E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে কক্সবাজার

২০২৩ নভেম্বর ১০ ১৬:১৫:৪৩
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে কক্সবাজার

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


১১ নভেম্বর শনিবার চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নবনির্মিত ১০২ কিলোমিটার রেললাইন, ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার রেল লাইন।নবনির্মিত কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন। চারদিকে সাজসাজ রব। নিরাপত্তার চাদরে যেমন ঢাকা হয়েছে, তেমনি মানুষের মধ্যে রয়েছে উচ্ছ্বসিত কৌতুহল। রাজনৈতিক অঙ্গন খুবই সরগরম। কক্সবাজার চারটি সংসদীয় আসনের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্তত ৪২ জন নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। এদের মধ্যে চার জন বর্তমান সাংসদ, কেন্দ্রীয় নেতা, জেলা উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও  সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। তাই এবারের প্রধানমন্ত্রীর আগমন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে জেলা জুড়ে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যাপক জনসংযোগ, শোডাউন পাল্টা শোডাউন, ব্যানার, ফেষ্টুন, মতবিনিময় সভা, শেখ হাসিনার ব্যাপক উন্নয়ন,সাহসিকতা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সফলতা নিয়ে  কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষায় জারিসারি ভাটিয়ালি গানের আসর চলছে গ্রাম থেকে শহরে। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার মাতারবাড়ি জনসভা১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক কথায় জনসমুদ্রে পরিনত হবে এ জনসভা। শেখ হাসিনার এবারের  কক্সবাজার আগমন অন্য যেকোনো সময়ের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মাত্র ক' দিন পরেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সে অর্থে এ সফরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট ও চাইতে পারেন তিনি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলা জুড়ে নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। এর আগে ২০২২ সালের ৭ই ডিসেম্বর ২৯ প্রকল্পের উদ্বোধনের এগারো মাসের মাথায় আজ ১১ নভেম্বর কক্সবাজার সফর আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকাল পৌনে ১০টায় বিমানে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে সোয়া ৩টায় মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের টাউনশিপ মাঠে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন তিনি।কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বদিকে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে ছয়তলা ভবনের আইকনিক রেলস্টেশন। ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭ বর্গফুট আয়তনের এ রেলস্টেশন ভবন-নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১৫ কোটি টাকা। ঝিনুকের আদলে তৈরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ স্টেশনে রয়েছে তারকা মানের হোটেল, রেস্তোরাঁ, লকার, শপিং মলসহ বিশ্বমানের সব সুবিধা। যাত্রীরা চাইলে রাতের ট্রেনে ঢাকা থেকে সকালে কক্সবাজার পৌঁছে মালামাল লকারে রেখে সারাদিন সৈকত ঘুরে রাতের ট্রেনে পুনরায় ঢাকায় ফেরার সুযোগ পাবেন।

এছাড়াও রয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধন, কক্সবাজারকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্বোধন।

শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধনসহ অন্যান্য প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন। বিকেল ৩টায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মফিজুর রহমান জানান, শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সামনে রেখে কয়েকবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চালিয়ে দেখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর শুরু হবে রেল চলাচল।

২০১০ সালে ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার এই রেললাইন প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই প্রকল্পে সিঙ্গেল লাইন মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু ট্রান্স এশীয় রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত হতে ব্রডগেজ রেলপথ লাগবে। তাই প্রকল্প সংশোধন করা হয় ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল। জমি অধিগ্রহণসহ প্রকল্পের বিভিন্ন অনুষঙ্গে ব্যয় দাঁড়ায় ১৬ হাজার ১৮২ কোটি টাকা।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের আওতায় ৩৯টি বড় আকারের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রায় ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেলক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে। হাতি চলাচলের জন্য আলাদা করে আন্ডারপাস করা হয়েছে।

কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি নির্মাণ ও সংস্কার করা দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ এবং রামু রেলস্টেশন। এদিন আরও ১১টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি।এসব প্রকল্পের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা।এছাড়া, একইদিন তিনি প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ প্রকল্পের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য বলছে, রেল লাইন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী যে ১১টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তাতে রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত মাতারবাড়ি ১২শত মেগা ওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযোগ।

এছাড়া, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৩টি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৪টি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্পও রয়েছে।

মাতারবাড়ি ১২ শত মেগা ওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি জাপানের আর্থিক সহায়তার ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১২ শত মেগা ওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু হয় ২৯ জুলাই দুপুরে। ৬ মেগা ওয়াটের পরীক্ষামূলক উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এটি ১২ মেগা ওয়াটের উৎপাদন শুরু করে অক্টোবরের শুরুতে।আর উৎপাদিত এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

মহেশখালী উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের মাঝামাঝি এক হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে দুটি ইউনিটে বিভক্ত এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) বাস্তবায়ন করে।

প্রকল্পের নথিপত্রে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে অনুমোদন পাওয়া মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিকিটক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার' প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। সংশোধন করে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫১,৮৫৪.৮৮ কোটি টাকা।

প্রকল্পটিতে আগে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) ঋণ দেওয়ার কথা ছিল ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। এবার সেই ঋণ বাড়িয়ে জাইকা মোট ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা দেয়। প্রকল্পটিতে সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হয় ৬ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা।

সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত কুতুবদিয়া

স্বাধীনতার ৫২ বছরে প্রথমবারের মতো গত ১৩ এপ্রিল বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হয় দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। আগের দিন ১২ এপ্রিল রাত থেকে দ্বীপটির দেড় হাজার গ্রাহক পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ সুবিধা পেতে শুরু করে।

প্রকল্পটির পরিচালক ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক জানান, দ্বীপে ১৯৮০ সালে জেনারেটরের মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল। ওই দেড় হাজার গ্রাহককে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ চালু করা হয়। আবেদন করা ২০ হাজার গ্রাহককে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০২০ সালে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে 'হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন' প্রকল্পটির মেয়াদকাল ছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই দ্বীপটিতে পৌঁছে গেল জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ।,আর প্রকল্পের অধীনে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে কুতুবদিয়া। বিদ্যুৎ নিতে সাগরতলে দুই লেনে গেছে দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার ক্যাবল। ওখানে ১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন উপকেন্দ্র, ৭২০ কিলোমিটার সঞ্চালন বিতরণ স্থাপন হয়েছে।

বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে ৫৯৫ মিটার পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ

এলজিইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কস্তুরাঘাট সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে এ সেতু। ৫৯৬ মিটারের এই সেতুর জন্য ব্যয় হচ্ছে ২৫৯ কোটি টাকা।

সেতুটির আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের গত ১ সেপ্টেম্বর। ২০২১ সালের ২১ আগস্টের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারি ও নানা জটিলতায় শেষ হতে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগে।

প্রকল্প বাস্তয়ানকারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডি'র কক্সবাজারের নির্বাহী বলেন, "কক্সবাজার শহরের উত্তর পাশে বাঁকখালী নদী প্রবাহমান। এই বাঁকখালী নদীর পাড়েই যেই জায়গায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে সেটা ময়লার ভাগাড় ছিল। সেই জায়গায় এখন একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়েছে এবং গুণগত মানের বিষয়ে জিরো টলারেন্স রেখে আমরা এই সেতুটি নির্মাণ করেছি। এই সেতুটি নির্মাণের ফলে যে বিষয়টা আমাদের নতুন মাত্রা যোগ করেছে সেটি হলো পর্যটন শিল্প।"

কক্সবাজারের নির্বাহী আরও বলেন, "কক্সবাজার শহরের উত্তর দিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে এখানে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণের ফলে নবগঠিত ঈদগাও উপজেলার সঙ্গে দূরত্ব কমে যাবে। চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের দূরত্ব অনেক কমে যাবে।"

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) সচিব ওমর ফারুক জানান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) থেকে অধিগ্রহণ করা চ্যানেলটি চালুর জন্য সিপিএ সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি এবং ১৮.৫ মিটার ড্রাফ্টসহ ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি বহুমুখী জেটি এবং একটি কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দরের অন্যান্য সুবিধার নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

সিপিজিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলটি সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ২০২৬ সালে বন্দরটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিপিজিসিবিএল ইতোমধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই চ্যানেলের মাধ্যমে ১২০টি জাহাজ চলাচলের জন্য চ্যানেল এবং দুটি জেটি নির্মাণ করেছে।

দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রায় ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের জন্য চ্যানেলের প্রস্থ ১০০ মিটার বাড়িয়ে ৩৫০ মিটার করা হয়েছে।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ৪টির মধ্যে রয়েছে ৩ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে কক্সবাজার সদরের জাহারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, সাড়ে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে মহেশখালীর ইউনুসখালি নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়ার রত্নাপালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও মারিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন।
প্রবাসি কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রামু কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নিমার্ণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য দুটি ছাদখোলা বাস উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ৬৭ কোটি টাকার টেকনাফ মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার রিসিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার, রামুর নন্দাখালী ১৮৪ মিটার আর্চ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস ফর ট্যুরিস্ট।

পরিশেষে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছা কারণে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উদাত্ত আহবানে আসুন আমরা দলমত নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি যা হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নপূরণের একমাত্র পথ। এই সময়ের বাংলাদেশে তিনি একজন ব্যক্তি মাত্র নন, ব্যক্তির ঊর্ধ্বে গণমানুষের আশা-জাগানিয়া অভিভাবক। নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় নেই। সকাল-দুপুর-বিকাল-রাত কেটে যায় দেশ মানুষের মঙ্গল চিন্তায়। তিনি দীর্ঘ জীবনের সুস্থতা নিয়ে আমাদের মাঝে সজীব থাকবেন এই প্রত্যাশা আমাদের।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

লেখক : কলাম লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লষক।

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test