E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৩ হাজার মে. টন

আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণে চুয়াডাঙ্গাবাসী

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৩ ১৪:৪৭:৩৭
আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণে চুয়াডাঙ্গাবাসী

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : সোনালী হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে চুয়াডাঙ্গার আমবাগান গুলোতে। শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় চুয়াডাঙ্গার বাগানগুলোতে বেশ আগেভাগেই এসেছে আমের মুকুল। আগাম মুকুলে আগাম ফলনের সাথে ভাল দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আমবাগান মালিকেরা। আর এখন থেকেই গাছে মুকুল দেখে বাগানের দরদাম হাঁকতে শুরু করেছেন বেপারিরা।

বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ আকাশে বাতাসে মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা করে তুলছে। গাছে গাছে হলুদ রঙের মুকুল ভরে গিয়েছে বাগানগুলোতে । বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভাল ফলনের স্বপ্ন দেখছেন এবার। বাগানের মালিকেরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় কাজ শেষ করেছে কিছু দিন আগেই ।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায় , গত বছর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৭২৫ হেক্টর জমিতে ৮ হাজার ৭’শ ৬০ মে. টন, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৩’শ ২০ মে. টন, জীবননগরে ৩৯০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার মে. টন ও দামুড়হুদায় ২৯৭ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৮’শ ৭৫ মে. টনসহ চুয়াডাঙ্গা জেলাতে মোট ১৬’শ ৯২ হেক্টর জমিতে ২২ হাজার ৯’শ ৫৫ মে. টন আম উৎপাদন হয়েছিলো।

এ বছর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৭৩০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ৩২০ হেক্টর, জীবননগরে ৪০০ হেক্টর ও দামুড়হুদায় ৩২৫ হেক্টরসহ মোট ১ হাজার ৭’শ ৭৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারে ৮৩ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৩ হাজার মে. টন। চুয়াডাঙ্গার আবওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকা ও আম লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই আমের আবাদ বাড়ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলাতে বেশি আমের আবাদ হচ্ছে, আমরুপালি, লেংড়া, ফজলি, হাড়িভাঙা, মল্লিকা, থাই, গোপালভোগ, বারি ১০, দেশি, বেনারসি সিতাভোগ। এর মধ্যে সিংহভাগই আমরুপালি।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের ভগিরথপুর গ্রামের আম চাষি বাবুল মিয়া বলেন, এবছর আমার আম গাছে প্রচুর পরিমাণে মুকুল এসেছে। এখন পর্যন্ত আমের মুকুলে কোনো রোগ-বালাই আক্রমণ করেনি। আবহাওয়াও ভালো। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে আশা করছি প্রতিটি আম গাছেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আম ধরবে বলে আশা করছি।

চুয়াডাঙ্গা সদরের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের আম বাগানের মালিক রাসেল আহম্মেদ বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছই মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। গত বছর সাড়ে ১৫ বিঘা জমিতে আমের বাগান ছিলো। যা বিক্রি করেছিলাম ৭ লাখ টাকায়। এবছর ২০ বিঘা আমের বাগান আছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কেমন লাভ হয় এবছরে । তাছাড়াও এলাকাতে ফসলি চাষের জমি রেখে অনেকেই আম বাগান করেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাঈম আল সাকীব বলেন, চুয়াডাঙ্গাতে আমের উৎপাদন ভালোই হয় প্রতি বছরে। এবছর একটু আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ দেখা দেয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে আছে । তাছাড়াও এবার আম গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হয়নি। তিনি আরও বলেন, আম চাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। যার কারণে অনেকই এ পেশায় এগিয়ে আসছেন। বর্তমানে জেলাতে আবাদি জমিতে আমের চাষ (বাগান) করছেন কৃষকরা। আমের ভালো ফলন পেতে আমরা কৃষকদের বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিচ্ছি। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের অফিসাররা কাজ করছেন। আশা করা যায় গত বছরের থেকে এ বছর আমের উৎপাদন অনেক বেশি হবে।

(টিটি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test