E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে শীতকালীন সবজি চাষে ধুম

২০১৭ ডিসেম্বর ০৪ ১৭:০৬:৫১
ঈশ্বরদীতে শীতকালীন সবজি চাষে ধুম

স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা) : ঈশ্বরদীতে কৃষকদের মাঝে শীতকালীন শাকসবজি চাষের ধুম পড়েছে। আগাম শাক-সবজি বাজারে তুলতে পারলে বেশী টাকা লাভ হবে-এই প্রত্যাশায় কৃষকেরা সবজি চাষে এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে দু’দিনের হালকা বৃষ্টির পর ক্ষেত সবজি বপনের জন্য উপযোগী হয়ে উঠেছে। তাই কৃষকেরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে শাকসবজি ও ফলমূল চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে ঈশ্বরদী পরিচিত। কৃষি চাষে সফলতায় এখান থেকে অনেক কৃষকই রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছেন। এখানে ব্যাপকভাবে গাজড়, শিম, ঢ্যাড়স, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, ধনেপাতা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, পালংশাক, পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের চাষ হয়। এছাড়াও এখানে দেশসেরা লিচু, পেয়ারা, কুল ও কাঁঠালের ব্যাপক আবাদ রয়েছে। চলতি বছর ঈশ্বরদীর সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বেসরকারিভাবে লক্ষ্যমাত্রা আরো বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঈশ্বরদীর ছলিমপুর, মুলাডুলি, লক্ষ্মীকুন্ডা, সাহাপুর ও পাকশী ইউনিয়নে এসব শাকসবজির আবাদ সবচেয়ে বেশি।

গত শুক্রবার সকালে কয়েকটি গ্রামে সবজির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা সবজির চারা তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ ক্ষেতে সবজির চারা লাগাচ্ছেন। কেউ নিড়ানি দিয়ে আগাছামুক্ত করছেন। এ সময় কথা হয় ছলিমপুরের কৃষক সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি ওই ইউনিয়নের বক্তারপুরে সবজির ক্ষেত পরিচর্যা করছিলেন। তিনি জানান, তাঁর মোট ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। এরমধ্যে নিজের ৫০ বিঘা। বাকী জমি তিনি ভাড়া বা বাৎসরিক লীজ নিয়েছেন। এবার তিনি বক্তারপুর ও মুলাডুলির আড়কান্দিতে ২৩ বিঘা জমিতে টমেটো, পেঁয়াজ, ঢ্যাড়স, বেগুন, লাউ, শিম, পুইশাক, মুলাসহ শীতের সবজি চাষ করেছেন। আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে ছিল। দুদিন বৃষ্টির পর রোদ উঠায় খেত শীতকালীন শাকসবজি চাষের উপযোগি হয়ে উঠে।

মুলাডুলি ইউনিয়নের স্টেশনপাড়ার কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, মুলাডুলির পুরো ইউনিয়ন শিম চাষের জন্য বিখ্যাত। আগাম জাতের শিম বাজারে উঠার পর পরই আবার নতুন করে শীতকালীন সবজি হিসেবে তিনি এক বিঘা জমিতে দেশি শিমের চাষ করেছেন। এখানকার শিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মৌসুমের শুরুতে শিম উঠলে দামও বেশি পাওয়া যায়। দাশুড়িয়া ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের কৃষক আকমল হোসেন জানান, এর আগে কয়েকদফা বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজির বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। রোদ উঠায় আবারো তিনি তিনবিঘা জমিতে শীতকালীন শাকসবজি লাগিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে শীত মৌসুমের শুরতেই শাকসবজি বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রওশন জামাল জানান, ঈশ্বরদীর চাষিদের বিশেষ নজর থাকে শীতকালীন সবজির দিকে। তাছাড়া বছরজুড়ে ঈশ্বরদীতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সবজি, ফলমুল ও ফসলের আবাদ হয়। বিশেষ করে শীতকালীন সবজি চাষে কে কত ভালো করতে পারে এরকম অদৃশ্য একটা প্রতিযোগিতা চলে। ঈশ্বরদী এখন শীতকালীন সবজি চাষের জন্য দেশের অন্যতম প্রধান উপজেলা। কৃষকেরা কোনোভাবেই মাঠের জমি অনাবাদি রাখতে চান না। আবহাওয়া অনুকূুলে থাকলে এবছর ঈশ্বরদীতে এবারে রেকর্ড পরিমাণ শীতকালীন সবজি আবাদ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test