E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়গঞ্জে ইটভাটা থেকে নির্গত দূষিত গ্যাসে ধানের পেট শূন্য

২০১৮ মে ১১ ১৬:৫৫:৫১
রায়গঞ্জে ইটভাটা থেকে নির্গত দূষিত গ্যাসে ধানের পেট শূন্য

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের পাইকড়া গ্রামে ইটভাটার নির্গত গ্যাসে প্রায় ১৫ একর জমির বোরো ধানের পেটে চাউল নেই বলে অভিযোগ ওঠেছে। বোরো ধান ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের মধ্যে রয়েছে আম, কাঁঠাল, জলপাই, মিষ্টি আমড়া, খেজুর ও লিচু।

ইটভাটার নির্গত গ্যাসের ফাঁদ থেকে বাদ পড়ছেনা এলাকার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা। দেখা দিচ্ছে নানান প্রকার রোগ। যা নিয়ে অভিভাবকরা অনেকটাই আতংকিত।

এ দিকে ধানের পেটে চাউল না থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা পাগল প্রায়। ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে অনেকে সোনার ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কেঁড়ে নিলো সমাজের প্রভাবশালী অবৈধ ইটভাটার মালিকরা। এমন টাই বলছিলেন, পাইকড়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষানী।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ধানের গায়ের রং কালো ফাঁকাসে ধারণ করেছে। কৃষকরা বলছেন ইটভাটা থেকে নির্গত দূষিত গ্যাসের কারণে এমনটা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।

এ খবর পেয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করে ফসল, ফলদ বৃক্ষ ও বাঁশঝাড় পুড়ে গিয়েছে বলে দেখতে পান। এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ভুগছেন হতাশায়।

অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের এবিষয়ে বাড়াবাড়ি না করতে ইটভাটার মালিক পক্ষ নানাভাবে ভয়ভিতি ও হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় কৃষকরা।

স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক বছর আগে পাইকড়া গ্রামে মামা-ভাগ্নে নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়। ভাটা স্থাপনের সময় এলাকাবাসীর বাধা দেয়। এবং ভ্রাম্যমান আদালতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভাটার কাজ স্থগিত করে স্থানীয় প্রশাসন।

কিন্ত সেই নিষেধ অমান্য করে ইটভাটা'র কার্যক্রম চলমান রাখে ইটভাটার মালিক পক্ষ। ইটভাটার কার্যক্রম অবধি চলমান থাকায় ভাটার পশ্চিম অংশে ফসল,ফলদ বৃক্ষ ও বাঁশঝাড় পুড়ে যাচ্ছে। এমন চিত্র দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা।

নিয়মানুযায়ী ইট পোড়ানো বন্ধের পরও কমপক্ষে ৩ দিন মেশিন চালিয়ে ভাটার অভ্যন্তরের গ্যাস উপর দিয়ে বের করে দিতে হয়। তা না করে মেশিন বন্ধ করে ওই দিনই ভাটার ভিতরের গ্যাস বের করে দেয়া হয়। এতে ভাটার ভিতর থেকে ছেড়ে দেয়া গ্যাসে ভাটার উত্তর-পশ্চিম পাশের প্রায় ১৫ একর জমির বোরো ধান বেশ কিছু ফলদ বৃক্ষসহ বাঁশঝাড় পুড়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, প্রায় ১৫ একর জমির বোরো ধানসহ বেশ কিছু ফলদ বৃক্ষ ও বাঁশ পুড়ে গেছে। যার ফলে চাষাবাদকৃত বোরো ধানের এমন ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

অত্র উপজেলার ভুক্তভোগীরা বলেন, ইটভাটার গ্যাসে পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতি পূরণসহ জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ইটভাটা বন্ধের দাবি জানান তারা।

এ ব্যাপারে মামা ভাগ্নে ইটভাটার স্বত্তাধিকার মাসুদ রানা বলেন, ইটভাটা মালিক সমিতির সাথে কথা বলে আপনাদের এবিষয়ে জানানো হবে। এই মূর্হূতে আমি কিছু বলতে পারবো না।

রায়গঞ্জ উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবু হানিফ জানান, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সাথে এটা আপোশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক মন্ডল বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঠ পরিদর্শন করেছি। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রায় ১৫ একর জমির ধান আংশিক নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, ভাটা কর্তৃপক্ষকে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।

(এমএএম/এসপি/মে ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test