E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ

সঠিক পুষ্টি ছাড়া শরীর সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে অক্ষম, প্রয়োজন সচেতনতা

২০২৩ জুন ১০ ১৮:৫৫:৩৪
সঠিক পুষ্টি ছাড়া শরীর সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে অক্ষম, প্রয়োজন সচেতনতা

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


পুষ্টি বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও পুষ্টি উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ৭ জুন বুধবার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ-২০২৩ জনগণের খাদ্যাভাস ও খাদ্য পরিকল্পনায় পুষ্টির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে এ বছর পুষ্টি সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে মজবুত হলে পুষ্টির ভিত, স্মার্ট বাংলাদেশ হবে নিশ্চিত”- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে। পুষ্টি সপ্তাহ ১৩ জুন পর্যন্ত চলবে।বাংলাদেশের খাদ্যনীতি, কৃষিনীতিতে খাদ্য উৎপাদনে যতো জোর দেয়া হয়েছে, সে তুলনায় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকে গেছে। তাই সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যক্তি পর্যায়ে অভ্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক পরিবর্তন দরকার। এছাড়া কন্যাশিশু ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের পুষ্টিজনিত অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো এবং এর মাধ্যমে উন্নত মানব সম্পদ হিসেবে তাদের তৈরি করার ওপরও গবেষণায় জোর দেয়া প্রয়োজন, যদিও এ বিষয়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ হচ্ছে। তাই আজ আলোচনা করবো পুষ্ট নিয়ে।পুষ্টি ও খাদ্য এমন দু’টি শব্দ যার ব্যবহার প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনে ঘটে চলছে। জন্ম থেকে শুরু হয়ে মৃত্যু অবধি চলতে থাকে। মানুষের তিনটি মৌলিক চাহিদার একটি হল খাদ্য। আর এই খাদ্যের মুল অংশই হল পুষ্টি।বাংলাদেশ বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিখাতের উন্নয়নে সারা বিশ্বে রোল মডেল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুস্থ, সবল ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে ১৯৭৪ সালে জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এবং ১৯৭৫ সালের ২৩শে এপ্রিল জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুনর্গঠিত জাতীয় পুষ্টি পরিষদের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে চলমান পুষ্টি কার্যক্রম ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি পরিষদের উদ্যোগে প্রণীত হয়েছে জাতীয় পুষ্টিনীতি ২০১৫ এবং দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা। এসব আইন ও নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ ও সফল প্রয়োগের মাধ্যমে জনসাধারণের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত হবে।’আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশের বাসিন্দা। তাই, শুধু খাদ্য খেলেই চলেনা, সময় এসেছে পরীক্ষা করে দেখার যে খাদ্যটি নিরাপদ ও পুষ্টিকর কিনা।কেননা যদি পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য না হয়, তাহলে এটি খাওয়ার পর বিভিন্ন রোগের স্বীকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একই সাথে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

পুষ্টি কাকে বলে?

যে খাদ্য আমরা খেয়ে থাকি সেখান থেকে আমাদের দেহ সিদ্ধান্ত নেয় এর কোন অংশটি কি পরিমানে গ্রহন করা হবে। যেমন, আপনি জেনে থাকবেন, খাদ্য খাওয়ার পর হজম প্রক্রিয়ার পর খাদ্যটি দু’টি অংশে ভাগ হয়ে যায়। একটি প্রয়োজনিয় বা সার অংশ যা শরীর গ্রহন করে নেয়, আর অপরটি অপ্রয়োজনিয় অংশ যা শরীর বর্জন করে।

পরিপাক তন্ত্রে হজমের পর খাদ্যের সার অংশ দেহ শোষণ করে নেয়। যা থেকে আমরা কাজ করার শক্তি পাই, দেহে নতুন টিস্য বা কোষ তৈরি হয়, দেহের ক্ষয় পূরণ হয়, ইত্যাদি।আর এর সহজ উত্তর হল, হজমের পর খাদ্যের যে সার অংশটুকু দেহে শোষিত হয়, তাই পুষ্টি। এটি আমাদের বেচে থাকার জন্য শক্তির যোগান দেয়। এছাড়া, পুষ্টির বিভিন্ন উপাদান দেহের চলমান বায়ো-কেমিক্যাল প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। যার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধসহ দৈহিক বৃদ্ধি সাধন হয়।

পুষ্টির ধারাবাহিক ধাপগুলো হচ্ছে- খাদ্য গ্রহন, হজম, শোষন, রক্তের মাধ্যমে দেহের কোষসমুহে পরিবহন, কোষে আত্তিকরণ বা বিপকিয় কাজের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন, তারপর অপ্রয়োজনীয় অংশের বর্জন।

আপনি যদি ভাল পুষ্টিসম্পন্ন স্বাস্থ্যকর খাদ্য খেতে পারেন, তাহলে আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হয়ে জীবন অতিবাহিত করতে পারবেন। অপুষ্টিজনিত অনেক রোগ থেকে বেচে থাকতে পারবেন। অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমাতে পারেন।

পুষ্টি কেন গুরত্বপূর্ণ?

ইতোমধ্যে, পুষ্টি কাকে বলে- বিষয়টির উপর ধারণা চলে আসায় এর গুরত্ব কিছুটা হলেও আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ও অন্যান্য দৈহিক উন্নয়নের কাজে পুষ্টির গুরত্ব অপরিসীম। পুষ্টির অভাবের কারণে আমরা অনেক রোগের স্বীকার হতে পারি যেগুলিকে পুষ্টির অভাবজনিত রোগ বা deficiency disease নামে অভিহিত করা হয়। এসব রোগের কারণে নানা রকম স্বাস্থ্য জটিলতার তৈরি হয়।

বর্তমান বিশ্বের পুষ্টিবিদগণ ০৫টি খাদ্য গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত খাদ্যকে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য হিসাবে অভিহিত করেছেন। যা সুষম খাদ্য হিসাবেও বিবেচিত।

এই, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য আমাদেরকে পুষ্টির অভাবজনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগ থেকে রেহাই দিতে পারে। ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে এই পুষ্টি সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাদ্য।

পুষ্টির আরোও কিছু গুরত্ব নিচে উল্লেখ করা হল-

* জীব দেহে তাপ তৈরিতে পুষ্টি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

* দেহের দৈনিক ক্যালরি চাহিদা এর দ্বারা পূরণ হয়।

*শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।

*জীবিত শরীরের মেটাবলিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।

*পুষ্টি শরীরে শক্তি সরবরাহ করে যার মাধ্যমে দেহে নতুন টিস্যু তৈরি হতে পারে।

*ভবিষ্যতে ব্যবহারের কাজে দেহে খাদ্য জমিয়ে রাখতে সহায়তা করে।

*জীবিত শরীরের অনেক শারীরবৃত্তিয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন, চলাফেরা, প্রজননকাজ, লোকোমোশন ইত্যাদি।

পুষ্টি উপাদান কয়টি ও কি কি?

পুষ্টি কাকে বলে এর উত্তরে আমরা ইতোমধ্যে জেনে গেছি। আরোও সহজ ভাষায় বলতে গেলে, পুষ্টি হল এমন এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে আমরা খাদ্য সামগ্রি গ্রহন করে এর উপকারি অংশটুকু দেহ গঠনে ব্যবহার করি এবং এর অপ্রয়োজনিয় অংশ পরিত্যাগ করি।

এই পুষ্টির ছয়টি উপাদান থাকে। শরীরে এই প্রতিটি উপাদানের চাহিদা এক রকম নয়। বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির সংক্রমণ, শরীরের গঠন প্রকৃতি এবং দৈহিক পরিশ্রমের উপর ভিত্তি করে আমাদের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের চাহিদা ভিন্নরুপ হয়।

পুষ্টির উপাদানসমুহ নিচে এক এক করে উল্লেখ করা হল:

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা: ইহা আপনার শরীরে শক্তি যোগানের প্রধান উৎস। কার্বোহাইড্রেট আবার তিন প্রকার হতে পারে-

সুগার: এর উদাহারণ – ‍সিম্পল ‍সুগার যা খুব দ্রুত হজম হয়ে শক্তি তৈরি করে।

স্টার্চ: এরা হল কমপ্লেক্স বা জটিল কার্বোহাইড্রেট যার হজম প্রক্রিয়া ধীরগতি সম্পন্ন।

ফাইবার: এরা সাধারণত: হজম হয় না, শরীরে শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় না। শুধু শারীরিক কার্যক্রমে সহায়তা করে।

প্রোটিন বা আমিষ: প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের একক হল এমাইনো এসিড। সম্পূর্ণ প্রোটিনে ২০ ধরণের এ্যমাইনো এসিড থাকে যার মধ্যে ৯ টি প্রয়োজনিয় এবং ১১টি অপ্রয়োজনিয়। প্রোটিনের কাজ নিম্নরুপ-

১. শরীরে শক্তির যোগান দেয়,

২.পেশী ও কোষ গঠনে কাজ করে,

৩. হরমোনের কাজে সহায়তা করে,

৪. রোগ প্রতিরোধে কাজ করে,

৫. হজম প্রক্রিয়ার কাজে লাগে এমন এনজাইম তৈরিতে কাজ করে।

ফ্যাট বা চর্বি: শরীরে শক্তি যোগানের দ্বিতীয়তম প্রধান উৎস। এছাড়াও, এরা শরীরে ভিটামিন শোষণে সহায়তা করে এবং দেহের আভ্যন্তরিণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুরক্ষা কাজে ভূমিকা রাখে। এরা আবার তিন প্রকার হয়-

অসম্পৃক্ত বা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল;
সম্পৃক্ত বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট
ট্র্যানস ফ্যাট যা ক্ষতিকর ফ্যাট হিসাবে বিবেচিত।

ভিটামিন বা খাদ্যপ্রান: এদের মোট সংখ্যা ১৩ টি। এরা আবার দুই প্রকারের হয়-
পানিতে দ্রবনিয় ভিটামিন যেমন ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি

চর্বিতে দ্রবনিয় ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে

মিনারেলস বা খনিজ লবন: মোট ১৫ টি। এর দুই ধরণের-
Trace minerals যেমন কপার, জিন্ক, আয়রন
Major minerals যেমন সোডিয়াম, পটাসিয়াম

পানি: শরীরে পানির ভূমিকা- দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে; দেহের হারের জয়েন্টের লুব্রিকেন্ট এর মত কাজে সাহয্য করে; শরীরের বর্জ অপসারণে কাজ করে; খাদ্য হজম, শোষণ এবং পরিবহনে কাজ করে।

উপরের আলোচনা থেকে পুষ্টি উপাদানের উপর আমরা বেশ সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা পেলাম।

তবে, দেহে শক্তি বা ক্যালরি উৎপাদনের সক্ষমতা বিবেচনায় দেখা যায় যে, এই উপাদানের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থেকে আমাদের দৈনিক ক্যালরি চাহিদার শতকরা প্রায় ৮৫% পুরা হয় এবং প্রোটিন থেকে পুরা হয় ১৫%।

পুষ্টি কত প্রকার ও কি কি?

পুষ্টি কত প্রকার বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে খাদ্যে বিদ্যমান পুষ্টি পদার্থের কথা যা ইংরেজিতে আমরা nutrient বলি। খাদ্যে পুষ্টি উপাদানের পরিমানের উপর ভিত্তি করে একে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

Macronutrients: যে নিউট্রিয়েন্ট আকারে বড়।
Micronutrients : এই নিউট্রিয়েন্ট আকারে ছোট।

ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস: এরা মানুষ ও জীবন্ত প্রাণির খাদ্যের মুল উপাদান যা বেচে থাকার শক্তি ও পুষ্টি অর্জনের জন্য অধিক পরিমানে খেতে হয়। এদের উদাহারণ হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট জাতিয় খাদ্য।

কার্বোহাইড্রেট

সুগার, স্টার্চ বা শ্বেতসার এবং ফাইবার এই জাতিয় খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত। সুগার হল সরল বা সিম্পল কার্বোহাইড্রেট যা পাকস্থলীতে পৌঁছার পর খুব সহজেই ভেঙ্গে গিয়ে শরীরে শোষণ হয়। এদের থেকে শক্তি খুব দ্রুত পাওয়া যায়। কিন্তু এটি খেলে ক্ষুধা থেকে যায়। পেট ভরা অনুভূতি তৈরি হয় না। বরং, সুগার খাওয়ার ফলে রক্তে এর মাত্রা বেড়ে যায়। এতে করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।কার্বোহাইড্রেট জাতিয় খাদ্যের ফাইবার অংশের কিছু পরিমান পাকস্থলিতে ভেঙ্গে যায় যা দেহে শোষিত হয়ে শক্তি উৎপাদনে কাজে লাগে। আর এক অংশ পরিপাকতন্ত্রে বিদ্যমান ব্যাক্টেরিয়া বিপাকিয় কাজে ব্যবহার করে। অবশিষ্ট অংশ দেহ পরিত্যাগ করে।স্টার্চ হল এক প্রকার কমপ্লেক্স বা জটিল ধরণের কার্বোহাইড্রেট। ফাইবার সমৃদ্ধ স্টার্চ জাতিয় খাদ্য পাকস্থলিতে সহজে হজম হতে পারে না। ফলে দির্ঘক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুধা লাগার অনুভূতি তৈরি হয় না। ফাইবার বিশিষ্ট খাদ্য ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

প্রোটিন

বাংলা একে আমিষ জাতীয় খাদ্য বলা হয়। পুষ্টি উপাদানের মধ্যে প্রোটিন খুব গুরত্বপূর্ণ এক উপাদান। প্রায় ২০টি এমাইনো এসিড একটি অপরটির সাথে চেইন আকারে আবদ্ধ হয়ে প্রোটিন গঠিত হয়। যার মধ্যে ৯টি হল প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিড যা আমাদের দেহে তৈরি হতে পারে না। ফলে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাহির থেকে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে এর অভাব পূরণ করতে হয়।

প্রোটিন সম্পর্কে অপর এক পোষ্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। দেখে আসতে পারেন।

চর্বি বা ফ্যাট

কিছু কিছু ভিটামিন আমাদের দেহে শোষণ হতে হলে ফ্যাট বা চর্বির উপস্থিতি প্রয়োজন। যেমন, ভিটামিন এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই ও ভিটামিন-কে। এই ভিটামিনগুলো আমাদের দেহের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। চর্বি জাতীয় খাদ্য না খেলে এই ভিটামিনসমুহ দেহে শোষণ হতে না পারায় এদের উপকারিতা থেকে আমরা বঞ্চিত হই।

এছাড়া, দেহের আরোও অন্যান্য প্রয়োজনে চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে, কিছু কিছু ফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি আবার কিছু ফ্যাট এমন আছে যারা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ । তাই, ফ্যাট জাতীয় খাদ্য গ্রহনের পূর্বে আমাদের ভালভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন – কোন ধরণের ফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস

এরাও প্রয়োজনিয় খাদ্য উপাদান যা দেহের স্বাভাবিক সুস্থতা ও কাজ-কর্ম সম্পাদনের জন্য অল্প পরিমানে প্রয়োজন হয়। এই ধরণের পুষ্টি উপাদান বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ, দেহের গঠন ও বৃদ্ধি সাধনের ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এই জাতিয় পুষ্টির অভাবে দেহে অনেক ধরণের রোগ তৈরি হয়। এদের উদাহরণ হল ভিটামিন ও মিনারেলস।

ভিটামিন

ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনিয়। এটি খুব স্বল্প মাত্রায় প্রয়োজন হয়। তবে, স্বল্প মাত্রায় প্রয়োজন হলেও এর অভাবজনিত কারণে বড় বড় স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হয়। সাধারণত: সবুজ শাক-সবজি ও ফলমুলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন থাকে। এজন্য, দৈনিকের খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি ও ফলমুল অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

মিনারেলস

মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টের মধ্যে মিনারেলস বা খণিজ লবন খুব স্বল্প পরিমানে দেহে প্রয়োজন হয়। শাক-সবজি ও ফলমুলে খণিজ লবন পাওয়া যায়। এছাড়াও, বাজারে বিভিন্ন ভিটামিন-মিনারেল সপ্লিমেন্ট রয়েছে। যেখান থেকে আপনি এর অভাব পূরণ করতে পারেন।

পরিশেষে বলতে চাই, সঠিক পুষ্টি ছাড়া আমাদের দেহ সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে অক্ষম। পর্যাপ্ত পুষ্টি আমাদের দেহকে বাড়িয়ে তোলে এবং বৃদ্ধি এবং মেরামতের জন্য এটি পুষ্ট করে তোলে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার সুষম পরিসরের রাখতে হবে।প্রয়োজনীয় সঠিক পুষ্টি সরবরাহের জন্য সঠিক উপাদানগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যেমন: শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট এবং ভিটামিন এবং খনিজ ও পানি।আমরা যদি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করি এবং প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করি যা আমাদের শরীরকে ইমিউন/রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।এ ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test