E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোহাগড়ায় বোরোর বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

২০১৯ মে ০৫ ১৬:১৪:০৪
লোহাগড়ায় বোরোর বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়ায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ছেড়ে গেছে। মাঠের পর মাঠ জুড়ে বোরো ধানের হিল্লোল। ইতোমধ্যে আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লোহাগড়া অঞ্চলে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। এখন একমাত্র ভয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ থেকে রক্ষা পাওয়া গেলে কৃষকরা কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারবে। তবে ‘ফণীর’ বিপদ কেটে যাওয়ার পর এলাকার কৃষকরা রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় মনের সুখে ধান কাটতে শুরু করেছেন। ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন এলাকার কৃষকরা।

ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। ধানের উপযুক্ত দাম না পেলে আগামীতে ধান চাষ ব্যাহত হবে বলে জানান কৃষকরা। সরকার ২৬ টাকা কেজিতে ধানের বিক্রয় মুল্য বেঁধে দিলেও এ ধান প্রকৃত কৃষকরা খাদ্য গুদামে দিতে পারবে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৩৯১ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গত মৌসুমেও বোরো ও আউশ ধানের ফলন বিপর্যয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারে এলাকায় অনেক বেশী জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। আর ফলন দেখেও মনে হচ্ছে, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। কৃষকদের আশংকা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তা থেকে রক্ষা পেলে কৃষকরা সোনালী ধান ঘরে তুলতে পারবে।

উপজেলার মল্লিকপুর ইউপির নালিয়ার বিল, ইতনার বিল, আমাদা, লাহুড়িয়া, চাচই, শালনগর, নলদী, মিঠাপুর, জয়পুর, আমডাঙ্গা, আড়িয়ারা, কুমড়ি, দিঘলিয়া সহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর বীজ সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধানের চাষ এবারের চেয়ে প্রায় অর্ধেক উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ জমিতে ধান চাষ করেছে।

চরমল্লিকপুর গ্রামের ইকরাম, ইনামুল ও লিফাজ, কচুবাড়িয়া গ্রামের ফারুক, লক্ষ্মীপাশার নুর ইসলাম, খলিশাখালির শামীম সহ আরো অনেক কৃষক আলাপকালে জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের বাম্পার ফলন হবে।

কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ করা হলেও এ ধান কৃষকরা খাদ্য গুদামে দিতে পারে না। দেখা গেছে, সরকারি দলের ছত্রছায়ায় একটি মহল কাগজ কলমে কৃষক সেজে খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করে থাকে। কৃষকরা ধান দিতে চাইলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয় বলে তাদের অভিযোগ।

বোরো ধানের বাম্পার ফলন প্রসঙ্গে লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর লোহাগড়া উপজেলায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ধান চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে আশাতীত। দুর্যোগ এড়াতে তিনি ধানের ৮০ ভাগ পেকে গেলেই ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষকদের ।

(আরএম/এসপি/মে ০৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test