E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রবাসে আওয়ামীলীগের নামে অনিয়ম আজ নিয়মে পরিণত

২০১৬ মে ১১ ১২:৩৮:০০
প্রবাসে আওয়ামীলীগের নামে অনিয়ম আজ নিয়মে পরিণত

আরিফ মাহবুব


সময়ের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমি যেমন পাল্টে যাচ্ছে ঠিক তেমনি পাল্টে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শমুখী কর্মকাণ্ড ও তার গতিধারা। রাজনৈতিক দলগুলো এখন আদর্শের রাজনীতির মাঠ থেকে সরে এসে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি তথা আদর্শ বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরছে। 

আওয়ামীলীগ দলের মাঝেও এর ব্যতিক্রম কোনকিছুই না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অন্তরে লালন করার মানেই আওয়ামীলীগর আদর্শকে মেনে নিতে হবে এমন কথা নাও হতে পারে যদিবা সেখানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের চর্চা না থাকে। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অন্তরে লালন করলেও বর্তমান হাইব্রিড আওয়ামীলীগাররা আপনাকে জামাতি ট্যাগ লাগিয়ে দিলে অবাক হবার কিছু নেই। আপনি যে আওয়ামীলীগ চাইছেন সেটা দুরে অন্য কোন গ্রহে অবস্থান করছে।

বঙ্গদেশের বাঙালী সমাজের রাজনৈতিক চরিত্র পাল্টে যাচ্ছে, পাল্টে যাচ্ছে সমগ্র বিশ্বে বাঙ্গালীদের রাজনৈতিক পরিবেশ। শুরু হয়েছে অপরাজনীতির চর্চা। আওয়ামীলীগের রাজনীতিতেই এই অপরাজনীতির চর্চাটা বিকটভাবে পরিলক্ষিত হয় কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে দল ক্ষমতায় থাকে ঠিক সেই দলের ভেতরেই এই অপরাজনীতির চর্চাটা বেশী থাকে। প্রবাসে বাংলাদেশের রাজনীতির নামে বিভিন্ন দেশে গজে ওঠা সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের সুনাম আজ মাটিতে মিশে যাবার উপক্রম হয়েছে। সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চিত্রটা আজ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগে নামে প্রবাসে রাজনীতির নামে যে সব অপকর্ম ঘটে যাচ্ছে তাতে দলের হর্তাকর্তাদের নীরবতা সমগ্র বিশ্বের দরবারে একটি বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

এইসব অরাজনৈতিক চর্চাকে বিভিন্ন সুবিধাবাদীরা খুবই কৌশলে সমর্থন দিয়ে দুর্নীতিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। গত ৭ই মে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত হয়েছে। সম্মেলন স্থলে পুলিশ এসে ফ্রান্স ও ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বের করে দিয়েছে। ইন্টারনেট জুড়ে ঐ ঘটনার বীভৎসতার ভিডিওটি দেখলে প্রবাসে বাঙ্গালীদের মহালজ্জায় হেট হয়ে যায়।

সুইডেনে গত ১৩ই মার্চ একইরকম ঘটনার ভিডিও চিত্র দেখলেই বোঝা যাবে প্রবাসে রাজনীতির নামে কি ধরনের অপরাজনীতির চর্চা চলছে। সব ঘটনাকেই সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘটে। একই চিত্র আজ ডেনমার্কে, হল্যান্ডে, জার্মানিতেও ঘটে যাচ্ছে । তথা সমগ্র ইউরোপে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির নামে এক তান্ডব শুরু হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নীরবতা আজ প্রবাসে বাংলাদেশীদের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। সুযোগ বুঝে প্রবাসে নেতা নামধারী ব্যক্তিবর্গরা এইসব ঘটনাকে বিএনপি জামায়াতের অপকর্ম আখ্যায়িত করে নিজেদের অপকর্মকে ঢাকার চেষ্টা করছে।

প্রশ্ন দাড়ায়, আদৌ কি বাংলাদেশের লেজুড় ভিত্তিক রাজনীতির নামে প্রবাসে বাংলাদেশের সুনামকে ভূলুণ্ঠিত করার দায় দায়িত্ব থেকে নিজেদের আড়াল করা যায় ? প্রশ্ন আসে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগের সভাপতি শ্রী অনিল বাবু ও সাধারণ সম্পাদক জনাব এম আনোয়ার গনি নামে দুই নেতা নামধারীরা সমগ্র ইউরোপে রাজনীতির নামে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, সাংগঠনিক ভাবে তাদের এই কর্মকাণ্ডকে কে বা কারা বৈধতা দিয়েছে ?

এখানে দোষী ব্যক্তিদের দলীয় নিয়মে রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দিতে না পারলে এইসব অপরাজনীতির চর্চা কোনদিনই বন্ধ হবে না, দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রবাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কোন শাখা সংগঠন থাকার কথা লেখা নাই কিন্তু তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগ কি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অনুমোদিত বা সহযোগী কোন সংগঠন ? যদি তাই না হয় তবে প্রবাসে বঙ্গবন্ধু প্রেমিকদের আশা, এইসব এই সমস্যায় অপরাধীদের দল থেকে বহিষ্কার করে দলের ভাবমূর্তিকে ফিয়ে আনতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

(ওএস/অ/মে ১১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test