E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ার তরুণ প্রজন্মের বিবেকী আবেদন 

২০২৩ নভেম্বর ১৮ ১৭:৩৮:০১
ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ার তরুণ প্রজন্মের বিবেকী আবেদন 

সুব্রত কুমার বিশ্বাস


আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমি একটি সমাজের প্রতিনিধিত্ব করি। আমার পূর্বপুরুষ, আমার বাবা-দাদা ও আমার জন্ম এই মাটিতেই। সঙ্গত কারণেই এই সমাজের প্রতি আমার ও আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। বর্তমানে ঈশ্বরদী বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ নিউক্লিয়ার সিটি। সেই জায়গা থেকে আমাদের অর্থাৎ ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ার তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীর স্বপ্ন, চিন্তা-চেতনা, দেশকে নিয়ে ভাবনা আমি আমার লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করছি। বায়ান্নো থেকে একাত্তর বাঙালি জাতির স্বপ্ন-সাধনা, ইতিহাস, স্বাধিকার আন্দোলন একটি মানুষকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। সেই মানুষটি আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ধ্যান-জ্ঞান সবকিছু ছিল এই বাংলাদেশ বা বাঙালী জাতিকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি শোষণমুক্ত সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু একাত্তর এর পরাজিত শক্তি ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর সমগ্র জীবনের লালিত স্বপ্ন ও তাঁর পরিবারকে বাঁচতে দেয় নাই। তাঁর স্বপ্ন তাঁরই কন্যা বাংলাদেশের চার বারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাস্তবায়নের জন্য বাঙালি জাতিকে নিয়ে একটি কঠিন পণ করে।  সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই।সোনার মানুষ হতে হলে তাঁকে হতে হবে সৎ,নির্ভীক,মানবিক,  নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সম্পন্ন একজন মানুষ।

আমি পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী- আটঘড়িয়ার) তরুণ প্রজন্মের একাংশ যারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন ও শেষ করেছেন তাঁদের মধ্যে সাইদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মুমতাহিনা মৌলি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জহুরুল ইসলাম জুয়েল ঢাকা বিশ্ববিদয়ালয়, নাজমুল জোহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আশরাফ খুলনা প্রকৌশল ও বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াহেদ বাঁধন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় , মাহবুবুর রহমান প্রভাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, আশিক বিশ্বাস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, আরাফাত বিন আনসার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শিবলু হোসেন হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সন্জয় কর্মকার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জান্নাতুল ফেরদৌস জিনিয়া পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাজিদ আল সিরাজ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,শেখ রিপন হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নিলয় হোসেন হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মুরাদ হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আব্দুল্লা সানি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁদের চিন্তা-চেতনা, ধ্যান- ধারনা উপলব্ধি করেছি। তাঁদের চিন্তা-চেতনায় যে মানুষগুলো তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দৌঁড়াদৌঁড়ি করছেন তাঁদের দ্বারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। অবৈধ অর্থ, শোডাউন, হাঁট দখল, মাঠ দখল, বিশেষ বাহিনী তৈরী এগুলো দিয়ে সমাজের গুণগত পরিবর্তন কখনোই সম্ভবপর নয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসেবে দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ। এই বেকারদের মধ্যে ১৬ লাখ ৭০ হাজার পুরুষ আর আট লাখ ৩০ হাজার নারী। এর মধ্যে শিক্ষিত তরুণদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। এছাড়াও দেশের অধিকাংশ সেক্টর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সির দখলে যাবে। আগামী দিনগুলোয় চিকিৎসাসেবায়, অফিস-আদালতে, শিল্প-কারখানায়, সংবাদসংস্থা বা গণমাধ্যমে, ভাষান্তর প্রক্রিয়ায়, টেলিফোন সেবায়, বৈজ্ঞানিক গবেষণায়, হোটেল-রেস্তোরাঁ এমনকি বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্র তথা রোবটের ব্যাপক ব্যবহারের আভাস দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।এসকল খাতের মধ্যে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে ব্যাংক খাত। সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে লেনদেন। মুহূর্তেই পাওয়া যাচ্ছে ঝামেলাহীন পরিষেবা। তবে ব্যাংক খাতের লেনদেনে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার। নতুন একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এআই প্রতি বছর ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত ১ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত করতে পারে। গ্রাহকদের পরিষেবায় ব্যক্তিগতকরণ বৃদ্ধি, উচ্চ গুলোতে অটোমেশনের মাধ্যমে ব্যয় হ্রাস, ত্রুটির হার কমিয়ে আনা এবং উন্নত দক্ষতার ব্যবহারের মাধ্যমে এআই ব্যাংকগুলোর রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। এই সমাজের তরুণ প্রজন্মকে আগামীর বিশ্ব মোকাবেলার উপযোগী করে মূলধরায় সম্পৃক্তকরণ বিশেষ করে উপরিউক্ত খাত গুলোতে সম্পৃক্ত করণ জরুরি।

এছাড়া ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ার সমস্ত স্কুল-কলেজ গুলোকে আধুনিকায়নের চিন্তা-ভাবনা আর যাইহোক হাট-ঘাট দখলের চিন্তা-চেতনার মানুষ দিয়ে সম্ভবপর নয় বললেই চলে।উপরিউক্ত তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা প্রত্যাশা করে বা চিন্তা করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্য চাই একজন সৎ, উচ্চশিক্ষিত, মার্জিত, সমাজ সচেতন, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক, আদর্শবান, মানবিকগুণ সম্পন্ন একজন মানুষ। আর এ সকল গুণ শুধু মুখে ধারণকারী নয় বরং বাস্তব জীবনে প্রতিফলন হতে দেখেছি আমরা একজন মানুষের মধ্যে আর তিনি হলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু। কেননা ঈশ্ববরদী -আটঘড়িয়াকে নিয়ে তাঁদের চিন্তা-চেতনা, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড,মানুষ ও সমাজকে নিয়ে ভাবনা সকল কিছুতে তাঁকে অন্যান্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়াতে রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকে নিয়ে তিনি যেভাবে চিন্তা করেন যার দরুণ তিনি কোন বিশেষ বাহিনী তৈরি,হাট দখল, মাঠ দখল এগুলো না করে তিনি করেছেন জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন "খেলাঘর"।

আর এই খেলাঘর এর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে তিনি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের বীজ বপন করে চলেছেন। এছাড়াও ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়াকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। কেননা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব একটি সমাজের চিত্র বদলে দিতে পারে। আমি দেখেছি কোন অবৈধ অর্থের লেনদেন না করে তাঁর যে সোশ্যাল ক্যাপিটাল বা নেটওয়ার্ক রয়েছে এটি সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে শিক্ষিত তরুণদের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করতে যেখানে অন্যান্য নেতাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ তো দূরের কথা অবৈধ লেনদেন করা ভুক্তভোগীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হওয়ার পথে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের যে চারটি নিয়ামক রয়েছে যেমন স্মার্ট সিটিজেন,স্মার্ট ইকোনোমি,স্মার্ট গভমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি। আর এগুলোকে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন একজন স্মার্ট লিডার। আমাদের দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, তাঁর একমাত্র উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী জিরু। এমন একজন স্মার্ট নেতাই পারে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সততা, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা পালন করতে। আপনারা সাময়িক সুবিধার কথা চিন্তা না করে আপনাদের সন্তান ও ঈশ্বরদীকে নিয়ে ভাবুন।এটাই আমাদের আবেদন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সমাজকর্ম বিভাগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test