E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

হবিগঞ্জে শিলা বৃষ্টিতে ইরি-বোরোর ব্যাপক ক্ষতি

২০১৮ এপ্রিল ০৬ ২২:২০:১৭
হবিগঞ্জে শিলা বৃষ্টিতে ইরি-বোরোর ব্যাপক ক্ষতি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে শিলা বৃষ্টিতে ইরি-বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শিলা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জমির পাকা ধান ঝড়ে গেছে। আর কাঁচা ধানগুলো ছিটা ধারণ করেছে।

উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে সুবিদপুর ইউনিয়নের আতুকুড়া, সুবিদপুর, সুনারু ও মক্রমপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অন্যান্য স্থানে শিলা বৃষ্টির কারণে আংশিক পাকা ধান ঝড়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এবার উপজেলায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করা হয়। গত বছর অকাল বন্যা কারণে আবাদকৃত জমির ধান পানি তলিয়ে যায়। এবার কৃষকরা গোলাভরে ধান তোলার স্বপ্ন নিয়ে আবারও জমি চাষ করেন। জমিতে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা সুখ স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। মুহূর্তে কৃষকদের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যায়। আজ শুক্রবার সকালে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার আতুকুড়া ও সুবিদপুর গ্রামের বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করে কৃষকদের জমি ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার চিত্র দেখা যায়।

আতুকুড়া গ্রামের কৃষক জাহির মিয়া উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, গত বছর জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। যে কারণে ধান উত্তোলন করতে পারেননি। এবার বোরো ধান উত্তোলন করার আশায় ৫০ ক্ষের জমি চাষ করেছিলাম। প্রতি ক্ষের জমিতে ৫/৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর যে সব জমি রংজমা এনেছিলাম সেগুলো প্রতি ক্ষেরে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু পাথরে অধিকাংশ জমির ধান ঝড়ে পড়েছে। কাঁচা জমির ধান চিটা (চুছা) ধারণ করেছে। এগুলো শ্রমিকরা চুক্তিতে কাটতে চাইবে না। আবার শ্রমিকদের দিন মজুরী দিয়ে এনে জমি থেকে অবশিষ্ট ধান উত্তোলন করলেও ক্ষতিগ্রস্ত হবো। উত্তোলন করতে গিয়ে প্রতি ক্ষেরে শ্রমিকদের যে খরচ দিতে হবে, সে টাকার পরিমাণ ধান পাবো না।

সুবিদপুর গ্রামের কৃষক ছোরাব খান জানান, শিলাবৃষ্টিতে তার পরিবারের প্রায় ৩০ ক্ষের জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এতে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

একই গ্রামের হরিকৃষ্ণ সরকার জানান, গত বছর তাদের ৪০ ক্ষের জমি পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এবার সেই জমির ধান শিলাবৃষ্টি ধ্বংশ করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় আমরা কৃষকরা বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। শিলা বৃষ্টিতে ভবিষ্যতে কৃষকদের ফলানো ধান যাতে নষ্ট না হয়, এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে গবেষণা করে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।

সুজাতপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামের দরিদ্র কৃষক সিরাজুল হক জানান, তিনি ১০ ক্ষের জমি চাষ করেছিলেন। এতে তার ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু পাথরে তার জমির ধানগুলো নষ্ট করে দিয়েছে।

বানিয়াচঙ্গ উপজেলা কৃষি সম্প্রারণ কর্মকর্তা মোস্তফা ইকবাল আজাদ উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, এ বছর উপজেলার ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। জমিগুলোতে বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু শিলা বৃষ্টিতে উপজেলা সুবিদপুর ইউনিয়নের আতুকুড়া, সুনারু, সুবিদপুর ও মক্রমপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের প্রায় ১৩০ হেক্টর (১ হাজার ৪০ ক্ষের) জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ জমিগুলোর আংশিক ধান ঝড়ে গেছে এবং কাঁচা জমিগুলোর আংশিক ধান চিটা ধারণ করেছে। বাকি জমির ধান আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষকরা উত্তোলন করতে পারবেন।

(এমইউএ/এসপি/এপ্রিল ০৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test