E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে গাজরের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

২০২২ জানুয়ারি ১৮ ১৬:৫০:১২
ঈশ্বরদীতে গাজরের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : আগাম, মিষ্টতা এবং শুকনো হওয়ার কারণে দেশের সেরা গাজর উৎপাদন হয় পাবনার ঈশ্বরদীতে। এবারেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঈশ্বরদীতে গাজরের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনের সাথে দাম ভালো পাওয়ায় গাজর চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে।

উঁচু জমি, গাজর চাষে ঈশ্বরদীর অনুকূল আবহাওয়া, রোগ বালাই কম, স্বল্প শ্রম, উৎপাদন বেশি এবং দাম ভালো পাওয়ায় গাজর চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। গাজর চাষ করেই অনেক কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। আগাম উৎপাদিত ঈশ্বরদীর গাজর রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনীসহ অন্যান্য বড় শহরে সরবরাহ হচ্ছে। এখানকার গাজরের ভালো স্বাদ ও পানি কম থাকায় স্থায়িত্ব বেশী হওয়ায় চাহিদাও প্রচুর। এ কারণে ঈশ্বরদীর গাজরের সুনাম ও চাহিদা দেশব্যাপী রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর হতে জমিতে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষক ও শ্রমিকরা। গাজর তোলার পর দুপুরের দিকে খোলায় নিয়ে ধুয়ে ফেলছেন। বিকেল নাগাদ ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আড়তে চালান হয়ে যাচ্ছে।

গাজর উৎপাদনে বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ঈশ্বরদীর কৃষক জাহিদুল ইসলাম ওরফে গাজর জাহিদ এবারে ১২৫ বিঘা জমিতে গাজরের আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো পাচ্ছেন বলে জানান তিনি। এক বিঘা জমিতে প্রায় ১৫০ মণ উৎপাদন হয়েছে। প্রথমদিকে ৭০-৮০ কেজি থেকে শুরু এখন পাইকারি ১৫-১৬ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। এখনও তার ৭০-৮০ বিঘা জমিতে গাজর রয়েছে।

বীজের দাম অনেকে বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এক কেজি বীজের দাম এখন ১৮ হাজার টাকা। স্থানীয় শ্রমিক সংকটের কারণে দুপুরের খাবার এবং ৬০০ টাকা হাজিরার নীচে এখন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। কোন কোন সময় এক হাজার টাকা পর্যন্তও হাজিরা দিতে হয়। এক বিঘা জমিতে গাজর চাষে খরচ প্রায় ৪০ হাজার টাকা বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ জানান, আগাম ও সেরা গাজর ঈশ্বরদীতে উৎপন্ন হয়। স্বাদ, মিষ্টতা ও পানি কম থাকায় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ঈশ্বরদীর গাজরের চাহিদা বেশী। ঈশ্বরদীর গাজরে পানির পরিমান কম থাকায় ১০/১২ দিন পর্যন্ত দোকানে রেখে বিক্রি করা যায়। পঁচন ধরে না। ঈশ্বরদীসহ উত্তরবঙ্গে সবজি বেইজ সংরক্ষণাগার না থাকায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানান তিনি। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে সংরক্ষণাগার থাকলেও স্থানীয়দের পক্ষে দূরে সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। এলাকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি উদ্যোগে সবজি ও ফল বেইজ সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি জানালেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গাজরের বাম্পার ফলনের জন্য অরেঞ্জ কিং, ইয়োলো স্টার, হাইব্রিড সাপাল সিড জাতের বীজ চাষ করে থাকেন ঈশ্বরদীর কৃষকরা। গত বছরের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় এ বছর ৮৯০ হেক্টর জমিতে চাষিরা গাজরের আবাদ করেছেন।

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, গাজর একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে কৃষিখাতে জায়গা করে নিয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর গাজরের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের চেয়ে পাইকারি বাজারে গাজরের দামও বেশি। তাই চাষিরাও খুশি। কৃষি বিভাগের প থেকে গাজর চাষে কৃষকদের সব রকম সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

(এসকেকে/এসপি/জানুয়ারি ১৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test