E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস 

মনের প্রশান্তি ও উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য যোগব্যায়াম এবং ধ্যান অপরিহার্য

২০২৩ জুন ২০ ১৫:৫৫:১৯
মনের প্রশান্তি ও উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য যোগব্যায়াম এবং ধ্যান অপরিহার্য

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


আগামীকাল বুধবার আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ২০২৩। সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি হিসেবে ইয়োগা বা যোগের গুরুত্ব অনেক। তাই প্রতি বছর ২১ জুন বিশ্ব ইয়োগা বা যোগ দিবসটি পালিত হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ যোগ। বিভিন্ন রোগ ঠেকাতে, শরীর ভালো রাখতে এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করতে তারা ভরসা রাখতেন যোগব্যায়ামের ওপর। বর্তমান সময়ে এর উপকারিতা ও গুরুত্ব বেশি হওয়ায় ভারতের এই প্রাচীন জ্ঞান এখন বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও আপন করে নেওয়া হচ্ছে।

‘যোগ’ শব্দটি দুটি সংস্কৃত শব্দ ‘য়ুজ’ এবং ‘য়ুজির’ সমন্বয়ে গঠিত। যার অর্থ ‘এক সঙ্গে’ বা ‘একত্র হওয়া’। তাই যোগের অর্থ বোঝায় আত্মা, মন এবং শরীরের সমন্বয়। চিন্তা ও কর্মের একতা প্রকাশ করে সৃষ্টিকর্তা বা আধ্যাত্মিক বিষয়ে চিন্তা করাও যোগের একটি প্রধান উদ্দেশ্য।

আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের সূচনা কয়েক বছর আগে। ভারতে ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ২১ জুনকে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৫ সালে সালে প্রথম সারা বিশ্বে এই দিবসটি উদযাপন হয়েছিল। প্রাচীন ভারতীয় অনুশীলন যোগাসনের বহুবিধ উপকারকে স্বীকৃতি দিয়ে গোটা বিশ্বে ২১ জুন 'যোগ দিবস' পালিত হয়।

সুস্থ জীবনের জন্য যোগব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এক কথায় বলা যেতে পারে, যোগ ব্যায়ামের উপকারিতার উপাখ্যান বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। তাই মনের প্রশান্তি এবং উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য যোগব্যায়াম এবং ধ্যান অপরিহার্য বলে মনে করা হয়। অনেকে এ কথা প্রায়শই মনে করে যে যোগব্যায়াম শুধুমাত্র শরীরকে নমনীয় করার জন্যই করা হয়, কিন্তু তা সঠিক নয় । যোগব্যায়ামের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আসনগুলির রয়েছে বহুমুখী উপকারিতা।

এর মাধ্যমে আপনি শরীরের বিভিন্ন ধরণের রোগ কমাতে পারেন; যেমন- হাঁটুর ব্যথা, পায়ের ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, স্ত্রী রোগ কোষ্ঠকাঠিন্য,উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতন নানান কঠিন ব্যাধি । প্রত্যহ যোগব্যায়ামের সাহায্যে সারাজীবন তরুণ এবং সুস্থ থাকতে পারা যায়। এছাড়াও নিজের ওজনের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য যোগাসনের কোনো বিকল্প নেই।

সুস্থ এবং ফিট বডি পেতে নিয়মিত এবং সঠিক পদ্ধতিতে যোগব্যায়াম করা তাই একান্ত জরুরি।,

পদ্মাসন করার নিয়ম, উপকারিতা

পায়ের পেশিতে যদি ব্যথা বা দুর্বলতা থাকে, হাঁটুতে ও পায়ের সংযোগ স্থলে ব্যথা থাকলে আথবা অল্প হাঁটলে হাঁফ ধরে গেলে এই আসনটি উপকারে লাগতে পারে । সিঁড়িতে উঠতে গেলে কষ্টবোধ করা, মেরুদণ্ডের আড়ষ্টভাব, অনিদ্রায় ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে এই আসন খুবই ফলদায়ক।

হস্তপদাসন করার নিয়ম, উপকারিতা

এই আসনটি মেরুদণ্ড সহজ ও নমনীয় রাখতে সাহায্য করে । দেহের অসমতা থাকলে তা দূর করে অর্থাৎ দেহের উপরাংশ বা নিম্নাংশ ছোট অথবা বড় আকারের হয়ে থাকলে তার নিরাময় হয় ।

প্লীহা, যকৃৎ, মূত্রাশয় প্রভৃতি সক্রিয় রাখতে এই আসনটি সাহায্য করেন । অজীর্ণ, কোষ্ঠবদ্ধতা, পেটফাঁপা প্রভৃতি পেটের রোগের হাত থেকে বাঁচায় , রক্তাল্পতা রোগ দূর করে এবং কিশোর-কিশোরীদের লম্বা হতে ও সহায়ক এই আসনটি।এই আসনটির ফলে দেহের সমস্ত শিরা, উপশিরা, ধমনী, স্নায়ু ও পেশী সুস্থ ও সক্রিয় থাকে। পেট, কোমর ও নিতম্বের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং দেহকে সুঠাম ও সুন্দর করে তোলে।কোন রকম বাত বা সায়টিকা, স্ত্রী-ব্যাধি রোধ করতে এই ব্যায়ামটি অপরিহার্য।

অর্ধচক্রাসন

এই আসনটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ও জঠরাগ্নি বৃদ্ধি করতে সহায়ক। প্লীহা, যকৃৎ, মূত্রাশয় প্রভৃতি পেটের দেহ-যন্ত্রগুলোকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এই আসনটির মাধ্যমে এড্রিনাল গ্রন্থির খুব ভালো কাজ হয় এবং দেহের সকল স্নায়ুজাল সুস্থ ও সক্রিয় থাকে, মেরুদণ্ড ও নমনীয় থাকে। এছাড়াও এই বিশেষ আসনটি বুকের খাঁচার দোষ-ত্রুটি দূর করতে সক্ষম। মেরুদন্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও পিঠের দু’পাশের পেশীগুলিকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখে এই আসনটি। পেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং দেহকে সুঠাম ও সুন্দর করে তোলে।

এিকোণাসন

পেট ও কোমরের মেদবৃদ্ধি হ্রাস করতে, স্কন্ধবাতে, পায়ের পেশির জোর বাড়াতে, হাঁটুর, পায়ের ও কব্জি, উরুর এবং পেশির ও কাঁধের সন্ধিস্থলের বেদনা লাঘব করতে উপকারী।

বীরভদ্রাসন

এই আসনটি অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় ও মজবুত হয়, মেরুদণ্ডের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। পাঁজরের হাড়ের অসমতা দূর হয় এবং ছাতি সুগঠিত হয়। এই ব্যায়ামের ফলে পায়ের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পায়ের গঠন সুন্দর হয়। তলপেট, কোমর ও নিতম্বে অতিরিক্ত মেদ জমতে পারে না যার ফলে দেহ সুন্দর ও সুঠাম হয়ে ওঠে।

চতুরঙ্গ দণ্ডাসন

চতুরঙ্গ দণ্ডাসন পুরো শরীরের জন্য উপকারী যার মাধ্যমে পেশীর সক্রিয়করণ হয়। চতুরঙ্গ অনুশীলন আপনার শারীরিক শক্তি গঠন করতে সহায়তা করে,

আপনার পিঠ এবং কোমরকে শক্তিশালী করে তোলে। প্ল্যাঙ্ক ব্যায়ামের মতো, এই আসনটি আপনার পুরো শরীরকে সারিবদ্ধ করে এবং আপনার ইরেক্টর মেরুদণ্ডে শক্তি সঞ্চার করে থাকে। শক্তি, অঙ্গবিন্যাস এবং স্থিতিশীলতা উন্নত করতে এটি এক কথায় প্রভূত সহায়ক। পিঠের ব্যথা উপশম করতে, নমনীয়তা বাড়াতে এবং মানসিক সুস্থতার উন্নতি করতেও এটি সাহায্য করতে পারে। এটি শরীরের সচেতনতা কে আর ও উন্নত করে তোলে।

পশ্চিম নমস্কারাসন

পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং এর ফলে গভীর শ্বাস নেওয়া খুবই সহজ হয়ে ওঠে । পিঠের উপরিভাগ প্রসারিত করে।কাঁধের জয়েন্ট এবং পেক্টোরাল পেশী প্রসারিত হয়।

গরুড়াসন

নিতম্ব, উরু, কাঁধ এবং উপরের পিঠের অংশকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে । নিয়মিত ব্যায়ামটির অভ্যাস দেহের ভারসাম্য উন্নত করে; পেশিগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে। এটি সায়াটিকা এবং রিউম্যাটিক যন্ত্রণার উপশম করতে সাহায্য করে। এই ব্যায়ামটি পা এবং নিতম্ব আরও নমনীয় করে তোলে।

সেতুবন্ধ আসন

এই আসনটি পিঠের পেশী মজবুত করে;তাৎক্ষণিকভাবে ক্লান্তি দূর করে;বুক, ঘাড় এবং মেরুদণ্ড প্রসারিত করে;মস্তিষ্ককে শান্ত করে, উদ্বেগ, চাপ এবং বিষণ্নতা কমায়। ফুসফুসকে আরও সক্রিয় করে তোলে এবং থাইরয়েডের সমস্যা কমায়।হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে; মেনোপজ এবং মাসিক ব্যথার উপসর্গ উপশম করতে এই ব্যায়ামটি প্রভূত সহায়ক। এছাড়া হাঁপানি, উচ্চ রক্তচাপ, অস্টিওপোরোসিস এবং সাইনোসাইটিসে এই আসনটি খুবই কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।

পশ্চিমোত্তানাসন

মেরুদণ্ড ও পেটের জন্য বিশেষ উপকারী এই আসনটি যা মেরুদণ্ডের হাড়ের সংযোগস্থল নমনীয় রাখে এবং মেরুদণ্ডসংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও দু’পাশের পেশীগুলিকে সবল ও সক্রিয় করে তোলে। অগ্ন্যাশয়, মুত্রাশয়, প্রজনন প্রভৃতি গ্রন্থিগুলো সতেজ ও কর্মক্ষম থাকে।

এই আসনটি ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগীর জন্য খুব উপযোগী। হাত, পা, পেট ও বস্তিপ্রদেশের পেশী ও স্নায়ুজাল সতেজ ও সক্রিয় রাখতে, জঠরাগ্নি বৃদ্ধি করতে, অজীর্ণ, কোষ্ঠবদ্ধতা, বহুমূত্র, স্বপ্নদোষ, অর্শ প্রভৃতি রোগ দূর করতে এই আসনটির বিকল্প হয় না। পেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ হ্রাস করে শারীরিক গঠন সুন্দর করতে সাহায্য করে। এই আসনটির নিয়মিত অভ্যাস মানুষকে যে কোন বাত বা সায়টিকা রোগের হাত থেকে মুক্তি দেয় আর রোগ দেখা দিলেও তা অল্পদিনে সেরে যায়।

পূর্বোত্তানাসন

কব্জি, বাহু, কাঁধ, পিঠ এবং মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করে, পা এবং নিতম্ব প্রসারিত করে তোলে, শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে, অন্ত্র এবং পেটের অঙ্গ প্রসারিত করে তোলে, থাইরয়েড গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে।

বকাসন

স্কন্ধবাত, পেশিবাত, হাত কাঁপার মতন ব্যাধি থাকলে তা নিরাময় করতে সাহায্য করে এই আসনটি । তাছাড়াও পেটের মাংসপেশির দুর্বলতা, পেটের চর্বি ও নিউরালজিয়া ইত্যাদি কমাতে সহায়ক।

অর্ধমৎস্যেন্দ্রাসন

আসনটি নিয়মিত অভ্যাসের ফলে মেরুদণ্ড যৌবনোচিত নমনীয় ও সরল হয়; পিঠের ও মেরুদণ্ডের দু’পাশের পেশী ও স্নায়ুকেন্দ্রগুলো সতেজ ও সক্রিয় থাকে। এই আসনটির মাধ্যমে যেহেতু দেহে সব অংশেরই কম-বেশি ব্যায়াম হয়, তাই দেহের কোন অংশে বাত বা সায়াটিকা রোগ ধরতে পারে না। এছাড়াও অর্ধমৎস্যেন্দ্রাসন আসন টি অজীর্ণ, কোষ্ঠবদ্ধতা, প্লীহা ও যকৃতের রোগ দূর করতে সাহায্য করে।

ধনুরাসন

এই আসনটি মানুষের মেরুদণ্ডের হাড়কে নমনীয় রাখে। মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও তার সংলগ্ন পেশী সতেজ ও সক্রিয় রাখতে এই আসনটি প্রভূত সহায়ক। এই আসনটি নিয়মিত অভ্যাসের ফলে বুকের পেশী ও পাঁজরের হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যার ফলে বুক সুগঠিত হয়। এটি হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম।

এই আসনটি স্নায়ুজাল সবল ও সক্রিয় রাখে এবং পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র, প্লীহা, যকৃতের কাজ খুব ভালো হয়। দেহের মধ্যভাগের অপ্রয়োজনীয় মেদ দূর হয়, মনের চঞ্চলতা দূর করে এবং স্বভাবে ধৈর্য্য বৃদ্ধি করতেও এই আসনটি সহায়ক এবং কোন স্ত্রী-রোগ বা পেটের রোগ সহজে আক্রমণ করতে পারে না।

তাড়াসন

সুস্থ থাকার জন্য এই যোগসনটি খুবই উপকারী। এটি শরীরের আকর্ষণীয় দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির জন্য খুব কার্যকর। এটি একটি সহজ যোগব্যায়াম যা আপনার উরু, হাঁটু, গোড়ালি শক্তিশালী করে এবং এটি আপনার পায়ের পক্ষেও উপকারী।

উষ্ট্রাসন

যেসব ব্যক্তির মেরুদণ্ড সামনের দিকে বাঁকা এবং যাদের বয়স অনুসারে বুকের গড়ন সরু বা অপরিণত, তাদের জন্য আসনটি খুবই কার্যকরী । এ আসনটি মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় ও মজবুত করে তোলে। বুকের পেশী ও পাঁজরের হাড় বৃদ্ধিতে সহায়ক। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড ও টনসিল গ্রন্থি সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। আসনটি নিয়মিত অভ্যাস রাখলে সহজে কোন পেটের রোগ বা স্ত্রী-রোগ হয় না। দেহে শীত-তাপ সহ্যশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়ক এবং দেহের মধ্যভাগে সঞ্চিত অপ্রয়োজনীয় মেদ হ্রাস করে দেহকে সুগঠিত করে।

সুখাসন

মাংসেপেশির স্থিতিস্থাপকতা ও শক্তি বাড়াতে এই ব্যায়ামটি উপযোগী। যাদের পায়ের সন্ধিস্থল শক্ত হয়ে গেছে, মাটিতে বসলে দু’ হাঁটু উঠে থাকে এবং পেশিতে টান ধরে যায়, তাদের ক্ষেত্রে এই আসনটি বিশেষ লাভদায়ী

ভুজঙ্গাসন

আসনটি নিয়মিত অভ্যাস করলে ঘাড়, গলা, মুখ, বুক, পেট, পিঠ, কোমর ও মেরুদণ্ড অঞ্চলের স্নায়ুতন্ত্র ও পেশী সতজ ও সক্রিয় থাকে। মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় হয়, বক্র মেরুদণ্ড সোজা ও সরল হয়।

এই আসনটি নিয়মিত করলে বুকের গড়ন সুগঠিত হয় ; হৃৎপিণ্ডের পেশী এবং ফুসফুসের বায়ুকোষ ও স্নায়ুজালের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।মেয়েদের জন্য এই আসনটি অনেক সুফল প্রদান করে যেমন এই আসনটি করাকালীন ডিম্বাশয়ে প্রচুর রক্ত সঞ্চালিত হয় বলে কোন স্ত্রী-ব্যাধি সহজে হতে পারে না।

বয়স অনুযায়ী যেসব ছেলেমেয়েদের বুকের গড়ন সরু বা অপরিণত, আসনটির নিয়মিত অভ্যাসের ফলে তাদের বুক সুগঠিত হয়ে ওঠে।

শলভাসন

কোমর থেকে শরীরের নিম্নাংশের ভালো ব্যায়াম হবার ফলে কটিবাত, মাজা ব্যথা, মেয়েদের ঋতুকালীন তলপেটে ব্যথার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় । বাত বা সায়টিকার জন্য এই আসনটি এক অব্যর্থ প্রতিষেধক। অজীর্ণ, কোষ্ঠবদ্ধতা, অম্ল বা এসিডিটি প্রভৃতি রোগের হাত থেকে মুক্তি দেয় এই আসনটি। এটি দেহের প্রসারক পেশীগুলোকে সঙ্কুচিত করে ও রক্তে প্লাবিত করে; এটি সঙ্কোচক পেশীগুলোকে পরিপূর্ণ বিশ্রাম দেয় যার ফলে তলপেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমে যায় এবং দেহ সুগঠিত হয়ে ওঠে। ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং হৃৎপিণ্ডের পেশীও সতেজ ও সক্রিয় রাখে এই আসনটি।

প্রশ্নোত্তর

_ যোগব্যায়াম কি আপনার ওজন কমাতে পারে?

যোগব্যায়াম আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করার জন্য একটি কার্যকরী হাতিয়ার হতে পারে।

_ যোগাসনের কোনো খারাপ ইফেক্ট আছে ?

সঠিক ভাবে যোগাসন করলে তা কখনোই কোনো ক্ষতি বা সাইড এফেক্ট করবে না।

_ যোগাসন কখন করা যায়?

যোগ ব্যায়াম করার সেরা সময় হলো ভোরবেলা। যদিও আপনি অন্য যেকোনো একটি নির্দিষ্ট সময়েও করতে পারেন প্রত্যহ।

সতর্কতা

হৃদরোগী, উচ্চরক্তচাপ এবং কোমর যন্ত্রণায় ভুগতে থাকা ব্যক্তিরা এ আসন করবেন না। যারা কাছের জিনিস দেখতে চশমা ব্যবহার করেন তারা এ আসন করবেন না। সর্দি-কাশি হলেও এই আসন করা উচিত নয়। তাই যোগাসনের উপকারিতা এক দিনে পাওয়া যাবে না। নিয়মিত বুঝে ও জেনে প্রয়োজন অনুযায়ী আসনগুলো অনুশীলন করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test