E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ ‘মধুমালা’ চাষে সাফল্য

২০২১ আগস্ট ০৫ ১৬:৪৬:০৩
গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ ‘মধুমালা’ চাষে সাফল্য

সৈয়দ নুহু উল আলম নবীন, আমতলী (বরগুনা) : গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ মধুমালা চাষ করে চকম সৃষ্টি করেছেন কৃষক মোঃ রুহুল আমিন বিশ্বাস। উপরে হদলে ভিতরে টকটকে লাল রংয়ের মধুমালা তরমুজ ঝুলছে মাচায়। অপরুপ সৌন্দর্যে শোভিত তার ক্ষেত। সুস্বাদু তরমুজের রয়েছে প্রচুর চাহিদা। শখের বসে চাষ করে শুরুতেই সফলতা পেয়েছেন চাষী রুহুল আমিন। প্রতিদিন মানুষ ক্রয় এবং দেখতে আসছেন তার মধুমালা তরমুজ ক্ষেত। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামে।

জানা গেছে, আমতলী পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক রুহুল আমিন বিশ্বাস। চাকুরীর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য ও সবজি চাষ করে আসছেন। মৎস্য ও সবজি চাষে বেশ সফলতা পেয়েছেন তিনি। তার সফলতাকে আরো প্রসারিত করতে উদ্যোগ নেন গ্রীষ্মকালীণ তরমুজ চাষে। উপজেলার কৃষি অফিসের পরামর্শে মধুমালা তরমুজ চাষ করেন। দ্বিধাদ্বন্ধে শখের বসে ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে এ বছর জুন মাসের শুরুতে ২’শ মাঁচায় (জার) তরমুজের বীজ বপন করেন। মাঁচা তৈরি করে এ তরমুজ চাষ করা হয়। দুই মাসের মাথায় গাছে ফল ধরেছে। খুশিতে আত্মহারা চাষী রুহুল আমিন। শুরুতে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ থাকলেও ভয়কে জয় করেই তার এ তরমুজ চাষ। তার অদম্য শ্রমকে কিছুটা বিগ্নিত করেছে বিরামহীন বর্ষণ। কিন্তু তেমন সমস্যা হয়নি।

বর্তমানে তার গাছের তরমুজ বড় হয়েছে। থোকায় থোকায় মাঁচায় ঝুলছে তরমুজ। ইতিমধ্যে তিনি ৫০ টি তরমুজ বিক্রি করছেন। দামও বেশ ভালো। ধরন ভেদে ২’শ টাকা থেকে ৪’শ টাকায় একটি তরমুজ বিক্রি করছেন চাষী রুহুল আমিন। কিন্তু চাহিদামত তরমুজ ক্রেতাকে দিতে পারছেন না। ক্রেতাদের কাছে মুল্য বিবেচ্য বিষয় না তরমুজ পেলেই খুশি। ক্রেতাদের চাহিদামত তরমুজ দিতে না পারায় বিপাকে চাষী রুহুল আমিন। ইতিমধ্যে চাষী রুহুল আমিন ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। গাছে আরো বেশকিছু তরমুজ রয়েছে। পরীক্ষামুলক হলেও শুরুতেই তিনি চমক সৃষ্টি করেছেন। আশা করছেন এ বছর অন্তত আরো ৪০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। প্রতিদিন তার মধুমালা তরমুজ ক্ষেত দেখতে লোক এসে ভিড় করছেন।

তরমুজ ক্ষেত দেখতে আসা জাফর ও নজরুল ইসলাম বলেন, অসময়ের তরমুজ। দেখতে খুবই সুন্দর। গাছে থোকায় থোকায় হলদে রংয়ের তরমুজ ঝুলে আছে। এ যেন প্রকৃতির দেয়া অপরুপ সৌন্দর্য। তারা আরো বলেন, চেয়েছিলাম তরমুজ কিনতে কিন্তু পারিনি।

মধুমালা তরমুজ চাষী মোঃ রুহুল আমিন বিশ্বাস বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই মাছ ও সবজি চাষ করে আসছি। চাকুরী নেয়ার পরেও চাষাবাদ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারিনি। চাকুরীর ফাঁকে ফাঁকে মাছ ও সবজি চাষ করছি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নুতন কিছু চাষের উৎসাহ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। তাই এ বছর জুন মাসে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেই। পরীক্ষামুলক হলেও বেশ সফলতা পেয়েছি। সখের বসত হলেও এখন বেশ লাভবান হবো বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, অসময়ের তরমুজ। চাহিদা অনেক কিন্তু ক্রেতাদের দিতে পারছি না। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। গাছে যে তরমুজ আছে তাতে আরো ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। আমার দেখাদেখি অনেকে এ তরমুজ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, মধুমালা তরমুজ গ্রীষ্মকালীন ফল। এ ফল চাষে বেশ লাভবান হওয়া যায়। তরমুজ চাষী রুহুল আমিন বিশ্বাস এই প্রথম উপজেলায় মধুমালা তরমুজ চাষ করেছেন। বেশ সফলতা পেয়েছেন তিনি। তার দেখাদেখি অনেক কৃষক এ তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

(এসএন/এসপি/আগস্ট ০৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test