E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাথরঘাটায় বৃষ্টির জলে ডুবে গেছে আলু চাষিদের স্বপ্ন!

২০২১ ডিসেম্বর ০৯ ১৬:৪৪:৩৫
পাথরঘাটায় বৃষ্টির জলে ডুবে গেছে আলু চাষিদের স্বপ্ন!

অমল তালুকদার, পাথরঘাটা (বরগুনা) : অসময়ে ঘূর্ণিঝড় দুর্যোগের কারণে বরগুনার পাথরঘাটার আলুচাষি কৃষকেরা  তাদের সব সম্বল হারিয়ে ফেলেছে।

সীজনাল আলু উৎপাদনের জন্য জমিতে আলু রোপন থেকে শুরু করে চাষ দেয়া হয়েছিল ১মাস আগে। কারো কারো জমির সম্পুর্ন আলু রোপণ করা হয়েছিল আগেই। আবার অনেক কৃষকের জমিতে হাল চাষ করে সার জমিতে ছিটিয়ে আলু বীজ রোপন উপযোগী করছিল কেবল। ঠিক এমন সময় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড় বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে আলু চাষীদের সকল ক্ষেত।

পাথরঘাটা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ক্ষেতে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়। এ ছাড়া উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে আরও ২৫টির মতো আলুর খেত রয়েছে। চলতি মৌসুমে আলুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময় এলে এই এলাকার অধিকাংশ চাষি খেতে আলুর বীজ বপন করে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে আলুর অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে গেছে।

সরেজমিন কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আলুর বীজ বপন করা খেত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। ফলে সব বীজ নষ্ট হয়ে যাবে বলে হতাশায় রয়েছেন চাষিরা।

আলু চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় একাধিক ডিলার জানান, এই মৌসুমে স্থানীয় ২০০ চাষির চাহিদা অনুযায়ী ৩৯৬ টন আলুর বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল। এরই মধ্যে চাষিরা বীজ নিয়ে গেছেন।

কামায়হাট এলাকার স্থানীয় এক ডিলার বলেন, `আমি ২৫৫ টন আলু বিক্রি করেছি। এরই মধ্যে ৫০ শতাংশ আলুর বীজ চাষিরা বপন করে ফেলেছেন। বৃষ্টির কারণে বপন করা সব বীজের অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে গ্রেডিং অনুযায়ী চাষিদের প্রায় ৮০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে।

অপর এক আলুচাষি নেকব্বার মিয়া বলেন, ১ একর জমিতে ১ টন আলুর বীজ বপন করেছিলাম। যার বাজারমূল্য ৪০ হাজার টাকা। এ ছাড়া আলুর ফলন ভালো পেতে নিয়ম অনুযায়ী সমপরিমাণ টাকার সার কীটনাশক জমিতে দিতে দিয়েছি। যার পুরোটাই লোকসান হয়েছে।

একাধিক চাষি জানান, তাঁরা এনজিও থেকে লোন নিয়ে প্রতিবছর আলু চাষ করেন। উৎপাদিত আলু বিক্রি করে এনজিওর লোন পরিশোধ করা হয়। কিন্তু এবার অঙ্কুরেই আলুর বীজ নষ্ট হওয়ায় তাঁরা হতাশায় পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার শিশির কুমার বড়াল বলেন, অতিরিক্ত লাভভানের আশায় প্রতি বছরই এ জেলায় আলুর চাষ করেন । টানা দু’দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে রোপণ করা বেশকিছু জমির বীজ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা ফসলের ক্ষয়ক্ষতির জরিপ এখনো করিনি। সপ্তাহ শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হবে। জরিপ না করে ক্ষতি নিরূপণ করা যাবে না। ’

এমন অবস্থায় (বৃষ্টি চলাকালীন) ক্ষেত থেকে আলু না তুলে এমনিতেই রেখে দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়া আলুগুলো তুলেও কোনো লাভ হবে না। তুলে রেখে দিলেও সেগুলো পঁচে যাবে। বৃষ্টি কমার পর অবস্থা অনুযায়ী ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ানাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

উপকূলের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। আলুর পাশাপাশি কাঁচা আমধান জলে ডুবে আছে। আমনের কৃষকরা জানিয়েছে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় এই মুহূর্তে পোকায় কেটে দিচ্ছে কাঁচা ধানের শীষ। দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ অঞ্চলের আলু ধান সহ সবধরনের রবিশস্য নষ্ট হয়েছে। কত কোটি টাকার ক্ষতি হলো তা এই মুহূর্তে নিরূপণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অভিজ্ঞমহল।

(এটি/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test