E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভর্তি সংকট দূর হোক

২০১৫ জুন ১১ ১৮:৪৯:১৪
ভর্তি সংকট দূর হোক

মো. আতিকুর রহমান : রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতে অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক পরীক্ষার সম্প্রতি প্রকাশিত রেজাল্ট ও পাশের হার নিয়ে আমরা যতটুকু না ব্যথিত, তার চেয়ে এখন বেশি উদ্বিগ্ন ও শঙ্কা প্রকাশ করছি উর্ত্তীণ শিক্ষার্থীদের ভর্তি হবার সুযোগ এবং প্রচলিত ভর্তি পদ্ধতি নিয়ে।

বর্তমানে সদ্য পাশ করা লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে একটাই স্বপ্ন কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন, চাহিদার তুলনায় আমাদের দেশে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা খুব অপ্রতুল। ভর্তি প্রক্রিয়ার আবেদনে ডিজিটাল জালিয়াতিসহ সীমিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে আমরা কি পারবো আমাদের এইসব শিক্ষার্থীদের শতভাগ আশা পুরণ করতে? বর্তমান প্রকাশিত মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ি আটটি বোর্ডে শতকরা পাশের হার ৮৭.০৪% এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ এগার হাজার ৯০১ জন। কিন্তু পাসকৃত এইসব শিক্ষার্থীদের আশা আমরা কতটুকুই বা বাস্তবায়ন করতে পারবো।

বর্তমানে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি আসন সংখ্যা সীমিত এবং ভর্তি পদ্ধতি ও পরীক্ষার ক্রটির কারণে অনেক শিক্ষার্থী তার কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে হবে বঞ্চিত। যদি ভর্তি পরীক্ষার ক্রটি রোধ, ডিজিটাল জালিয়াতি বন্ধ, সম্মিলিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, বৈষম্যরোধসহ এই খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করে দেশে মানসম্মত কলেজের সংখ্যা আরো বাড়ানো সম্ভব হয়, তবে হয়তো বা আরো কিছু শিক্ষার্থী ভাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে । এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করি।

সকলের জন্য শিক্ষা বা দারিদ্র দূরীকরণে শিক্ষা এই শ্লোগান বাস্তবায়নে দেশে অতিদ্রুত মানসম্পন্ন অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ, গ্রাম ও শহরে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মানের বৈষম্যরোধ, ভৌত-অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা প্রদান, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর বৈষম্যরোধ, শিক্ষাবাণিজ্য বন্ধকরণ, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন কাঠামো সাধ্যের মধ্যে রাখতে শহর ও গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ, দেশ ও জাতির উন্নতি ও মঙ্গলের জন্য সার্বজনীন শিক্ষানীতি প্রণয়ন, কর্মমুখী শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন ও মানসম্মত করার ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি সকল শ্রেণী পেশার জনগণ এবং বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।

বর্তমানে আমাদের দেশের পাবলিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র ভর্তির আসন সংখ্যা খুবই সীমিত। আসন সংখ্যা সীমিত থাকার কারণে এবং একই শিক্ষার্থী কর্তৃক দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছর ভর্তির সুযোগ গ্রহণ এবং প্রাপ্য বিষয় অনুযায়ি এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাতিল করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ফলে উক্ত শিক্ষার্থীর পূর্বের ভর্তিকৃত বিষয়ের সিটটি খালি থাকা এবং পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে তা পূরণ না হওয়ায় অনেক ভালো শিক্ষার্থী ভাল ফলাফল করেও তারা আশানুরুপ বা প্রত্যাশিত ভালো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না। এক্ষেত্রে সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা গুলো একই প্রশ্নপত্রে সম্মিলিত পদ্ধতিতে গ্রহণ সমীচীন। এতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক ক্ষতি যেমন লাঘব হবে, অনুরূপ ভাবে কাঙ্ক্ষিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। সম্মিলিত পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় থেকেই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। বর্তমানে পদ্ধতিগত ভুলের কারণে এবং একই দিনে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী আশানুরূপ কলেজে ভর্তি সুযোগ থেকে হয় বঞ্চিত।

ফলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভর্তির আসন খালি থাকলেও এই সুযোগ গ্রহন থেকে হয় তারা বঞ্চিত এই বিষয়গুলো শুধু দু:খজনকই নয়, ঐসব শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে অন্তরায়ও বটে। ফলে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে একসময় মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একশ্রেণীর ভর্তি বাণিজ্য। এক্ষেত্রে অধিকাংশ কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ বা ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যরা ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি, আর্থিক অনিয়ম, প্রতিষ্ঠানে ক্রয় সংক্রান্ত সকল প্রকার কাজে নিজেদের পছন্দের লোকদেরকে অধিক অগ্রাধিকার ও স্বজনপ্রীতি করার মনোভাব নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসায়িক সক্ষমতা ধরে রাখতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক বজায়ে রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বজনপ্রীতি ও কমযোগ্য শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেওয়ায় অনেক সময় অধিক যোগ্য শিক্ষার্থী উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে হয় বঞ্চিত। আবার কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি করায় কর্ম ক্ষেত্রে বাড়ে বৈষম্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ও ট্রাষ্টি সদস্যদের নীতি বর্হিভূত এই ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকাটাই শ্রেয়। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গুণগত মানন্নোয়ন ও বৈষম্যরোধে সকল শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তাদের একদৃষ্টি সম্পন্ন মনোভাব আনায়ন এই ক্ষেত্রে জরুরী বলে মনে করি। শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার যথাযথ যোগ্যতার মাপকাঠিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে স্বজনপ্রীতি, দলীয় ও ব্যবসায়িক মনোভাব পরিহার করতে হবে। উল্লেখিত কারণগুলো প্রতিকার করতে না পারলে একজন ভাল শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনে উক্ত বিষয়গুলো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ভর্তি পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক দিক বিবেচনা করে সম্মিলিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজ নিজ নিয়ম অনুযায়ি ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যদিও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় অভিভাবকরা কিছুটা হলেও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে, কিন্তু বর্তমানে ভর্তি ফর্ম পূরণ ও পছন্দের কলেজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন লাইনে নানামুখী জটিলতা, ডিজিটাল জালিয়াতি ও নানামুখী ভোগান্তি শুরু হয়েছে তা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের কার্যকরি ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি যারা এই ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যা কাম্য নয়।

বর্তমানে দেখা যায় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য হাজার হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করে। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগই নানা কারণে ভর্তির সুযোগ থেকে হয় বঞ্চিত । মেধাবী তথা দারিদ্র্য শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করলেও অনেক সময় অর্থের অভাবে পাশাপাশি ভর্তি বাণিজ্যের কারণে ভর্তির সুযোগ থেকে হয় বঞ্চিত । শুধু তাই নয় অনেক সময় রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, স্বজনপ্রীতি, কোটা পদ্ধতি ইত্যাদি থাকার কারণেও অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভাল কলেজে ভর্তিরও সুযোগ হারায়। বর্তমানে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন গ্রহণ এবং লটারী পদ্ধতিতে ভর্তি প্রকৃয়া শুরু যা ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে ইতিবাচক, কিন্তু প্রকৃত মেধা যাচাই এ উক্ত পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করি। এই পর্যায়ে ভর্তি বাণিজ্য হয়তো থাকবে না, কিন্তু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যায়ল গুলোতে আসন সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সীমিত থাকায় এবং প্রকৃত মেধা যাচাই না হওয়া শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে হবে বঞ্চিত। ফলে ভর্তি বাণিজ্য কমলেও, শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ আগের মতো সীমিতই থাকবে।

দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অরাজক পরিস্থিতি, ভর্তি বাণিজ্য, আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। কিন্তু আশার আলো এই যে, বর্তমান সরকার অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি ও ভাল কলেজ গুলোতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বর্তমান সরকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার মানন্নোয়নের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি কৃষি, প্রযুক্তিগত, বাস্তব ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে কাজ করে যাচ্ছে, যা ইতিবাচক। সরকারকে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ ও দেশে কর্মবান্ধব প্রবৃদ্ধি অর্জনে দিকে অধিক দৃষ্টি দিতে হবে। এতে দেশে বেকারত্ব দূরীকরনের পাশাপাশি আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।

দেশ স্বাধীন হয়ে ৪৪ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের সস্তানদের শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারিনি। আমরা মনে করি, উন্নত ও মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষার মান বাড়াতে হবে, উন্নত শিক্ষা দান ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য শিক্ষকতা পেশার মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদন্নোতি ও শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে, গ্রন্থাগারকে আধুনিক তথ্যসমৃদ্ধ ও মানসম্মত করতে হবে, অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে, সরকারি -বেসরকারি পর্যায়ে অধিক মানসম্মত উন্নত শিক্ষাঙ্গন গড়ে তুলতে হবে, শিক্ষাবাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, সকলের জন্য শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে, শিক্ষাঙ্গন গুলোকে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও দলিয় চাপ থেকে মুক্ত করতে হবে, সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বেতন কাঠামো একই থাকতে হবে, প্রয়োজন অনুযায়ী ভর্তির আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, সকলের আর্থিক সমর্থের মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে, শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর মান উন্নয়ন করতে হবে, গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করতে হবে, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করতে হবে, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিজ স্বার্থে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সর্বোপরি সরকারি-বেসরকারি ভাবে সকলের সাধ্যের মধ্যে শিক্ষাদান ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় মনোভাব ও স্বজনপ্রীতি রোধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষা দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য, বাণিজ্যের জন্য নহে। এই নীতি অনুযায়ী শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। সরকার ও দেশের সকল সচেতন নাগরিককে এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। উক্ত কাজগুলি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরাতো বটেই, অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরাও ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে এবং ভাল ফলাফল করতে পারবে।

বর্তমান সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা গ্রহণ করেছে তা সত্যিই মানসম্মত ও উন্নত শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মাইলফলক। এই নীতিমালা প্রণয়নকারী ইউজিসি এবং শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদেরকে আমরা আন্তরিক অভিনন্দন জানাই । আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত মানসম্মত ও উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার, বিত্তবান, বিদ্যানুরাগী সকলে এগিয়ে আসতে হবে। এতে মেধা আরো বিকাশ হবে এবং দেশ ও জাতি হবে উন্নত। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে সত্য, তারপরেও দেশের শিক্ষাঙ্গন গুলোকে উন্নত ও মানসম্মত করতে পারলে এবং দলীয় নিয়োগ ও শিক্ষা বাণিজ্য বন্ধ করতে পারলে এই শিক্ষার মাধ্যমেই আমরা একটি সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।

বর্তমানে দেশে উচ্চ শিক্ষার বিপ্লব হতে যাচ্ছে এ কথা সত্য, তবে মানে অনেক ঘাটতি আছে। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান নিয়ন্ত্রণে অ্যাক্রোডিটেশন কাউন্সিল হচ্ছে এখন পরিচালনা পর্ষদ ও ট্র্যাষ্টিদের অনৈতিক কর্মকান্ড রোধ করতে পারলে মঙ্গল। এই ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে আরো অধিক কঠোর ও মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন হলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি পাবে। যদিও বর্তমানে এই খানে বাজেট বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে, এখন শিক্ষা বিভাগের দুর্নীতি বন্ধে কার্যকরী ভুমিকা পালন করতে হবে। দেশের সার্বিক মানোন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য যা অধিক জরুরী। এই কাজ বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তথা সংশ্লিষ্ট সুশীলসমাজ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষকসমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, নীতি-নিধারক, সমাজের সকলের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা কামনা করছি।

(এএস/জুন ১১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test