E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধু-ধু বালুচরে লাল টমেটোর ঢেউ

২০১৮ মার্চ ১১ ১৭:৪০:৪৩
ধু-ধু বালুচরে লাল টমেটোর ঢেউ

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : খেতের পর খেতে লাল টুকটুকে পাকা টমেটো। বহু গুণের অধিকারী টমেটো এবার গাইবান্ধার বিভিন্ন চরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে  শতাধিক হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ। কৃষকের পাশাপাশি খুশি ক্রেতাও।

পলাশবাড়ী, সুন্দরঞ্জ,ফুলছড়ির উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে ইতিমধ্যে বদলে গেছে অন্তত কয়েক শতাধিক কৃষকের ভাগ্য। এখন চরের দিগন্তজুড়ে লাল টমেটো ক্ষেতের বিস্তার। কৃষিজমিতে টমেটোসহ অন্যান্য সবজির চাষে ব্যাপক সাফল্য আসায় দিন দিন এগুলোর দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এসব চরে উৎপাদিত টমেটো রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

বর্তমানে মঙ্গারচর,কামারজানি চর, ঘেঘেরচর, সানন্দবাড়ী চর মোল্লাবাড়ীচর সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকভাবে টমেটো উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষকরা জানান, এখন টমেটো বিক্রি প্রায় শেষের দিকে।

স্থানীয় কৃষি অফিসের তত্ববাবধানে গত কয়েক বছর ধরে কৃষকদের বিষমুক্ত সবজি চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়ায় এখন উৎপাদিত অধিকাংশ সবজিই বিষমুক্ত।

এ এলাকার কৃষকের উৎপাদিত শাক-সবজি পাশ্ববর্তী সদরের বাজার,সুন্দরগঞ্জ,ফুলছরি,পলাশবাড়ীসহ কয়েকটি আড়ত হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ হচ্ছে।

কামারজানী গ্রামের কৃষক ফরিদ মিয়া এবার তিনি ৩ একর (১০০ কাঠা) জমিতে টমেটো চাষ করেন। এতে খরচ হয় প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা। এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে প্রায় ৩ লাখ টাকার টমেটো বি্ক্ির করেছেন। এখন টমেটো বিক্রি প্রায় শেষ। এছাড়াও বাজার দর কমে যাওয়ায় টমেটো তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।

একই গ্রামের কৃষক সাদা মিয়া জানান, এবার তিনি আড়াই একর (২৫ কাঠা) জমিতে টমেটো চাষ করেন। এতে তার খরচ হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তিনি প্রথমে ১৮০০, দ্বিতীয়বার ১২০০ ও তৃতীয় বার ২৫০ টাকা মণ ধরে প্রায় দুই লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেনএ ছাড়া মঙ্গালচরের, বটতলা গ্রামের আ. রাজ্জাক দেড় একর, আল আমিন দেড় একর, আব্দুল বাতেন এক একর, হোছেন মিয়া আড়াই একর, জমির উদ্দিন দেড় একর, জহিরুল ইসলাম এক একর, রইছ উদ্দিন দুই একর, বেলালী চার একরসহ এই তিন গ্রামের অন্তত দেড় শতাধিক কৃষক টমেটো চাষ করেছেন। বাম্পার ফলন হওয়ার তারা সবাই বেশ লাভবান হয়েছেন।

টমেটো চাষ অনেক শ্রমিকেরও আয়ের পথ করে দিয়েছে। ঝাউতলা গ্রামের গৃহবধূ হাজেরা কাজ করেন টমেটো ক্ষেতে। দৈনিক ২৫০ টাকা মুজুরি নির্ধারিত থাকায় তিনি প্রতিদিন কাজ করতে পারছেন বলে জানান। বর্তমানে এ কাজের ওপরই তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল।

উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, কামারজানি, ফলিয়াী, মোল্লা, বালাসী বাজারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এবার টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। টমেটোর বাম্পার ফলন গত কয়েক বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি বাম্পার ফলন হওয়ায় টমেটো চাষীরা বেশ লাভবান হয়েছেন।

কৃষকরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই চর এলাকায় এ বছর সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে জমি থেকে বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটরি রাস্তা কাঁচা বলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাকসবজি বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে ন্যায্য মূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন তারা।

(এসআইআর/এসপি/মার্চ ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test