E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মধুপুরে বেগুনের ফলনে রেকর্ড, রপ্তানী হচ্ছে বিদেশে

২০১৮ মে ২৯ ১৪:৩২:৫৪
মধুপুরে বেগুনের ফলনে রেকর্ড, রপ্তানী হচ্ছে বিদেশে

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মধুপুরে বেগুনের ফলনে রেকর্ড ছাড়িয়েছে এবং দাম ভালো পাওয়াই কৃষকের মুখে হাসি। বেগুন চাষ করে একদিকে কৃষকরা যেমন আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন অন্যদিকে দেশের মানুষের পুষ্টি ও সবজির চাহিদা পুরণে উলেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের কদিমহাতীল, টিকরী, কোনাবাড়ী, কুড়াগাছা ইউনিয়নের পিরোজপুর, গোলাবাড়ী ইউনিয়নের গোলাবাড়ী, বেরীবাইদ ইউনিয়নের বেরীবাইদ মাগুন্তিনগর, জাঙ্গালিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে গত কয়েক বছর ধরে মাটির অনুর্বরতার কারণে চাষীরা তাদের জমিতে ধান আবাদ না করে বেগুনের আবাদ শুরু করেছেন।

অধিক লাভজনক হওয়ায় এলাকার প্রত্যেক কৃষকই ৫ কাঠা থেকে সর্বোচ্চ ২৬ বিঘা পর্যন্ত জমিতে বেগুনের চাষ করেছেন। এসব এলাকায় মাঠে মাঠে এখন কেবল বেগুনের ক্ষেত। কৃষকরা হাইব্রিড ও নসিমন এবং যশোরের ইসলামপুরী ও সাদা গুটি জাতের বেগুন চাষ করেছেন।

উপজেলার মধুপুরের অনেক বেগুন চাষিরা বিঘায় বিঘায় জমি লীজ নিয়ে বেগুন চাষ শুরু করেছেন। এ উপজেলায় প্রায় ৪০/৫০ জন বেগুন চাষী রয়েছে। তারাও অনুরূপভাবে ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি বেগুন বিক্রি করে থাকেন। বেগুন চাষিদের হিসেব মতে শুধু এ উপজেলায়ই প্রতিদিন ২০ লাখ টাকার বেগুন উৎপাদন হচ্ছে। এ উপজেলার সবজি রপ্তানী হচ্ছে বিদেশের মাটিতেও। বেগুন বিক্রি করে এ উপজেলায় অনেক বেগুন চাষী স্বাবলম্বি হয়েছেন।

মো.রুহুল আমীন জানান,অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেগুনে লাভ পাওয়া যায় বেশি তাই বেগুন চাষ করেছি। বাজার দাম অনুয়ায়ী যা খরচ করেছি তার চেয়ে বেশি উঠে আসছে। রমজানে বেগুনের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা অধিক লাভবান হচ্ছি। বাজারে ভেজাল কীটনাশকের কারণে কৃষকের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

কৃষকের দাবি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি কীটনাশক কোম্পানীগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ভেজালমুক্ত কীটনাশকের ব্যবস্থা করেন তবে বাংলাদেশ থেকে কোটি কোটি টাকার সবজি বিদেশে রপ্তানী করা যাবে। বিকল্প পন্থায় আড়তদারদের মাধ্যমে বেগুন বিদেশে যাচ্ছে। প্রতিদিন ৮-১০ ট্রাক বেগুন কিনে তারা ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন।

মাগুন্তিনগর গ্রামের আ. মালেক, আমজাদ আলী, জটাবাড়ী গ্রামের সোবহান মিয়াও জানান, আমি ২৫ বিঘা জমি ২৫ হাজার টাকা করে প্রতি বছর ৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে গত দুই বছর ধরে বেগুন চাষ করেছি। বেগুন চাষে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। বেগুন চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

মধুপুর উপজেলার বেরীবাইদ গ্রামের বেগুন চাষী ভুট্টু মিয়া জানান, এ বছর আমি ৪’শ শতাংশ জমিতে বেগুনের আবাদ করেছি। বেগুনের ফলন ভাল হওয়ায় আমি প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৭ মণ বেগুন তুলে বিক্রী করতে পারি।

কৃষকরা আরও জানান, বেগুন বিক্রির জন্য ঢাকার পথে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ চাঁদা তোলেন। বিশেষ করে আশুলিয়ার বেরীবাইদ ব্রিজ হয়ে মিরপুরের পথে ৪০-৫০ স্থানে পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, মধুপুরে এ বছরে অনেক জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের পাশে থেকে তাদের নিয়মিত নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। তবে কৃষকরা বেগুনের প্রধান শত্রু পোকা দমনে যদি সেক্স ফেরোমিন ফাঁদ ব্যবহার করে তাহলে ফলন আরো ভালো হবে।

(আরকেপি/এসপি/মে ২৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test