E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

জঙ্গিবাদে তরুণদের ব্যবহার রুখতে হবে

২০১৬ জুন ১৭ ১২:৩৩:৫৫
জঙ্গিবাদে তরুণদের ব্যবহার রুখতে হবে


 মো. মিঠুন মিয়া : দেশে চলমান জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় জড়িত এবং সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে তরুণরাও। স্বীকারোক্তি মোতাবেক জানা যায়, জঙ্গিবাদের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে তরুণদের। তরুণদের বিশেষ মতাদার্শে বিশ্বাসী করে তুলে তাদেরকে অপকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

কিন্তু যে তরুণদের সঠিক পথে ধাবমান হওয়ার কথা ছিল তারা কিনা আজ বিপথগামী। নানা দিকে থেকে বর্তমানে তরুণ্যের শক্তির যথেষ্ট অপব্যবহার হচ্ছে। তবে এটি কোনো সমাজ ব্যবস্থার জন্য শুভকর নয়। তারুণদের সঠিক পথে ফেরাতে না পারলে আমাদের অনেক অর্জনই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
সম্প্রতি শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য সুমন হোসেন পাটোয়ারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২০ বছর। চোখেমুখে তরুণ্যেও দীপ্ত ছাপ। তাকে গ্রেফতারের পর এই জঙ্গি সংগঠনটি সম্পর্কে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছর রাজধানীর লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর কার্যালয়ে ঢুকে টুটুলকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় বুধবার রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয় সুমনকে। আনসারুল্লাহ সদস্য এই তরুণ সিহাব, সাকিব, সাইফুল নামেও পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এতে বোঝা যায় কাজ সম্পন্ন করার জন্য তরুণদের চৌকস করে তোলা হচ্ছে।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর বিকালে শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হামলার সময়ই শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে খুন করা হয়েছিল প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে। দুটি হত্যাকা-েই আনসারুল্লাহ সদস্যরা জড়িত বলে গোয়েন্দারা সন্দেহ করে আসছিলেন। গত দেড় বছরে দীপন ও টুটুলের উপর হামলার আগে শাহবাগে হত্যা করা হয় লেখক অভিজিৎ রায়কে। লেখালেখির জন্য হুমকির মুখে থাকা প্রবাসী অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ছিলেন টুটুল ও দীপন উভয়ই। অভিজিতের পর বেশ কয়েকজন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট খুন হন। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্ত হন বিদেশি, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান যাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষু, শিয়া ও আহমদিয়া মুসলিম। সর্বশেষ একই কায়দায় চট্টগ্রামে খুন হন পুলিশপতœী মাহমুদা আক্তার মিতু। এই সব হত্যাকা-ে মাঠ পর্যায়ের ব্যবহার করা হচ্ছে তরুণদের।
দুই প্রকাশকের উপর হামলার আগে সুমনসহ কয়েকজনকে মহাখালীর একটি বাসায় ‘মোটিভেশনাল ট্রেইনিং’ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। সুমন প্রায় দেড় বছর ধরে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে জড়িত। তার নেতারা তাকে ফোন করে বলেছিল, তোমাকে একটি ‘বড় কাজ’ করতে ঢাকায় আসতে হবে। সুমন রাজি হলে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানান, “সাধারণত তারা কিলিং মিশনে পাঁচজন করে অংশ নেয়। কখনও তারা চারজন ও তিনজনও অপারেশন করে থাকে। ওয়াশিকুর (অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু) হত্যার সময় সেখানে তিনজন সরাসরি অংশ নিয়েছিল। যারা সরাসরি হত্যায় অংশ নেয়, তাদের কাজটি সঠিকভাবে শেষ হয়েছে কি না, তা কখনও কখনও আরেকটি দল সমন্বয় করে থাকে।” ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকা-ে দ-িত হয়ে কারাবন্দি মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানী আনসারুল্লার মূল নেতা হলেও তাদের আরও নেতা রয়েছেন বলেও জানান পুলিশ।
জঙ্গিরা হত্যার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই চাপাতির মতো ধারাল অস্ত্র ব্যবহার করে আসছে। টুটুলের উপর হামলার সময় তাকে চাপাতির তিনটি আঘাত সুমন করেছিলেন বলে গোয়েন্দা পুলিশ জানান। টুটুলকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে (সুমন) স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে বলেছে, টুটুলকে সে নিজে তিনবার কোপ দিয়েছিল। ওই ঘটনায় তারা অংশ নিয়েছিল পাঁচজন; ব্যবহার করেছিল চাপাতি। পরে পাশের একটি মসজিদে ঢুকে সেই রক্তাক্ত চাপাতি ধোয়ার কথাও সুমন বলেছে।
লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে টুটুলের উপরের হামলার সময় সেখানে তার সঙ্গে থাকা ব্লগার তারেক রহিম ও রণদীপম বসুকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। সেদিন আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যরা দুই জায়গায় দুজন প্রকাশককে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। একটিতে তারা সফল হতে পারেনি। ওই দলেই ছিলেন সুমন। সুমনের দলের সমন্বয়কারী ছিলেন শরীফ। দীপনকে হত্যাকারী দলের সমন্বয়ক ছিলেন সেলিম। তারা আনসাররুল্লাহ বাংলা টিমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। তার কয়েক মাস আগে তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যার পরিকল্পনারও শরীফ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। টুটুলের উপর হামলার পর সুমন চট্টগ্রামে গিয়ে একটি ওষুধের দোকানের বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছিলেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, সুমনের বাড়ি চাঁদপুরে হলেও তিনি বড় হয়েছেন চট্টগ্রামের হালিশহরে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন তিনি। গত ১৯ ফ্রেব্রুয়ারি রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল ও মোহাম্মদপুরে দুটি ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালানোর পর তার সূত্র ধরে সুমনকে গ্রেফতারের পথ তৈরি হয়। আনসারুল্লাহর ‘সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ ও ‘বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে ব্যবহৃত ওই দুই আস্তানা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে ঢাকার আশকোনা ও দক্ষিণখানে এবং চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও সাতজনকে। সুমনের কাছ থেকে কোনো অস্ত্র পাওয়া না গেলেও আস্তানা দুটি থেকে অন্তত আটটি চাপাতি উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা।
আগের হত্যাকা-ের মতো সম্প্রতি হামলা হয়েছিল মাদারীপুরের সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজে গণিতের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীর উপর। সে হামলার মূল হোতা ফাহিমহে গ্রেফতার করা হয়। তবে ঢাকার উত্তরার দক্ষিণখানে ফাহিমের বাড়ির প্রতিবেশীও শিক্ষকরা বলছেন, নিভৃতচারী নামাজি এইতরুণ যে উগ্রপন্থায় জড়িয়ে পড়তে পারেন, তাকে দেখে তা তাদের মাথায় কখনও আসেনি। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফাহিম গত ১১ জুন সকালের পর থেকে নিখোঁজ বলে দক্ষিণখান থানায় তার বাবা গোলামফারুকের করা এক সাধারণ ডায়েরি থেকে জানা যায়। দক্ষিণখান থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ ওই জিডি উদ্ধৃত করে বলেন, “ফাহিম তার বাবার মোবাইল ফোনে এসএমএস করে বলেছিল- বিদেশ চলে গেলাম, এছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে। কাজেই সুস্পষ্ট যে একটি পক্ষ দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই সব তরুণদের মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। তরুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা নিজ স্বার্থ উদ্ধারে সচেষ্ট। তাদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। হাইলি মোটিভেটেড এই যুবকদের সঠিক পথে ফেরানোও কঠিন হয়ে পড়ছে।
তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর একুশ শতাব্দির সমাজ ব্যবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে শিক্ষার হার এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। পাল্টে যাচ্ছে জীবনযাত্রার সার্বিক চিত্র। কিন্তু সমাজে নানা অপশক্তি যেন পিছু ছাড়ছে না। মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে অশুভ প্রয়াস এবং অপশক্তি। এর এগুলো বারবার আমাদের তরুণদের পিছু টানছে। আমাদের সোনার মানুষ তরুণরা। কিন্তু সোনার মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে চাপাতিসহ ধারারো অস্ত্র, দেয়া হচ্ছে অপশিক্ষা। আর তারই ফলস্বরূপ ঘটছে একর পর এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তরুণদের দেশে পরিণত হয়েছে। কাজেই যেভাবেই হোক এই তরুণদের সঠিক পথে আনতেই হবে।
তরুণরা গড়বে নতুন দেশ, ডিজিটাল হবে বাংলাদেশ’। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিসংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের অগ্রগতির সকল ক্ষেত্রে তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও দেশের যে কোনো সংকটকালীন মুহুর্তে তরুণরাই হাল ধরেছে। সমাধানের পথ রচনা করেছে। তরুণদের হাত ধরেই ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে তরুণদের হাত ধরে বাংলাদেশ নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের জন্য যুব সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং তাদেরকে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ইতিহাস বর্ণনা করে তরুণদের সাফল্যেও কথা। বর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিন্তু তারাই হচ্ছে এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা। যুবকরা অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। কিন্তু তার বিপরীতে তরুণদেরকেই অপকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে বাঙালি তরুণরা তাদের মেধার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা উদ্ভাবন করছেন নিত্যনতুন আবিষ্কার। তাদের এই সব আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে সুনাম এবং পরিচিতি অর্জন করছে। বাঙালি এই তরুণরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। ‘ইটা কারিনে’র মতো নক্ষত্র ব্যবস্থা আবিষ্কার করে জ্যোতির্বিদ্যার জগতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন নাসার তরুণ বাংলাদেশী গবেষক ড. রুবাব খান (২৯)। জাপানের একটি বিজ্ঞানী গ্রুপের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশী তরুণ গবেষক ড. মুহাম্মদ শাহজাহান কুতুবী কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হিরোশি কিতাগাওয়া এবং ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কাত্সুতিশ নাগাওকা’র তত্তাবাধনে অপর দু’ সহযোগি গবেষক ড. কাত্সুতিশ সাতো ও ড. কোহেই কুসাদা’র সঙ্গে গবেষণা করে নতুন রাসায়নিক অণুঘটক প্যালডিয়াম-রুথেনিয়াম ধাতুদ্বয়ের সঙ্কর ন্যানুকণা আবিস্কার করেছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ওষুধবিদ্যার অন্যতম মৌলিক বই হিসেবে পঠিত ডেভিডসন’স প্রিন্সিপলস এন্ড প্রাকটিস অব মেডিসিন গ্রন্থের কিছু অংশে ভুল শনাক্ত করেছেন বাংলাদেশি চিকিৎসক ও শিক্ষক ডা. মোঃ আজিজুর রহমান। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ী দ্বিতীয় বাংলাদেশী নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন সাত পর্বত শৃঙ্গ জয় করেন। নিশাত মজুমদারও তার সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখেন। বাংলাদেশী তারুণ্যের মুখ উজ্জ্বল করতে নাফিস বিন জাফরের অবদান সর্বাধিক। রাজবাড়ীর ছেলে তথা বাংলাদেশী নাফিস দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার জয় করার গৌরব অর্জন করে। অন্যদিকে ভরহীন কণা’ আবিষ্কারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশী পদার্থবিদ মোহাম্মদ জাহিদ হাসান এক অসামান্য সাফল্যগাথা রচনা করেছেন। আগামীর প্রজন্মের নিরাপত্তার জন্যই সবুজ ঢাকা নিয়ে ভাবছেন উদ্ভাবক আ ফ ম. জামাল উদ্দিন। বাংলাদেশী ক্রিকেট অঙ্গন আর তরুণ ক্রিকেটার এখন বিশ্বের অন্য সব ক্রিকেটপ্রেমী মানুষদের কাছে পরিচিত নাম। বাংলাদেশী টাইগারা জয় করেছে সুনাম ও অর্জন। বিশ্বের এখন সব ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে সাকিব, মাশরাফি, মুস্তাফিজ, তামিম, রুবেল কিংবা তাসকিন জনপ্রিয় ক্রেজের নাম! ক্রিকেট শাসনকারীদের ডিঙিয়ে সাকিব যেখানে সেরা অল-রাউন্ডার, সেখানে অন্যদিকে দুর্ধষ আর কনিষ্ঠ ক্রিকেটার মুস্তাফিজকে নিয়ে চলছে টানাটানি আর আলোচনা! বাংলার দামাল ছেলেদের ক্রিকেট জাদুর কাছে অল্প সময়ের মধ্যেই ক্রিকেট বিশ্ব যেন দিশেহারা হয়ে পড়েছে! দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের (এসএ গেমস) এবারের আসরে বাংলাদেশকে প্রথম সোনার পদক এনে দিয়েছেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। মেয়েদের ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে শ্রীলঙ্কা ও নেপালের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সোনার পদক জেতেন এই ভারোত্তোলক। এসএ গেমসে সোনা জিতে রাতারাতি তারকা বনে গেছেন মাহাফুজা আক্তার শিলা। সত্যিই এমন সাফল্যে অংশীদার হতে পেরে বাঙালী আজ গর্বিত। এমন সাফল্যের গল্প শেষ হওয়ার নয়। বাংলাদেশের তারুণ্য বিগত সময়ে বাংলার মুখ যেভাবে বিশ্ব দরবারে আলোকিত করেছিল, ভবিষ্যতেও একইভাবে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
আমাদের এই তরুণরা কিভাবে বেড়ে উঠছে, সেদিকে সুনজর প্রদান করতে হবে। কেননা তারা সুস্থ স্বাভাবিক এবং যথাযথ মানবিক মূল্যবোধ বিকাশের সাথে বেড়ে উঠলে মানবশক্তিতে পরিণত হবে। কিন্তু দেশের এই তরুণরা নানা সমস্যার সম্মুখীন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। যথাযথ জ্ঞান চর্চা এবং জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য দেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে কেউ যাতে কুশিক্ষা অর্জন করতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সাংস্কৃতিক কর্মকা- পরিচালিত করতে হবে। কেননা সংস্কৃতির চর্চা মানুষকে সকল কুবৃত্তি থেকে বিরত রাখে। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকা- জোরদার করতে হবে। তাদের সুকুমারবৃত্তির বিকাশের জন্য যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অপশক্তি যাতে আমাদের তরুণ সম্প্রদায়কে স্পর্শ করতে না পারে, সেজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন সকলের সচেতনতা। সেই সাথে তাদের মানবিক বিকাশও গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবেই হোক তরুণ্যের শক্তির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতেই হবে। তবেই আমাদের সঠিক উন্নয়ন সম্ভবপর। তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। তারুণ্যের হাতেই আশার মশাল, তারুণ্যের হাতেই স্বপ্নলোকের চাবি। বর্তমানে যুবদের সুবাদে দেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রত্যেক যুবকের প্রতি নজরদারি রাখতে হবে, তারা যেন জঙ্গিবাদের খপ্পরে না পড়ে।

প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়











(এমডি/বিএইচ১৭জুন২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test