E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সারাদেশে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন 

ভিটামিন-এ খাওয়ান, শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমান

২০২৩ জুন ১৮ ১৫:২২:০৭
ভিটামিন-এ খাওয়ান, শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমান

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


সারাদেশে আজ ১৮ জুন (রবিবার) ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন কর্মসূচি" ভিটামিন-এ খাওয়ান, শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমান- এ স্লোগানে সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তবে দুর্গম এলাকায় এই ক্যাম্পেইন চলবে টানা চার দিন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ২৫ লাখ শিশুকে নীল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে খাওয়ানো হবে লাল রঙের ক্যাপসুল।

এই ক্যাপসুল শিশুদের ভরা পেটে ভিটামিন ‘এ প্লাস’ খাওয়াতে হবে। কান্নারত বা অসুস্থ শিশুকে খাওয়ানো যাবে না। ক্যাম্পেইন চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার কমেছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃত্বের পুষ্টি ফোরামে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

১৯৭২ সালে এক গবেষণায় দেখা যায়, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে প্রায় ৪.১% শিশু রাতকানা রোগে আক্রান্ত ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার জাতীয় রাতকানা প্রতিরোধ প্রকল্প শুরু করেন এর অংশ হিসেবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।পরে বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বছরে দুইবার ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন 'এ' এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা (০.০৪%) প্রায় নেই বললেই চলে।ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর ফলে শিশু যে শুধু রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা পায় তা নয়, আরো বহুবিধ উপকার হয়। এ ক্যাপসুল শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে; ডায়রিয়া,আমাশয়, কলেরা, নিউমোনিয়া, টাইফয়েডসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগে ঘন ঘন আক্রান্ত হওয়া রোধ করে, যা শিশুকে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করে। ভিটামিন ‘এ’ শিশুর ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল হ্রাস করে এবং হামজনিত জটিলতা হ্রাস করে।

শিশুর লক্ষ্যমাত্রা

৬-১১ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা : প্রায় ২৫ লাখ

১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ

৬-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশুর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ

> স্বেচ্ছাসেবী ও স্বাস্থ্যকর্মী সম্পর্কে তথ্য

সর্বমোট কেন্দ্র সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার

সর্বমোট স্বেচ্ছাসেবী সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার

সর্বমোট স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার

> শিশুদের ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানোর উপকারিতা-
১. শিশুর রাতকানা ও অন্ধত্ব রোগ প্রতিরোধ করে।

২. শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৩. অন্ধত্বের চারটি প্রধান কারণের মধ্যে ভিটামিন 'এ'-এর অভাবজনিত কর্ণিয়ার রোগ ও কর্ণিয়ার ক্ষত অন্যতম। এই ভিটামিনটির অভাবে আপনার শিশু রাতকানা হয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

৪. এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫. ত্বক ও শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির স্বাস্থ্যরক্ষার কাজ করে। দেহ বৃদ্ধি, বিশেষ করে দেহের অস্থি কাঠামোর বৃদ্ধি প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভিটামিন 'এ'-এর সংযোগ রয়েছে।

৬. ভিটামিন 'এ' জীবাণু সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।

যাদের খাওয়ানো যাবে না:

উল্লিখিত বয়সের বাইরে যারা তারা খাবে না

মারাত্মক অসুস্থ হলে খাবে না

সম্প্রতি কেউ ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়ে থাকলে তারা খাবে না।

এর মধ্যেই ফেনীতে ৬-৯ মাস বয়সী ৩০ হাজার ৩৬১ শিশুকে নীল রঙের ক্যাপসুল এবং ৬-১১ মাস বয়সী ২ লাখ ১৩ হাজার ৭৯১ লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।গত বুধবার (১৪ জুন) সকালে ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাব উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।প্রসঙ্গত, বরাবরের মতো এবারেও ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের যৌথ আয়োজনে রয়েছে জাতীয় পুষ্টিসেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test