E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে  ৭ কোটি টাকার সার

২০১৪ আগস্ট ২৪ ১৮:০২:৪১
নাটোরে খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে  ৭ কোটি টাকার সার

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে বাফার গোডাউনের স্থানাভাবে প্রায় ৭ কোটি টাকার ইউরিয়া সার বাহিরে পড়ে আছে। ফলে বাইরে মজুদ থাকা সার বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। কৃষি বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী দেওয়া বরাদ্দ করা ইউরিয়া সার নাটোর বাফার গোডাউনে রাখা হয়। কিন্তু গোডাউনে জায়গা না থাকায় বাহিরে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন সার খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে।

গোডাউন কর্মকর্তারা জানান,কৃষক পর্যায়ে সারের চাহিদা কিছুটা কম থাকায় সাময়িক সময়ে ডিলাররা বরাদ্দকৃত সার কম উত্তোলন করছেন। ফলে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়। তবে এখন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ডিলাররা নিয়মিত সার উত্তোলন শুরু করছেন। এতদসত্বেও স্থানাভাবে সামান্য পরিমান সার বাইরে রাখা হয়েছে। সেগুলো নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানান।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, নাটোর বাফার সার গোডাউনে সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন ধারন ক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে মজুদ রয়েছে ১৪ হাজার মেট্রিক টন সার। পাঁচ হাজার মেট্রিক টন সার খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে। যার আনুমানিক মুল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা। জায়গার অভাবে সারগুলি খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। জেলায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) মনোনীত ৬৪ জন সার ডিলার রয়েছে। কিন্তু ডিলাররা সার কম উত্তোলন করায় সারের মজুদ বেড়ে গেছে। তবে ডিলাররা জানান,তারা বরাদ্দ অনুযায়ী নিয়মিতভাবে সার উত্তোলন করেন। সার ডিলার সামসুল আলম জানান, প্রতিবছর স্থানাভাবে সার বাইরে ফেলে রাখা হয়। এতে সারের গুনাগুন নষ্ট হয়।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, এই সমস্যা দির্ঘদিনের। আরো গোডাউন নির্মান করা হলে এই সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে। নাটোরের চকরামপুরে বিএডিসির গোডাউন আছে। ওই গোডাউন ব্যবহার করতে দেওয়া হলে এই সমস্যা কেটে যাবে।
নাটোর বাফার গোডাউন সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৭৩ হাজার ৭৭৪ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেওয়ার টার্গেট করা হয়। কিন্ত কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ৫২ হাজার ৫’শ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দের অনুমোদন দেয় । গত বছর ৪৭ হাজার ৮’শ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়। চলতি ২০১৪-১৫ মৌসুমে এলাকার চাহিদা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগের দেওয়া চাহিদার মধ্যে চলতি আগষ্ট মাস পর্যন্ত ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ পাওয়া যায়। আরো ২ হাজার ১’শ মেট্রিক টন সার এসেছে। এদিকে বরাদ্দ পাওয়া সারের মধ্যে এপর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন সার ডিলারদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে জুন মাসে ৩ হাজার ৩’শ মেট্রিক টন, জুলাই মাসে ২ হাজার ৩২৮ মেট্রিক ও চলতি আগষ্ট মাসে ২ হাজার ৮’শ মেট্রিক টন। আরো ২ হাজার ১’শ মেট্রিক টন সরবরাহের প্রক্রিয়া আছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ইউরিয়া সারের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ৭৩ হাজার ৭৭৪ মেট্রিক টন। সেখানে অনুমোদন পাওয়া গেছে ৫২ হাজার ৫’শ মেট্রিক টন।
নাটোর বাফার সার গোডাউনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দকৃত সারের চেয়ে গোডাউনে জায়গা কম হওয়ায় পলিথিন দিয়ে বিপুল পরিমান সার খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। বৃষ্টি হলে আমরা যত চেষ্টাই করি কিছু সার নষ্ট হবেই। বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকায় নিরাপদস্থানে সারগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সারা দেশে বিসিআইসির উদ্যোগে গোডাউন নির্মান করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহন করলে নাটোরে গোডাউন নির্মান সম্ভব।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রহমতুল্লাহ সরকার জানান, বাফার গোডাউনে বিপুল পরিমানে সার স্থানাভাবে বাইরে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে সার জমাট বেধে গুনগত মান নষ্ট হয়ে যায়। জমাট বাধা এসব সার ব্যবহারে কৃষকদের কোন উপকারে আসেনা। ছেড়া ফাটা বস্তা বাতাসের সংস্পর্শে আসলে নাইট্রোজেন নষ্ট হয়ে যায়। বস্তা রিপ্যাকিং করার সময় একই ঘটনা ঘটে। ফলে চাষাবাদের জন্য এসকল সার কোন কাজে আসেনা।
(এমআর/এএস/আগস্ট ২৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test