E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নববর্ষে খালেদার সামনেই জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা!

২০১৬ এপ্রিল ১৫ ১৪:২১:৫২
নববর্ষে খালেদার সামনেই জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা!

মাঈনুল ইসলাম নাসিম


পহেলা বৈশাখ তথা ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দেশে-বিদেশে যখন বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়া হচ্ছিল মনের মাধুরী মিশিয়ে, তখন বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকাতেই ঘটে গেল দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাজনক আরেকটি ঘটনা।

প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেত্রী এবং তিন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে চরম ন্যাক্কারজনকভাবে অবমাননা করা হলো ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ জাতীয় সঙ্গীতকে।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, বেগম জিয়ার সম্মানে অথবা তার ক্যমেরা কাভারাজের সুবিধার্থে একদল নারীকে জাতীয় সঙ্গীত চলাকালে মাটিতে বসে থাকতে বাধ্য করা হয় এদিন। রাজপথে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই দিনে-দুপুরে রচিত হয়েছে এই স্ক্যান্ডাল।

অনলাইনে ভাইরাল হওয়া জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার ভিডিওটি যারা দেখেছেন তারা এই অপকর্মের জন্য বিএনপির বয়োঃবৃদ্ধ নেতা মওদুদ আহমেদের বেকুবিপনা এবং অতিবুদ্ধিসুলভ চাটুকারিতায় ভরপুর মনোভাবকে দায়ী করেছেন। কারণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য নেতারা যখন দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করছিলেন, সামনে বসে থাকা নারীরাও একই সময় দাঁড়াবার প্রস্তুতি নিতে শুরু করলে সবাইকে অবাক করে দিয়ে মওদুদ আহমেদ ধমক দিয়ে তাদেরকে বসে থাকার নির্দেশ দেন। জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদার চাইতে ক্যামেরা কাভারেজকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে কিংবা ম্যাডামের বাড়তি সুনজরের আশায় তিনি এমনটা করেছেন বলে অভিযোগ।

বর্ষবরণে বিগত দিনে এই ঢাকাতেই নারীর শ্লীলতাহানির দায় সরকারকে নিতে হয়েছে। এবার সেরকম কিছু না হলেও জাতীয় সঙ্গীতের চরম মর্যাদাহানি যেভাবে ঘটেছে বা ঘটানো হয়েছে নয়াপল্টনে বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ের সামনে জাসাস আয়োজিত বৈশাখী অনুষ্ঠানে, এর দায় কোনভাবেই এড়াতে পারেন না চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কারণ তিনি চাইলেই পারতেন মওদুদকে ওয়ান-টু’র মধ্যে স্লোয়ার কাটারে বোল্ডআউট করে থামাতে এবং ‘শো-পিস’ হিসেবে বসে থাকা মা-বোনদের এই মর্মে নির্দেশ দিতে পারতেন যে, ‘এই তোমরা বসে আছো কেন? জাতীয় সঙ্গীত বাজলে দাঁড়িয়ে সম্মান করতে হয় এটা তো স্কুলে শেখার কথা।’

কিন্তু না, বেগম জিয়া কাজে লাগাননি তার উপস্থিত বুদ্ধি। অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরেই সভা-সমাবেশে তার দেয়া পজিটিভ বক্তব্যের ধারাবাহিকতা এদিন বৈশাখীর অনুষ্ঠানেও পরিলিক্ষিত হয় ইতিবাচকভাবে।

বাংলা নববর্ষে সুন্দর একটি আয়োজন যেখানে এক গামলা দুধের চাইতে স্বচ্ছ হওয়ার কথা, সেখানে একফোঁটা চেনা ঠেকাতে পারেননি সেখানে উপস্থিত মঈন খানের মতো মাথাওয়ালাও। মহাসচিব মির্জা ফখরুল অবশ্য লজ্জায় মুখ লুকাচ্ছিলেন। জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা রক্ষা যেহেতু বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব, তাই বাংলা বছরের প্রথম দিনে নয়াপল্টনে ঘটে যাওয়া এই অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য বেগম খালেদা জিয়াসহ জাসাস ও বিএনপিকে অবশ্যই দেশ ও জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় দেশে-বিদেশে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে ন্যাক্কারজনক মেসেজ যাবে অনাগতকাল ধরে।



(ওএস/অ/এপ্রিল ১৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test