E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দিনাজপুরে ‘রেড লেডি’ পেঁপে বাগান করে বিপাকে কৃষক

২০১৯ মে ১৬ ১৩:২৩:২৮
দিনাজপুরে ‘রেড লেডি’ পেঁপে বাগান করে বিপাকে কৃষক

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে লাভের আশায় রেড লেডি হাইব্রিড জাতের পেঁপে বাগান করে বিপাকে পড়েছেন, অসংখ্য কৃষক। মড়ক ধরা পেঁপে গাছে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মতো বালাই নাশক ও ওষুধ প্রয়োগ করেও নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও পরিপূর্ণতা পাচ্ছেনা গাছ,ধরছেনা ফল।লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্রাকের নার্সারি থেকে উচ্চমূল্যে এসব পেঁপে চারা ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের। তারা ক্ষতিপূরণের দাবী তুলেছেন। বীজ বাহিত রোগের কারণে এমনটা হয়েছে দাবী কৃষি বিভাগের । 

তাইওয়ানের রেড লেডি জাতের প্রতিটি পেঁপে গাছ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ১২০টি ফল পাওয়া যায়। অত্যন্ত আর্কষণীয় সুস্বাদু জাতের এ পেঁপের বাজারে চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।৫ থেকে ৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পওয়া যায় ৮-৯ মাসের মধ্য।এই জাতের পেঁপে রিং স্পট ভাইরাস রোগ সহনশীল।এই জাতের জীবনকাল ২ বছরের অধিক। বাংলাদেরশের আবহওয়াতে এ জাতের পেঁপে চাষ উপযোগী। অনেক স্থানে এর চাষ হচ্ছে এ পেঁপে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, শহরের কলেজ মোড়,দশমাইল মোড়সহ জেলার বেশ কিছু স্থানে সাাইনবোর্ডে এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা-ব্রাক। সেই সংস্থার নার্সারি থেকে কৃষক মুজতাহিদ আলী বাবু রেড লেডি জাতের পেঁপে চারা ক্রয় করেছেন। সদর উপজেলার শেষ সিমানা বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়নের ত্রিমোনী ডাঙ্গা এলাকায় দুই একর জমিতে গড়েছেন শখে’র বাগান। কিন্তু, পেঁপে গাছে মড়ক ধরেছে। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও পরিপূর্ণতা পাচ্ছেনা গাছ,ধরছেনা ফল।এনিয়ে বিপাকে কৃষক মুজতাহিদ আলী বাবু।

তিনি জানান, “ব্রাক এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শে পেঁপে বাগানে অনেক ওষূধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করেছি। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করেও কোন ফল পাচ্ছি না।”

শুধু কৃষক মুজতাহিদ আলী বাবু নয়,দিনাজপুর,ঠাকুরগাঁও জেলার অসংখ্য কৃষক প্রতিটি চারা ২৫ টাকা দরে রেড লেডি জাতের পেঁপে বাগান করে বিপাকে পড়েছেন।মড়ক ধরা পেঁপে গাছে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মতো বালাই নাশক ও ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন ফল পাচ্ছেন না তারা।

দিনাজপুর কৃষক কল্যাণ সমিতি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ক্ষতিপূরণের দাবী তুলেছেন। সমিতি’র সভাপতি মো.আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন,অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ তারা ব্রাক থেকে রেড লেডি পেঁপে চারা ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন। তাদের তাইওয়ানের রেড লেডি জাতের চারা না দিয়ে দেয়া হয়েছে চায়না রড লেডি জাতের চারা পেঁপে চারা। তাই,ব্রাক তাদের ক্ষতিপূরণ দিবে এমনটাই দাবী করছি আমরা।

“এখন আর কিছুই করার নেই,” এমন মন্তব্যের পাশাপাশি পরিচর্যা বন্ধ করে দিয়ে তা বীজ বাহিত ভাইরাস জনিত রোগ বলে দাবী করেছে কৃষি বিভাগ। বিরল উপজেলার উপ-সহকারি কৃষি অফিসার(মো.জজিরুল ইসলাম এমনটাই মন্তব্য করেছেন।বলেছেন “এখন আর কিছুই করার নেই,যা হবার তা হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে আর কোন লাভ হবেনা। ্এটা বীজ বাহিত ভাইরাস জনিত রোগ।”

ভাইরাস জনিত রোগের কারণে এমনটা হয়েছে বলে সত্যতা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত বেসরকারি সংস্থা (ব্রাক)’র নার্সারি ম্যানেজার কৃষিবিদ মো.মামমুদুল হাসান।তিনি বলেন,আমরা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে যা পেয়েছি, তাতে আর কিছুই করার নেই। ভাইরাস জনিত রোগের কারণে এমনটা হয়েছে। এ রোগ প্রতিকারের কোন উপায় নেই আর।
লাভের আশায় পেঁপে বাগান করে বিপাকে পড়েছেন,এ অঞ্চলের অসংখ্য কৃষক। একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে এসব পেঁপে চারা কিনে তারা প্রতারিত হয়েছেন এমনটাই তাদের অভিযোগ। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ক্ষতিপূরণসহ অভিযুক্ত সংস্থা’টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক।

(এসএএস/এসপি/মে ১৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test