E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

হোক গণসংবর্ধনা, ফুলে ফুলে ভরে যাক বিমানবন্দর

২০১৫ মার্চ ২০ ১০:৪৯:১৫
হোক গণসংবর্ধনা, ফুলে ফুলে ভরে যাক বিমানবন্দর

ড. শাখাওয়াৎ নয়ন : ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের প্রথম ত্রিশ ওভার পর্যন্ত খেলার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বাংলাদেশের হাতেই ছিল। এমন কি ৩৫ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ছিল ১৫৫ রান। ঠিক সেই সময়ে রুবেলের বলে রায়না ক্যাচ আউট হলে আম্পায়ার নো-বল কল করে তাকে বাঁচিয়ে দিলেন।

মাশরাফির বলে একটি পরিষ্কার এলবিডব্লিউ দেয়া হলো না। যেটা পরবর্তীতে রিপ্লেতে দেখানো হয়েছে।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা তখনই মোরালি ভেঙ্গে পড়ে, তারা বুঝে ফেলে খেলার ফলাফল কী হতে যাচ্ছে? ফিল্ডিং দেখেই তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময়ও অন্যায়ভাবে মাহমুদউল্লাহকে আউট দেয়া হয়েছে। সেটা আসলে ছক্কা, শিখর ধাওয়ানের পা সীমানা স্পর্শ করেছে। একটি ম্যাচে কোনো দলকে হারানোর জন্য আম্পায়ারদের কাছ থেকে আর কয়টি খারাপ সিদ্ধান্ত লাগে? একটিই যথেষ্ট, সেখানে তিন চারটি ভুল সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে দেয়া হয়েছে। সেই কারণে বলতে চাই, ভারতের কাছে আজ বাংলাদেশ হারেনি, আম্পায়াররা তথা আইসিসি বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছে।

এতো কিছুর পরেও বলবো-ওই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অর্জন খুব কম নয়। (১) বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে। (২) বাংলাদেশের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শীর্ষ পাঁচজন স্কোরারের মধ্যে একজন হিসেবে নিজেকে এবং দেশকে সম্মানিত করেছেন। (৩) বাংলাদেশের তরুণ বোলাররা বিশ্বের সকল ক্রিকেটবোদ্ধাদের নজর কেড়েছে। (৪) রুবেল- তাসকিনের বলকে পৃথিবীর যে কোনো মানের ব্যাটসম্যানরা সমীহ করে খেলেছে। (৫) সাকিব আল হাসানের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি পৃথিবীর এক নম্বর অলরাউন্ডার। পাশাপাশি সাব্বির, নাসির, মুসফিক দারুন খেলেছেন। (৬) মাশরাফি সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে দেশের জন্য নিজেকে শতভাগ উজাড় করে দিয়েছেন। ইনজুরির কারনে ছয়-সাতবার তার পায়ে অপারেশন হওয়ার পরও প্রচণ্ড দাপটের সাথে পৃথিবীর বিখ্যাত বিখ্যাত ব্যাটসম্যানদের শাসন করেছেন।

মোট কথা, বাংলাদেশের টাইগাররা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের মুখ দারুনভাবে উজ্জ্বল করেছেন। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে শুধু যদি ভারতীয় ক্রিকেট টিমের এগারো জন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে খেলতে হতো, তাহলে হয়তো খেলার ফলাফল অন্যরকম হতো কিংবা পরাজয়ের ব্যবধান এতোখানি হতো না। আমাদের খেলতে হয়েছে ভারতীয় এগারো জন এবং আইসিসির নিয়োগকৃত দুইজন মাঠের আম্পায়ার এবং একজন থার্ড আম্পায়ারের সাথেও।

একথা বললে অত্যুক্তি হবে না অথবা যারা আজকের খেলা দেখেছেন তারা আমার সাথে দ্বিমত করবেন না যে, আম্পায়ারদের যোগসাজসে বাংলাদেশের টাইগারদেরকে চক্রান্ত করে হারানো হয়েছে। ক্রিকেটে এতো দিন ম্যাচ ফিকচিংয়ের কথা শুনেছি, কিন্তু আম্পায়ার কেনা-বেচার কথা শুনিনি। আজ প্রথম তাও দেখা গেল। মাঠের আম্পায়ারকে ভুল সিদ্ধান্ত দিতে দেখেছি, কিন্তু কোনো দিন থার্ড আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত দিতে দেখেনি। আজ তাও দেখতে হলো।

আমাদের খেলোয়াড়রা ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। টাইগারদের মনোবল অটুট রাখার জন্য তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তারা বিশ্বকাপ জেতেনি তো কী হয়েছে? আমরা তো অতখানি আশাও করিনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সমগ্র দেশবাসীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি- ম্যাচ জেতেনি তবুও টাইগারদেরকে গণসংবর্ধনা দিন। ফুলে ফুলে ভরে যাক বিমানবন্দর, টিএসসি, মানিক মিয়া এভিনিউ, পল্টন ময়দান। লাল-সবুজের পতাকায় ছেয়ে যাবে পুরো বাংলাদেশ। পৃথিবী অবাক চোখে দেখবে, ট্রফি হাতে না নিয়েও কিভাবে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করা যায়। পৃথিবীকে জানিয়ে দিন, সেই দিন বেশি দূরে নয়, একদিন টাইগাররা বিশ্বকাপ নিয়েই আসবে।

লেখকঃ কথাসাহিত্যিক, একাডেমিক, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর

সূত্র/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

(ওএস/অ/মার্চ ২০, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test