E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোহাগড়ায় বাঙ্গির বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

২০২২ মে ১১ ১৭:০৪:৪৯
লোহাগড়ায় বাঙ্গির বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

রূপক মুখার্জি, লোহাগড়া : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় এ বছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ফলন গতবারের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। এতে কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি। অল্প বীজে ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকেরা বাঙ্গি উৎপাদনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। প্রতি বছরই বাড়ছে বাঙ্গি চাষের জমি। 

মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল হিসেবে পরিচিতি কোলা, পারমল্লিকপুর, কোলা-দিঘলিয়া এলাকায় দীর্ঘ দু’যুগেরও বেশি সময় ধরে কৃষকরা বাঙ্গি চাষ হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং সময়মত সার ও বীজ প্রয়োগ করায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাঙ্গি চাষ করে এ এলাকার অনেক কৃষক পরিবার স্বচ্ছলতার মুখ দেখছে। পারমল্লিকপুর, কোলা ও দিঘলিয়া এলাকার একাধিক কৃষকরা জানান, এসব ক্ষেত থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ টন বাঙ্গি সংগ্রহ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি বাঙ্গি কিনে নিয়ে দেশের বড় বড় বিভাগীয় শহরে বিক্রি করছেন।

এই এলাকায় বিভিন্ন আকারের বাঙ্গি পাওয়া যাচ্ছে। আকার অনুযায়ী প্রতিটি বাঙ্গির দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে দুই রকমের বাঙ্গি পাওয়া যাচ্ছে, যার মধ্যে বেলে ও আঠালো জাতীয় বাঙ্গি। আঠালে বাঙ্গি খেতে বেশি সুস্বাদু। আঠালে বাঙ্গি তরকারী হিসাবেও খাওয়া যায় বলে এক কৃষক জানান।

কথা হয় উপজেলার কোলা গ্রামের বাঙ্গি চাষি বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক একর জমিতে বাঙ্গির চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো। আমি নিজেই বাজারে খুচরা বাঙ্গি বিক্রি করছি। প্রতিদিন ৫-৬ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। এতে আমিসহ অন্যান্য চাষিরাও বেশ লাভবান হয়েছি। ’

উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের বাঙ্গি চাষি মুরাদ হোসেন বলেন,‘আমাদের এই বাঙ্গি উপজেলার লোহাগড়া বাজার, দিঘলিয়া বাজার, এড়েন্দা বাজার, শিয়রবর বাজার, মানিকগঞ্জ বাজার, লাহুড়িয়া বাজারে বিক্রি করার পরেও এই বাঙ্গি যশোর, খুলনা, ঢাকা, বরিশাল, মোল্যারহাটসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাড়ি ব্যবসায়িরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
বাঙ্গি চাষ সম্পর্কে মল্লিকপুর গ্রামের কৃষক রাসেল মোল্যা জানান, সাধারণত মাঘ মাসে জমিতে বাঙ্গির বীজ লাগানো হয়। এক একর জমিতে এক মন টিএসপি, এমপি ইউরিয়া সার দিতে হয়। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে বাঙ্গি খাওয়ার উপযুক্ত হয়।

লোহাগড়া বাজারের বাঙ্গি ব্যবসায়ী বোরহান, সুমন, বিপ্লব বলেন, এক শত বাঙ্গি পাঁচ হাজার টাকায় কিনে ৭- ৮ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। এই বাঙ্গি একদিকে যেমন কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে, তেমনই বেকার যুবকের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করেছে। তবে উপজেলায় বাঙ্গির কোনো আড়ত না থাকায় অবিক্রীত বাঙ্গি পচে যায়। তিনি উপজেলায় সরকারি ভাবে একটি আধুনিক বাঙ্গির আড়ৎ নির্মানের দাবি জানান।

মল্লিকপুর গ্রামের শহিদ কাজি, সেলিম কাজী বলেন, ‘এ উপজেলায় বাঙ্গি সংরক্ষনের জন্য কোনো হিমাগার না থাকায় চাষিদের অবিক্রীত বাঙ্গি নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় অবিক্রীত বাঙ্গি বাড়ির গরু ছাগলকে খাওয়ানো হয় বলেও তিনি জানান।

লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রইচ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বাঙ্গি চাষের উপযোগী, বিধায় ফলন খুব ভালো হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা কৃষকদের বাঙ্গি চাষের শুরু থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে থাকি।’

(আরএম/এসপি/মে ১১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test