E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁর মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ

২০২১ ডিসেম্বর ০৮ ১৮:০০:৫৮
নওগাঁর মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ জেলার মাঠে মাঠে এখন হলুদের সমারোহ। প্রকৃতি যেন ‘গায়ে হলুদের’ অপরূপ সাজে সেজেছে। জেলা জুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত এখন ফসলের মাঠ। শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা বিস্তীর্ন  মাঠ যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা এক সপ্নীল পৃথিবী। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলে শীতের সোনাঝরা রোদে ঝিকিমিকি করছে। এ এক অপরুপ সৌন্দর্য। যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রকৃতি।

যেদিকে তাকাই শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধাঁনো বর্ণীল সমারোহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে সরিষা ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পন এ এক অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির বিন্দু আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে। ভালো ফলনের আশায় জেলার কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেয়ায় এবং সরিষা চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় সরিষার পাশাপাশি আলু, গম ও ভূট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই সরিষা যথাসময়ে ঘরে তুলতে পারলে এবং বিক্রি মূল্য ভাল পেলে বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ১১ উপজেলার ৯৯টি ইউনিয়নে ৩২ হাজার ১ শ’ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এপর্যন্ত জেলায় প্রায় ৩১ হাজার ৯শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। শুরুতেই সরিষা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। ২০২১-২২ অর্থ বছরে সরকারী পর্যায় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে মান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কৃষকের মাঝে সরিষার বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু জমি চাষের উপযুগী না হওয়ায় কিছু কৃষকরা ঠিক সময়ে সরিষা বপন করতে পারেনি। ফলে তারা অন্যান্য রবিশস্য চাষের দিকে ঝুকছেন। আগামী বোরো ধান উৎপাদনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রান্তিক চাষিরা কিছুটা বাধ্য হয়েই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সরিষা, আলু, গম ও ভূট্টা চাষে অতি আগ্রহী হয়ে উঠছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শামসুল ওয়াদুদ জানান, এবারে জেলায় বিগত বছরের তুলনায় বেশি পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে জেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় সরিষা চাষের জমিগুলো উর্ব্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।

(বিএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test