E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেখ হাসিনার সহযাত্রী বর্তমান প্রজন্ম

২০১৬ মার্চ ০১ ১৫:৫১:৪৮
শেখ হাসিনার সহযাত্রী বর্তমান প্রজন্ম

রফিকুল ইসলাম রাকিব : আমি নৈরাশ্যবাদী নই; আমি আশাবাদী মানুষ। যদি বলি স্বাধীনতা অর্জনের এতো বছর পরেও কিছুই পাইনি, তবে এ বলা হবে সম্পূর্ন মিথ্যে। অনেক কিছুই পেয়েছি। স্বাধীন ভূখন্ড পেয়েছি, লাল-সবুজ পতাকা পেয়েছি, আবার মা বলে প্রানভরে ডাকতে পারার অধিকার পেয়েছি। নিজের ভূমিতে নিজেই ফসল ফলাতে পারি। অধিকার বঞ্চিত হলে দরাজকন্ঠে রাজপথে স্লোগান তুলতে পারি। আরো অনেক কিছু পারি যা পরাধীন দেশে তা সম্ভব নয়।

গোলটেবিল বৈঠকে নয় আর কারো দয়ার বদৌলতেও নয়। লাখো প্রাণের বিনিময়ে ও লাখো নারীর সম্মানে লাল-সবুজের পতাকা উড়ে সার্বভৌম বাংলাতে, আমার বাংলাদেশের আকাশে...

স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব পেয়েছি বলেই আমার আকাশে লাল-সবুজ’র পতাকা উঠে। পৃথিবীর মানচিত্রে অংকিত হয়েছে নতুন রাষ্ট্রের সীমানা। পেয়েছি এ ভূখন্ডকে নিজের মতো করে সাজাবার স্বাধীনতা। পেয়েছি বুলির স্বাধীনতা। পেটে দানা-পানি থাকুক বা না থাকুক, বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠি সর্বাধিকারে। মুক্ত কন্ঠে বলে উঠি- এ আমার দেশ, এ আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এটাইতো সবচেয়ে বড় অর্জন। অনেক চড়া মূল্যে এ বিজয়কে অর্জন করতে হয়েছে। তাই আমাদের প্রাপ্তির অংকটা বেশ বড়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও দেশ গণতান্ত্রিক ধারায় উন্নতির পথে চলমান রয়েছে।

কিন্তু এদেশের নিন্দুকেরা তা সহ্য করতে পারছে না। তারা কখনোই সেটা সহ্য করতে পারে নি, তার প্রমাণ তো আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। তারা তখন এ দেশবিরোধী কাজে লিপ্ত ছিল, মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও করেছিল, নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছিল এবং এই বাংলাকে পুনরায় পাকিস্তানে পরিণত করতে চেয়েছিল। আর তারাই বঙ্গবন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার মাধ্যমে এদেশের ক্ষমতায় বসেছিল, এদেশের মানুষদের শাসন করেছিল।

আজ ঔই যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগী ও পরবর্তী প্রজন্মরাই দেশবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। ভুল তথ্য উপস্থাপন করে দেশের সাধারণ মানুষদের পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই স্বাধীনতাবিরোধীরা বর্তমান সরকারকে অগণতান্ত্রিক সরকার বলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার সর্বোচ্চ চেষ্টায় ব্যস্ত। তারা তাদের পূর্ব পুরুষদের মতো জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা করেছে বিগত সময়ে। ইসলামের দোহাই দিয়ে এদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাচ্ছে। এ দেশের মেধাবী সন্তানদের একের পর এক হত্যা করার মাধ্যমে দেশকে পঙ্গু করতে চাচ্ছে।

কিন্তু সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে, সব বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ নতুন প্রজন্মদের নিয়ে উন্নতির পথে অগ্রসর। পাকিস্তান ও তাঁদের দোসরদের সর্বদিক দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে বর্তমান প্রজন্ম। যুদ্ধাপরাধীদের একের পর এক ফাঁসির রায় কার্যকর যেন দেশকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য নতুন প্রজন্মের সংগ্রামের একেকটি স্লোগান। বর্তমান প্রজন্ম আজ প্রযুক্তির ছোঁয়াতে তাদের জীবনকে আরো উন্নত করার প্রচেষ্টায় এবং দেশকে বিশ্বের সামনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ থেমে নেই, পাল্লা দিচ্ছে সময়ের সাথে।

নিন্দুকের মনগড়া কথায় এখন বর্তমান প্রজন্ম আর হোঁচট খায় না। তারা এখন সর্বোচ্চ সচেতনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে দেশকে কিভাবে বিশ্বের সামনে আরো প্রজ্জ্বলিত করবে সেটা নিয়েই ব্যস্ত।

রাজাকার, মানবতাবিরোধী, একাত্তরের হত্যাকারী, দেশবিরোধী এবং তাঁদের প্রজন্মদের মন ভোলানো কথায় এ প্রজন্ম আর সে পথে ধাবিত হয় না। এ প্রজন্ম তাদের পূর্বপুরুষদের স্বাধীনতা সংগ্রাম, দেশ, মা-মাটি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞাত।

দেশ এখন তথ্য প্রযুক্তির ধারায় চলছে, এককথায় ডিজিটাল দেশ আমাদের। মানবতারিবোধীরা চাইলেও এদেশকে ১৯৭১ বা ২০০১ সালের মতো ধ্বংসযজ্ঞের সাম্রাজ্য বানাতে পারবে না। এ প্রজন্ম তা কখনোই হতে দিবে না। যেখানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অন্যান্য দেশের জন্য শিক্ষণীয়, সেখানে রাজাকার ও তাঁদের প্রজন্মরা কিভাবে পুরনো সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে আনবে!

শুধু এ প্রজন্ম নয়, এদেশের সাধারণ মানুষ আজ রাজাকার ও তাদের সহযোগীদের প্রতি মুহূর্তে ধিক্কার জানায়। তাইতো তাদের মতো ঘৃণ্য রাজাকার ও অপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা মিষ্টি বিতরণ করে এবং জয়বাংলা স্লোগান তোলে। তখন তাদের মতো আমারও আনন্দে মন ভরে যায়। তাদের বিচার, এটাও বাঙালি জাতির জন্য অনেক বড় পাওয়া।

এ প্রজন্ম প্রত্যেকটি সময়ে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এদেশের সেই সাহসী সন্তান, বীরমুক্তিযোদ্ধাদের। তাঁদের বীরত্বগাঁথা ও সাহসী চেতনাকে বুকে ধারণ করেই এ দেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সাহসী চিত্তে জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকবে বর্তমান প্রজন্ম।

লেখক : প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, বোয়াফ

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test