E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বালিয়াকান্দিতে দাম কম ও রপ্তানী বন্ধ থাকায় পানচাষীরা হতাশ

২০২১ ডিসেম্বর ২২ ১৭:২৩:৫৬
বালিয়াকান্দিতে দাম কম ও রপ্তানী বন্ধ থাকায় পানচাষীরা হতাশ

একে, আজাদ, রাজবাড়ী : আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ, বিদেশে মিষ্টি পানের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার পান চাষিরা দিন দিন ঘুরে দাড়াচ্ছিলো। তবে এ করোনার প্রভাবে পান বিদেশে রপ্তানী বন্ধ হয়ে পড়া ও দাম কম থাকার কারণে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা। এতে অনেক চাষী পান বরজ ভেঙ্গে অন্য চাষে ঝুকছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলাতে ৮৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পান ও সাচি পানের আবাদ করা হয়েছে। ৬৫৮টি মিষ্টি পানের বরজ, ১৫৬টি সাচি পান বরজসহ ৮১৪টি বরজে চাষ ৮৮ হেক্টর জমিতে পানের চাষ।

জানা গেছে, মিষ্টি পান চাষে উর্বর ভুমি হিসেবে পরিচিত বালিয়াকান্দি উপজেলা। এ অঞ্চলের পানের সুখ্যাতি বহু পুরনো। এখানে সাধারনত দু,জাতের পান উৎপাদন হয়। মিষ্টি পান আর সাচি পান। এখানকার মিষ্টি পান চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানী করা হতো। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋনের ব্যবস্থা করলে প্রতি বছর কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অনেক সময় পান চাষীদের বেকায়দায় পড়তে হয়। কারণ রোগের বিষয়ে কৃষি বিভাগে নেই কোন পরামর্শের সুযোগ।

পান চাষী রবিউল, আঃ খালেক, সেলিম বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর, যদুপুর এলাকায় ব্যাপক পানের আবাদ হয়। তাদের পুর্ব পুরুষের আমল থেকে পানের চাষ করে আসছেন। পুর্ব পুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও পান চাষ করছে। পান চাষ লাভজনক হলেও তাদেরকে মাঝে মধ্যে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। রোগ হলে সঠিক পরামর্শ পায় না। এ অঞ্চলের সাচি ও মিষ্টি পান প্রচুর জন্মে। তবে সরকারী কোন পৃষ্টপোষকতা ও সহজ শর্তে ঋন পেলে তারা ঘুরে দাড়াতে পারবে। মিষ্টি পান রাজবাড়ী জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া রপ্তানী করা হতো। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো। করোনার কারণে বিদেশে পান রপ্তানী বন্ধ হয়ে পড়েছে। বাজারে পানের দাম নেই। এ কারণে আমরা পান চাষ বাদ দিয়ে অন্যচাষে ঝুকছি।

পান চাষী সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, গত বছর করোনার প্রভাবের কারণে পানে লোকসান গুনতে হয়। এবছর লাভের আশা করছিলাম। তবে কয়েকদিনের ঘন বৃষ্টির কারণে ও পানের দাম নেই। কৃষি কর্মকর্তারাও কোন পরামর্শ দিতে পারে না। তাই বিষয়টি নিয়ে গবেষনার দাবী জানানো হয়। আগে বিদেশে প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর পান বিদেশে পাঠাতে পারছি না। দাম না থাকার কারণে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে।
পান চাষীরা আরো বলেন, অর্থকরী ফসল পান হলেও তাদের নেই কোন সহযোগিতা। কৃষি অফিস থেকেও তাদেরকে কোন প্রকার সহযোগিতা মেলে না। সরকারী ভাবে তাদেরকে সুদমুক্ত ঋনের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।

বালিয়াকান্দি পান বাজারে গিয়ে দেখাযায়, পানের আড়ত বসেছে। পান চাষীরা পান ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে এনে বিক্রি করছে। এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পানের ব্যাপারীরা এসে পান ক্রয় করছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার মিষ্টি পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানী করা হতো। এখন রপ্তানী বন্ধ রয়েছে। তবে পান রপ্তানী করতে চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। পান চাষীদেরকে সব সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ প্রদান করেন।

(একেএ/এএস/ডিসেম্বর ২২, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test