪ মার্চ ২০১৩ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত।

২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

পরিশেষে বলতে চাই, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অভিষিক্ত। এ অর্জন ধরে রাখতে হলে যে স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করতে পারে দেশের রাজনীতি। রাজনীতিবিদদের যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশকে গভীর সংকটে ফেলে দিতে পারে। দেশের এমন অবস্থায় মো.সাহাবুদ্দিনের মতো একজন রাষ্ট্রপতি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করেছেন। ফলে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় থাকার কথা। আমরা আশা করি, তাঁর অভিভাবকত্ব আমাদের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।এইজন্য অভিনন্দন- মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে। সবচেয়ে বেশি অভিনন্দন পাওয়ার অধিকার যিনি রাখেন তিনি হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন।

রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন তা আবারো প্রমাণিত হলো। তিনি শুধু বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরী। তার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে যে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।

আরেকটি যুগান্তকারী মাইলফলক আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকে ঘিরে যার অধীনে ও নির্দেশনায় পরিচালিত হবে নির্বাচন, তিনি হলেন ২২ তম রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন চুপ্প। তিনি শুধু একজন ব্যক্তিই নন, তার প্রথম পরিচয় তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। একজন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা তিনি তাঁর বুকে লালন করেন দেশপ্রেম- আর সেই দেশপ্রেম প্রমাণের মহেন্দ্রক্ষণ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে এটাই জাতির প্রত্যাশা।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক।

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test