E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আবহাওয়ার সাথে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক

২০২৪ মার্চ ২২ ১৭:২৬:৫৫
আবহাওয়ার সাথে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


২৩ মার্চ শনিবার বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ২০২৪। প্রতিদিন কোনো না কোনো দিবসের একটা চক্কর থাকে। এসব নিয়ে অনেক বাহাস আছে। যেসব বিষয় বা যাঁদের নিয়ে দিবস, তাঁদের প্রয়োজন শুধু যেন ওই দিবসের দিনটিতেই ফুরিয়ে না যায়, সেটা অনেকে মনে করিয়ে দেন। আবহাওয়া তেমনি একটা দিবস, যার প্রয়োজন প্রতি পলে পলে। ঘটা করে এই দিবসের চল শুরু হয় ১৯৬১ সালে। ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থাই ১৯৫০ সাল থেকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। এর প্রায় এক বছর পর একটি বিশেষ সংস্থায় পরিণত হয় WMO জাতিসংঘ (UN)। ১৯৫১ সালে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থাকে পরিবর্তন করে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানের জন্য প্রথম বিশ্বব্যাপী সংস্থা হয়ে ওঠে। ডব্লিউএমও পূর্বে কী করেছে এবং ভবিষ্যতে কীভাবে মানুষকে সাহায্য করবে তা তুলে ধরে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য দেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলসমূহ এই  তারিখ অনুসারে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালন করে আসছে। 

বিশ্ব আবহাওয়া দিবস কেন পালন করা হয়?

বিশ্ব উষ্ণায়নের বাস্তবতায় তাপমাত্রাকে স্থিতাবস্থায় নিয়ে আসার জন্য সম্মিলিত চেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ব আবহাওয়া দিবসটি পালন করার কারণ মূলত পরিবেশ রক্ষা করা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, বিশ্ব উষ্ণায়নের বাস্তবতায় তাপমাত্রাকে স্থিতাবস্থায় নিয়ে আসা, সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, সমুদ্রের উপরিতলের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সতর্ক এবং সসচেনতা তৈরি করা।

এছাড়াও, বিশ্ব উষ্ণতার কারণে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে বেহাল অবস্থা। সমুদ্র পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলবর্তী দেশগুলো দিনের পর দিন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ফলে বেড়ে যায় ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাসের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ। এসব সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই প্রতিবছর এই দিবসটি মূলত পালন করা হয়।

বিশ্ব আবহাওয়া দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ ২০২১-৩০ পর্যন্ত সময়কে সমুদ্র দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে। পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় সমুদ্রকে।

মানুষের সৃষ্ট নানা কর্মকান্ডের কারনে পৃথিবীতে প্রশমিত হচ্ছে অতিরিক্ত তাপ, ফলে ব্যপক হারে বাড়ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। ফলে টর্নেডোর আভির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমান্বয়ে বেড়েই যাচ্ছে। টর্নেডো আভির্ভাবের ফলে সুমুদ্রের পানি আয়তনে ফুলে উঠবে। পৃথিবীতে প্রাকৃতিক দূর্যোগের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমার থেকে আরও বেড়ে যাবে। এমনিতেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দিনের পর দিন পৃথিবীতে বেড়েই চলেছে।

এমতাবস্থায়, যদি সকলে সচেতন এবং আগাম সতর্ক না হই তাহলে আগামীতে পৃথিবী ধ্বংসের মুখোমুখিতে পরবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে হলে সকলকে আজ থেকেই সচেতন হয়া প্রয়োজন। তানাহলে একদিন শুধু আমাদের দেশই নয়,কোনো দেশই রেহাই পাবে না, ধ্বংস হয়ে যাবে পুরো বিশ্ব।

আবহাওয়ার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক

প্রকৃতি বেশ ভালোভাবেই জানান দিচ্ছে বর্ষার আগমনী বার্তা। শুধু বর্ষাকাল নয়, আবহাওয়া বা ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের মনের যোগাযোগ অত্যন্ত নিবিড়। সাধারণ মানুষের মধ্যেও ঋতুর পরিবর্তন, তাপমাত্রা, বাতাস, সূর্য রশ্মি, বৃষ্টি কিংবা কুয়াশা, বাতাসের চাপ এবং দিনের দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে মন মেজাজের তারতম্য তৈরি হয়। বিজ্ঞানীরা এই রোগের নাম দিয়েছেন 'সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার' যা এক ধরণের বিষন্নতাজনিত রোগ। এই রোগ সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সময় দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শীতকালে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। শীতের দিন সূর্যরশ্মির প্রখরতা কমে যাওয়া এবং ক্রমাগত তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে মানুষের মনে এ ধরণের প্রভাব পড়ে বলে ধারণা করা হয়। তবে 'সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার' সাধারণত শীতে দেখা দিলেও অনেকের ক্ষেত্রে এটা গ্রীষ্মেও প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

গবেষণা

জার্মানির একদল গবেষক তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, আবহাওয়া মানুষের মানসিক অবস্থার উপর কতটা প্রভাব বিস্তার করছে। জার্মানির বার্লিনের হামবোল্ট ইউনিভার্সিটির জ্যাপ ডিনিসিন গবেষণাটি পরিচালনা করেন। ১ হাজার ২৩৩ জনের উপর পরিচালিত গবেষণাটির সবাই ছিলেন জার্মানির অধিবাসী। যাদের অধিকাংশই নারী। তাদের গড় বয়স ২৮। তাদের মধ্যে ১৩ থেকে ৬৮ বয়সের নারী পুরুষও ছিলেন। গবেষকরা তাদের গবেষণায় প্রচলিত জ্ঞানের বিপরীতে দেখতে পেয়েছেন যে দৈনিক তাপমাত্রা, সূর্য রশ্মি, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, বায়ু চাপ এবং দিনের দীর্ঘতার উপর মানুষের ইতিবাচক মনোভাবে কী ধরনের প্রভাব পড়ে। আর মনের ওপর ঋতুর এ প্রভাবকেই বলা হয় 'সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার'। ১৯৮৫ সালে এই রোগ সর্বপ্রথম জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়।

আর 'আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। বিশেষ করে সূর্যের আলো যেসব দেশে কম থাকে সেসব দেশে 'সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার' হয়। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে বিষণ্ণতা কম থাকে মন ভালো থাকে। সূর্যের আলো আমাদের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। সূর্যের আলো কম, মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে মন খারাপ থাকে।'

লক্ষণ

বর্তমান প্রজন্মের কমবেশি সবাই 'ভাল্লাগে না' রোগে আক্রান্ত। আজকাল সোশাল মিডিয়া খুললেই এই শব্দটির বেশ ব্যবহার দেখা যায়। তথাকথিত সেই 'ভাল্লাগে না' রোগটি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বেড়ে যায় বিশেষ বিশেষ মৌসুমে। দুর্বলতা, ক্লান্তি, বিষণ্ণতা, কান্নার প্রবণতা, বিরক্তিভাব, কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, দাম্পত্য জীবনে অনীহা, নিদ্রাহীনতা, কর্মক্ষমতা হ্রাস, অতিরিক্ত খাওয়া বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রভৃতি এই রোগের লক্ষণ। আবার গ্রীষ্মকালে অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, ওজন কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, অল্পতেই কেঁদে ফেলা এ ধরণের লক্ষণ দেখা যেতে পারে। পুরুষের চেয়ে নারীদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

কোন ঋতুতে বেশি হয়

'সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডারের' আরেক নাম 'উইন্টার ব্লুস'। ধারণা করা হয়, শীতকালের শুষ্কতার সঙ্গে এই রোগ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। অর্থাৎ শীতকালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। তবে অন্যান্য ঋতুতে যেমন বর্ষাকাল, বসন্তকাল অনেকসময় গ্রীষ্মকালেও এই রোগের লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

এই রোগের সঠিক কারণ সম্পর্কে জানা না গেলেও আমেরিকার সাইক্রিয়াটিক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, এটা ঋতু পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকতে পারে, শীতের সময়ে সূর্যালোকের সঙ্গে যোগাযোগ কম হওয়ার কারণে মস্তিষ্কে রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে মানুষ ঋতুজনিত বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়।

'শীতকালে কিছু কিছু মানসিক রোগের হার বেড়ে যায়। এটি বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া যায়। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য, আবেগের পরিবর্তনের সম্পর্ক আছে।'

প্রতিকার

অনেকে বিষণ্ণতা বা অবসন্নতাকে 'বড়লোকের ঘোড়ারোগ' বলে অবিহিত করে থাকেন। কিন্তু শরীরকে বশে রাখতে মনের ঘোড়াটাকেও যে নাগালে রাখতে হয়, সেটা ভুলে যান অনেকেই। ঋতুজনিত বিষণ্ণতার লক্ষণগুলোর সঙ্গে আপনার মানসিক অবস্থা মিলে গেলেও ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই। কিছুদিন সামলে চললে ঋতুর সঙ্গে বোঝাপড়াটা সহজ হয়ে যায়। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোয় হাঁটাহাঁটি, নিয়মিত ব্যায়াম, নিজেকে প্রিয় কাজে ব্যস্ত রাখা, বন্ধু সান্নিধ্য ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এই সমস্যা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে রোগটি বাড়তে থাকলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধও সেবন করতে হতে পারে। পাশাপাশি লাইটথেরাপি ও সাইকোথেরাপি নিতে হতে পারে। এসএডি-র কারণে কর্মোদ্যম কমে যাওয়া, পিছিয়ে পড়া এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়তে পারে। তাই একে অবহেলা করা উচিত নয়।

পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। আমাদের প্রতি মুহূর্তের আবহাওয়া, জল এবং জলবায়ু সম্পর্কিত সকল সমস্যা এবং জীবনে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব সম্পর্কে অবহিত করে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। প্রাকৃতিক ঘটনার উপর মানুষের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এই পৃথিবীতে বসবাসকারী কেউই কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে পারেনা। তবে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আবহাওয়াবিদরা। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তারা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং ভৌত পরিবেশ অধ্যয়ন করে সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে আগের থেকেই সতর্ক করে দেয় পৃথিবীবাসীদের।আর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের স্বাভাবিক নিয়মগুলো বদলে যাচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের খারাপ প্রভাব পড়ছে সর্বত্র। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে সোচ্চার হচ্ছেন পরিবেশবিদেরা। কিন্তু লাভের লাভ হচ্ছে না। চলছে প্রকৃতি ধ্বংসের কাজ। এর প্রভাবই পড়ছে নীল গ্রহের।

আবহাওয়ার কারণে মানুষের আচরণগত পরিবর্তন হচ্ছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে মানুষের ঘরে বসে থাকার প্রবণতা বেড়েছে এবং কায়িক শ্রমের প্রবণতা কমে গেছে। ফলে স্থূলতা বাড়ছে। স্থূলতার সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে। অসংক্রামক ব্যাধি যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের রোগের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। যত ধরনের রোগ অর্থাৎ সংক্রামক এবং অসংক্রামক কিংবা পুষ্টিগত ব্যাধি সবকিছুর মধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তন রয়েছে।জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে রোগ-জীবাণুর পরিবর্তন হচ্ছে, প্রকৃতি এবং পরিবেশ পরিবর্তনে আমাদের খাদ্য উপাদান এবং অভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে। সবকিছুর যোগফল স্বাস্থ্যগত ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর পৃথিবীব্যাপী এখন যে উন্নয়নকে পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে এমন যাবতীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিবেশ প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন করলে, তাতে হিতে বিপরীত হবে এবং মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়বে। এমন একটি অবস্থার মধ্যেই বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ৭৩ তম বিশ্ব আবহাওয়া দিবস।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test