E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঝিনাইদহে ধানের দাম নিয়ে হতাশ কৃষক 

২০২২ মে ২৭ ১৬:১৭:৫৪
ঝিনাইদহে ধানের দাম নিয়ে হতাশ কৃষক 

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : হাট-বাজারে ধানের দাম ভালো, তবে লাভ নেই কৃষকের। কারণ একটাই ঘূর্ণিঝড় অশণির প্রভাবে টানা বৃষ্টির কারণে ধানের মান নষ্ট হওয়া সেগুলোর দাম কমে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকের লাভতো দূরের কথা আসলও রক্ষা করতে পারছে না।

গত কয়েকদিন ধরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তেতুলতলা, হাটগোপালপুর,শৈলকূপার ভাটই বাজার হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটজুড়ে শুধু ধান আর ধান। কৃষক তার নতুন ধান নিয়ে এসেছেন হাটে বিক্রি করতে। অধিকাংশদের মুখে হাসি নেই। হাট ঘুরে দেখা গেছে একই ধান বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। যেসব ধানের মান ভালো তার দাম এক হাজারের ওপরে বিক্রি হচ্ছে। আবার একই ধান যেগুলো বৃষ্টির কারণে একটু মান নষ্ট হয়েছে তা বিক্রি হচ্ছে ৯শ থেকে ৯৫০ টাকা। আর একেবারেই মান কম এমন ধান বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মিনিকেট হিসেবে পরিচিত সরু ধান (ভালো মানের) প্রতি মণ ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার একই ধান যেগুলো বৃষ্টিতে কিছুটা রং নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো ৪০০ থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। একই অবস্থা ছিলো ব্রি-২৮ ধানের ক্ষেত্রেও। এই জাতের ধান ৮৫০ থেকে ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে বৃষ্টিতে নষ্ট অনেক নিম্নমানের ধান বিক্রিও করতে পারছেন না চাষিরা।

আতিয়ার নামে একজন ধান বিক্রেতা বলেন, সপ্তাহের রোববার ও বুধবার ভাটই হাটে ধান বিক্রি হয়। সপ্তাহ দুয়েক আগে হাটে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে। তবে ক্রেতারা খুব হিসেব করে ধান কিনছেন। কারণ সম্প্রতি অশণির প্রভাবে বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ধান নষ্ট হওয়ার কারণে এ অবস্থা হয়েছে। তিনি বলেন, যারা বৃষ্টির আগে ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন তারা ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন। আর আমাদের মতো যে সব চাষি আছেন যারা বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কপাল পুড়েছে।

সোমনাথ বিশ্বাস নামে আরেকজন বিক্রেতা বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও এই বাজারে ধান বিক্রির সময় ক্রেতাদের এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়নি। আমরা বাজারে ধান এনে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি। আড়ৎদার ও মিলাররা ধানের মান একটু নিম্ন হলেই তা আর নিতে চাচ্ছেন না। আর নিলেও তা কম দাম দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে ধানের দাম ভালো হলেও আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ বৃষ্টিতে ধান ক্ষেতে ডুবে রং নষ্ট হয়ে গেছে। এসব ধান নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা কম দামে কিনে নিচ্ছে।

আড়ৎদার রতন কুমার দে বলেন, এবার ধান নিয়ে আমরা সত্যিই বড় সমস্যায় আছি। কারণ বাজারে ধানের মধ্যে কোনটি ভালো কোনটি খারাপ যাচাই করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা মূলত ধান কিনে বিভিন্ন মিলে দিয়ে চাল তৈরি করি। ধানের মান যদি ভালো না হয় তাহলে চালের মানও কমে যায়। এসব কারণেই ধানের মান নির্নয় করে কিনতে হচ্ছে আমাদের। এতে অনেক চাষি আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হলেও কিছু বলার থাকছে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঝিনাইদহের উপপরিচালক আজগর আলী বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ছয় উপজেলায় ৮৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এ বছর ধান চাষের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া থাকায় ফলনও বাম্পার হয়েছে। তবে শেষ সময়ে অশণির কারণে কৃষকরা বিপত্তিতে পড়েছেন ধান নিয়ে।

(একে/এসপি/মে ২৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test