E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধান কাটা নিয়ে উৎকণ্ঠায় হাওরের কৃষক

২০২০ এপ্রিল ১৭ ১৬:৪৩:১৫
ধান কাটা নিয়ে উৎকণ্ঠায় হাওরের কৃষক

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : সম্প্রতি সর্বত্র করোনা আতঙ্ক বিরাজ করায় নেত্রকোনার মদনে একমাত্র বোরো ফসল কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এর প্রভাবে  সময় মতো সেই ধান কাটতে পারা নিয়ে  উৎকন্ঠায় হাওরের কৃষক পরিবার।

বাতাসে দুলছে হাওরের ফসল। রং ছড়াচ্ছে কৃষাণ কৃষাণীর মনে। পাকা-অধাপাকা ধানের মৌ-মৌ গন্ধে ভরে গেছে হাওর। দেশি জাত ধানের সাথে বিআর-২৮ জাতের ধানও কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলায় সর্বত্র ধান ঘরে তোলার আমেজ।

বছরে একটি মাত্র বোরো ফসলকে ঘিরেই হাওরাঞ্চলের মানুষের যত স্বপ্ন। বহু প্রত্যাশীত সোনালী ধান ঘরে তুলতে করোনা আতংকের মাঝে কৃষাণ কৃষাণীরা ব্যস্ত ধানের কাজে। কৃষকদের শত স্বপ্নের মাঝেও মনে আতঙ্কের কমতি নেই। মেঘলা আকাশ বা বৃষ্টি হলেই তাদের চেহারাটা হয় ফ্যাকাসে। মেঘের হুঙ্কার যেন তাদের অন্তরে আঘাত করে। পাহাড়ি ঢল তাদের মনে ভাবনা জাগায় বার-বার। তাই ধান ক্ষেতে তাকালে মনের অজান্তেই একটু হলেও তৃপ্তি ফুটে উঠে তাদের মুখে।

মনের গভীর থেকে মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেন ভালোয় ভালোয় ফসল ঘরে তুলার প্রত্যয়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে ফসল হারানো নিঃস্ব কৃষকরা এবার কষ্টে ফলানো ধান গোলায় ওঠানোর স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু কষ্টার্জিত ধানগুলো গোলায় তোলার স্বপ্ন যারা দেখছেন, তারা রয়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ধান কাটা-মাড়াইয়ের শ্রমিক সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছেন তারা। আর এ সঙ্কট তাদের উৎকণ্ঠার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিবছর শ্রমিক আসলেও এবার করোনার ভয়ে আর আসেনি। তবে প্রয়োজনের তুলনায় শ্রমিক সংকটের কারণে সময় মতো ফসল ঘরে তুলা নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ১৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গত কয়েক বছরের বন্যার অভিজ্ঞতার কারণে কৃষকরা হাওরের বেশিরভাগ জমিতে আগাম জাতের বোরো ধান আবাদ করেছেন। উদ্দেশ্য একটাই- পাহাড়ি ঢল আসার আগেই যেন নির্বিঘ্নে ধান কেটে ঘরে তোলা যায়। এসব আগাম জাতের ধান ইতোমধ্যে কাটতে শুরু করেছে।

স্থানীয় স্বানীয় কৃষক আরিফুর রহমান,কালাম মিয়া জানান জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই আগাম জাতের ধান কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা করোনার ভয়ে আছি। শেষ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবারও বাম্পার ফলন হবে। হাওরাঞ্চলের সমস্ত ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয় মাত্র একমাসের মধ্যে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে এ ধান সময় মতো ঘরে তোলতে পারব কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছি। ধানের দামও মোটামুটি ভাল আছে।

কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান বলেন, ইতি মধ্যে হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায়ে রেখে ধান কাটতে পারে এ বিষয়ে পরার্মশ দেয়া হয়েছে।

গত বছরের তোলনায় এবার শ্রমিক কম এসেছে। কিন্তু গত বছরের চেয়ে আমরা ধান কাটার মেশিন বেশি দিয়েছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০% পরিশোধের মাধ্যমে ১৫টি ধান কাটার মেশিন দেয়া হয়েছে। তবে পানির জন্য ভয়ে আছি। আর ১ সপ্তাহ পেলে হাওরের ধান গুলো কৃষকরা সংগ্রহ করতে পারবে।

(এএমএ/এসপি/এপ্রিল ১৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test