E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়গঞ্জে পাল্টে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদনের পুরনো হিসাব-নিকাশ

২০১৮ মার্চ ২১ ১৭:৪৩:৪৮
রায়গঞ্জে পাল্টে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদনের পুরনো হিসাব-নিকাশ

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.নাজমুল হক মন্ডল পাল্টে দিয়েছে কৃষি উৎপাদনের পুরনো হিসাব-নিকাশ। কৃষকদের সরকারি (ভর্তুকি) আওতায় কৃষি যন্ত্রপাতি ও উৎপাদন বৃদ্ধির পরামশ্র এবং ব্যক্তিগত ভাবে দরিদ্র কৃষকদের বিভিন্ন প্রকারের সহযোগিতা প্রদান করে রায়গঞ্জের কৃষি খাতে অভাবনীয় বিপ্লব সৃষ্টি করছেন। 

সেই ধারাবাহিকতায় কৃষির বিভিন্ন উপখাতের ক্রম অগ্রগতি বাংলাদেশের সূচকেও প্রভাব বিস্তার করেছে। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে সীমিত ভূখণ্ডে অসীম সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরিশ্রমী কৃষক, তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ এবং সরকারের বিভিন্ন তৎপরতায় উৎপাদন বিপ্লবে রায়গঞ্জের এ অসামান্য অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।

স্বাধীনতা-পরবর্তী ৪৭ বছরে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এই সময়ে
আবাদি জমির পরিমাণও অনেক কমে গেছে। উপরন্তু বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশে ফসলহানির ঘটনাও ঘটেছে।

তবুও খাদ্যশস্য উৎপাদনে রায়গঞ্জ উপজেলা এখন সিরাজগঞ্জ জেলার কাছে উজ্জ্বল উদাহরণ। কেননা ধান,গম,শস্যা,পাট,আখ,শাক সবজি ও ভুট্টার ক্ষেত্রে গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলছে রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষকরা । শাকসবজি ও ফলমূলের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলু উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

বিগত অর্থ বছর আউশের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯৫০ হেক্টর জমিতে যা ১৭-১৮ অর্থ বছরে বৃদ্ধি পেয়ে ১২০০ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ হবে বলে আশাবাদী এ কৃষি কর্মকর্তা । কৃষি জমি তৈরিতে যন্ত্রনির্ভরতা বাড়ায় আগের তুলনায় সাশ্রয়ী হয়েছে উৎপাদন।

এর পাশাপাশি বীজ বুনন, ধান কাটা, নিড়ানি, মাড়াইসহ বিভিন্ন কাজে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে এ রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষক। তাই সরকারি ভর্তুকি মূল্যে চলতি অর্থ বছরে ৪ টি কম্বাইন হারভেষ্টর, ৮ টি পাওয়ার ট্রিলার,৫ টি রিপার ও ৭ টি পাওয়ার থ্রেসার অনুষ্ঠানিক ভাবে বিতরণ করা হয়েছে।

এতে আগের চেয়ে অনেক আধুনিক হয়েছে কৃষিপণ্যের উৎপাদন। কৃষি খাতে রায়গঞ্জের এই অভাবনীয় সাফল্যের নেপথ্যে সরকারের নীতি ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান, রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.নাজমুল হক মন্ডল।

তিনি আরো বলেন,সরকারের বাস্তবমুখী কৃষিনীতি এবং সে অনুযায়ী বাজেটসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ দেশকে কৃষি উন্নয়নের এক রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। কৃষিতে ভর্তুকি, সফল সার, বীজ ও সেচ ব্যবস্থাপনা, গবেষণায় প্রণোদনা, গ্রামীণ অবকাঠামো ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে কৃষিপণ্যের নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন, উন্নত বীজের জন্য মৃতপ্রায় বিএডিসিকে শক্তিশালীকরণ প্রভৃতি কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল এবং কৃষক পর্যায়ে তার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কৃষি খাতে অভাবনীয় অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে।

রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তার নিজস্ব তহবিল থেকে কৃষকদের মাঝে নিম গাছ বিতরণ করে ইতিমধ্যে একটি গ্রামকে নিম গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এবং বজ্রপাত হইতে অত্র উপজেলাকে রক্ষা করার জন্য ধামাইনগর বাজার হইতে শিবপুর এবং রায়গঞ্জ উপজেলা হইতে পৌর বাস টার্মিনাল প্রযন্ত তাল রোপন করেন।

শুধু তাই নয় মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষন ও মাটির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানোর জন্য ভার্মি কম্পোষ্ট ভিলেজ নামে তেলিজানা ও দাখিয়া দিঘর গ্রামকে চিহ্নিত করেছেন। যা সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে কৃষি উৎপাদনের মাত্রাকে করেছে আরো বেগবান।

১৭-১৮ অর্থ বছরে রায়গঞ্জ পৌরসভার চকমথুর গ্রামের মো.মোশারফ হোসেন আকন্দ বলেন,আমি সরকারি (ভর্তুকি) মূলে কৃষি যন্ত্র (পাওয়ার থ্রেসার) গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছি এবং কৃষি কাজে আমার উৎসাহ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

(এমএমালেক/এসপি/মার্চ ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test