E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুমকিতে সেচ সংকট : বোরো আবাদে চিন্তিত কৃষক

২০১৯ জানুয়ারি ২২ ২১:৩৮:২৫
দুমকিতে সেচ সংকট : বোরো আবাদে চিন্তিত কৃষক

সোহাগ হোসেন, দুমকি (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দুমকিতে সেচের পানির তীব্র সংকটের কারণে চলতি মৌসুমে ইরি-বারোর আবাদ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় সেচ সুবিধা না থাকায় ইরি-বোরো’র আবাদী জমিতে চাষাবাদ করতে পারছে না কৃষকরা।

প্রাকৃতিক পানির উৎস- পুকুর, ডোবা, খাল-বিল শুকিয়ে পানি শুন্য হয়ে পরায় সেচের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সেচের পনির অভাবে ওয়াপদা আভ্যন্তরীণ ফসলি জমির চাষাবাদ করতে পারছে কেউ॥ তাই ইরি-বোরো’র বিকল্প হিসেবে প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকর এখন বেশী বেশী রবি শস্য আবাদে ঝুকে পড়েছে।

উপজেলা কৃষিবিভাগ সূত্রে জানাগেছে, সরকারী ভাবে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হেক্টর। রবি শস্য আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪হাজার হেক্টর। রবি ফসলের মধ্যে ৩হাজার ৩শ’হেক্টর মুগ, ২৫হেক্টর মশুরি, আলু ৪৭হেক্টর ও মরিচ ৫০হেক্টর। ওয়াপদা ভেরিবাঁধ বেষ্টিত আভ্যন্তরীণ খাল, নালা, পুকুর, ডোবায় তীব্র পানির সংকট দেখা দেয়ায় ৫ইউনিয়নের বেশীর ভাগ কৃষকরাই বোরো আবাদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারছে না।

নদী ও খালের সংলগ্ন ও তীরবর্তি কিছু কিছু জমিতে সেচের সুবিধা থাকায় বোরো’র আবাদ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এতে সরকারী লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, শুষ্কমৌসুমে পুকুর, ডোবা, খাল-বিলে পানি শূন্যতায় সেচের সংকটে জমির চাষাবাদ করতে পারছেন না তারা। পানি না পাওয়ায় তারা ইরি-বোরো আবাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তাই বিকল্প ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকরা এখন রবি ফসল আবাদে মনোনিবেশ করেছে।

ব্যাপক আগ্রহে চলছে রবি ফসলের আবাদ। মুগ, মশুরী, খেসারী, আলু, মরিচ, চিনা বাদাম, তিল, তিসিসহ নানা জাতের রফি ফসলের চাষাবাদ করছে কৃষকরা। মুরাদিয়া ইউনিয়নের কালেখা এলাকার কৃষক মফেজ হাওলাদার জানান, ইরি-বোরো আবাদের চিন্তা বাদ দিয়ে এখন রবি শস্য আবাদে মনোনিবেশ করেছেন তিনি।

একই কথা বললেন, ওই গ্রামের রফিক আকন, ফোরকান সিকদার, আবুল গাজীসহ অনেকে। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের রাজাখালী গ্রামের কৃষক আবু ইউসুফ খানের মতে আমন ফসল কাটার পর পানি সংকটের কারনে এ এলাকায় টানা ৬ মাস ফসলি জমি অনাবাদি পরে থাকে। সেচের সুবিধা থাকলে ইরি-বোরোর আবাদ করা যেত। কিন্তু প্রকৃতিক পানির উৎস না থাকায় কৃষকরা ইচ্ছা থাকলেও ইরি-বোরোর আবাদ করতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, জমি অনাবাদি না রেখে সবাই এখন রবি শস্য আবাদে উৎসাহী হয়েছে।

শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: লুৎফর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পানির অভাবে ইরি-বোরোর চাষাবাদে ব্যর্থ কৃষকদের বেশী বেশী রবি শস্যের আবাদ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কৃষককরাও বেশ আগ্রহ নিয়ে রবি ফসলের আবাদে মনোনিবেশ করেছে। তিনি আরও বলেন, যে ভাবে কৃৃষকরা রবি ফসলের আবাদ শুরু করেছে তাতে চলতি মৌসুমে সরকারী টার্গেট ছাড়িয়ে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী জানান, চলতি মৌসুমে মুরাদিয়ার চরাঞ্চল, লেবুখালী ও আলগির চরাঞ্চলে বোরোর আবাদের প্রস্তুতি চলছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

তিনি আরও বলেন, সেচ সুবিধার অভাবে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের কয়েকশ’ একর ফসলি জমি অনাবাদি পরে থাকছে। পানির অভাবে কৃষকরা তাদের জমি চাষ করতে পারছে না। প্রাকৃতিক পানির উৎসের জন্য খাল খনন করতে হবে। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। খাল খনন সম্ভব হলে ইরি-বোরো’র আবাদের সমস্যা কেটে যাবে।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ২২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test