E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন ড. ওয়াজেদ মিয়া

২০২৩ মে ১০ ১৬:৪২:৪৭
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন ড. ওয়াজেদ মিয়া

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এ বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী।

১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার জন্ম। বাবা আবদুল কাদের মিয়া ও মা ময়েজুন্নেসার চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হন। ড. ওয়াজেদ মিয়া অনেক জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানবিষয়ক সম্মেলনে অংশ নেন। তার গবেষণামূলক ও বিজ্ঞানবিষয়ক অনেক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকায় এবং সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৬১ সালে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিলে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে যোগদান করার পর লাহোরে প্রশিক্ষণে থাকা অবস্থায় বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজে ভর্তি হন।

১৯৬৪ সালে ওই কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এমএস ডিগ্রি এবং ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের ‘দারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে ফিরে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের অধীনে আণবিক শক্তি কেন্দ্র, ঢাকায় ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৬৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
তাদের এক ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং এক মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

১৯৬৯ সালে ড. ওয়াজেদ মিয়া ইতালিতে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স এ অ্যাসোসিয়েট হন এবং সস্ত্রীক সেখানে অবস্থান করেন। সেখানে সাউথ কমিশনের চেয়ারম্যান বিজ্ঞানী সালামের সঙ্গে পরিচয় হয় ড. ওয়াজেদ মিয়ার। প্রফেসর সালাম উন্নয়নশীল বিশ্বের ভাগ্য উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া অন্য কিছুই ভাবতে পারতেন না। ড. ওয়াজেদও বিজ্ঞানী সালামের আদর্শে যথেষ্ট উদ্বুদ্ধ হন।

মুক্তিযুদ্ধকালে ড. ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন শেখ হাসিনা, বেগম মুজিব, শেখ রেহানা ও শেখ রাসেলের ভরসার স্থল। ড. ওয়াজেদ বঙ্গবন্ধুর ভবন ত্যাগ করে ধানমন্ডি ৮নং সড়কের বঙ্গবন্ধুর এক হিতাকাঙ্ক্ষীর বাসায় সবাইকে নিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ হবার পর ওয়াজেদ রাজনৈতিক চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার পাশাপাশি আণবিক শক্তি কমিশন গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। সাভারে এ কমিশনের জমি গঠন থেকে শুরু করে এটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পুরো কৃতিত্বটা তাকেই দেয়া যায়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যখন সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তখন তিনি স্ত্রীসহ পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি প্রচণ্ডরকম মানসিক আঘাত পান। যা তার সৃজনশীল জীবন থেকে কয়েক বছর কেড়ে নেয়। জীবনের শেষ প্রায় ২০ বছর তিনি মানসিকভাবে আহত ছিলেন। শেখ হাসিনা তাকে কাছে থেকে যেভাবে সেবা শুশ্রূষা ও সাহচর্য দিয়েছেন, তা দৃষ্টান্ত হয়ে রইবে।

ড. ওয়াজেদ মিয়ার বৈজ্ঞানিক গবেষণার অবকাঠামো নির্মাণে, বিজ্ঞান সাধনা ও কর্ম চাঞ্চল্যতার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহের কারণেই বিজ্ঞান নিয়ে সারাজীবন কাটিয়েছেন। দেশে বিজ্ঞানের অগ্রগতি নিয়ে তার মধ্যে হতাশা ছিল। বিশেষত আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তান বিজ্ঞানে অনেক দূর অগ্রসর হলেও আমরা পারিনি। আমাদের এই স্বাধীন দেশে এতগুলো সরকার ক্ষমতায় এলেও তারা বিজ্ঞান ও গবেষণা নিয়ে বড় কোনো পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্যোগী হয়নি। দেশে আজ বিজ্ঞানের স্থান কোথায়? অথচ, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো বিজ্ঞান গবেষণায় ছোট-বড় অর্জন করেই চলেছে। অথচ, আমরা স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বিজ্ঞান গবেষণায় বিশেষ অর্জনে সক্ষম হইনি।

আর ৪০ বছরের পারিবারিক জীবনে ড. ওয়াজেদ মিয়ার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী তার পাশে থেকে যে ধৈর্য, সাহস ও সেবার পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন, তা অসাধারণ ও অসামান্য। তার লেখা ৪৬৪ পৃষ্ঠার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ৩২০ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।

১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালের জন্য তিনি পরপর দু’বার বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি পরপর তিনবার ওই বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৮৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চার বছর তিনি বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে দু’বছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে দু’বছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তাছাড়া তিনি ওই বিজ্ঞান সমিতির আজীবন সদস্য।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৮৯-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর দু’বছর মেয়াদকালের জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এবং ১৯৯৪-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি পরপর দুই দু’বছর মেয়াদকালের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

এ ছাড়া তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য। ১৯৯১-১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ১৯৮৯-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার দু’বছর মেয়াদকালের জন্য তিনি ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতি’র সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য। তিনি ঢাকার রংপুর জেলা সমিতির আজীবন সদস্য এবং ১৯৯৪-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দু’বছর মেয়াদকালের জন্য এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

তিনি বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং ঢাকার বৃহত্তম রংপুর কল্যাণ সমিতি, উত্তরবঙ্গ জনকল্যাণ সমিতি, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম, বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ এবং রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার মির্জাপুর বছির উদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

মৃত্যুর পর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার অবদান

বঙ্গবন্ধু ড. ওয়াজেদ মিয়াকে রাজনীতিতে আনতে চাননি। বিজ্ঞানী হিসেবেই তাকে দেখতে চেয়েছেন। রাজনীতিতে তাকে কখনই জড়ানোর চেষ্টা করেননি। ড. ওয়াজেদ মিয়ার জীবনকে মূলত দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমত, স্বাধীনতা পূর্ববর্তী তার ছাত্র ও ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া জীবন। দ্বিতীয়ত, তার বিজ্ঞান গবেষণায় নিবেদিত জীবন। তবে দ্বিতীয় জীবনেই বিজ্ঞানী হিসেবেই তিনি বেশি সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সব ক্ষেত্রেই অবদান রেখেছন। তার অবদান রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণেও। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পাবনা জেলার পদ্মা নদীর সন্নিকটে ঈশ্বরদীর পাশে রূপপুরে এ প্রকল্পটি নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পটি ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে পুরাদমে শুরু হয়েছে। গত দশক থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও পরমাণুশক্তি অর্জনের জন্যে ক্রমান্বয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপপুর নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

এছাড়াও সরকার পাবনাতে রূপপুর নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পটি দ্রুত গতিতে ত্বরান্বিত করার জন্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। মূলত এ প্রকল্পটি ১৯৬১ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্যে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি এ প্রকল্পের গ্রাউন্ডওয়ার্ক করেছিলেন। তার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ পরমাণুশক্তিতে উদীয়মান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্বপ্ন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হলে তার দর্শন ও গ্রন্থের অধ্যয়ন করা প্রয়োজন। তার সমসমায়িক ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষকদের মতে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের নাম তার নামে নামকরণ করা প্রয়োজন। তার নামে এরই মধ্যে দেশের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইন্সটিটিউট নামকরণ করা হয়েছে।

তার মৃত্যুর পর এ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববদ্যিালয় ২০০৯ সালের ৩০ মে ‘ওয়াজেদ মিয়া সায়েন্স রিসার্চ সেন্টার’ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববদ্যিালয়, রংপুর ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। এসব প্রতিষ্ঠানে দেশি ও বিদেশি গবেষকেরা সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়াবলী নিয়ে গবেষণাকার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

পদার্থবিজ্ঞান ও পরমাণুবিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। পরমাণুবিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণায় আরও জোরদার করা প্রয়োজন। এছাড়াও তার নামে যে সব গবেষণা ও ইন্সটিটিউট রয়েছে, সে সব প্রতিষ্ঠানে ফেলোশীপের ফান্ড বৃদ্ধি ও মেধাবৃত্তি বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এতে দেশের সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার উন্নয়ন সাধিত হবে।

৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার উপর জোর দিতে হবে। এছাড়াও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় গতিশীলতা আনয়নের জন্যে পর্যাপ্ত ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। দেশে কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে বিজ্ঞানভিত্তিক ল্যাব না থাকায় গবেষকরা যে কোনো বিষয়ে গবেষণা করতে পারছেন না।

গবেষণা প্রস্তাবনার সময় গবেষকের চিন্তা থাকে, তিনি যে বিষয়ে গবেষণা করতে মনস্থ করছেন তা সম্পন্ন করতে পারবেন কি না! সুতরাং প্রয়োজনীয় সংখ্যক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব। তাহলেই ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে এবং পরমাণুবিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় নিত্য নতুন বিষয় উদ্ভাবন হবে। আর ব্যক্তিজীবনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে অভ্যস্ত ছিলেন এই বিজ্ঞানী।

পরিশেষে বলতে চাই, বাঙালি জাতির এক আলোকিত সন্তানের নাম ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া। এক বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এই পরমাণু বিজ্ঞানী ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে থেকেও নির্মোহ জীবনযাপনের জন্য জাতির কাছে চিরঅম্লান হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ, নির্লোভ, নির্মোহ, নিরহংকার, নির্ভীক ও বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তিত্ব। বঙ্গবন্ধুর জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হওয়া সত্ত্বেও ড. ওয়াজেদ মিয়াকে কখনো ক্ষমতার কাছাকাছি দেখা যায়নি।তার ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী দিবসে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test