E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেরপুরে বন্যা সহিষ্ণু বিনা-১১ জাতের ধানের চাষাবাদ ও বীজ সংরক্ষণ প্রশিক্ষণ

২০১৪ অক্টোবর ০১ ১৫:৩৫:৫৩
শেরপুরে বন্যা সহিষ্ণু বিনা-১১ জাতের ধানের চাষাবাদ ও বীজ সংরক্ষণ প্রশিক্ষণ

শেরপুর প্রতিনিধি : বিনা-১১ ধান বন্যা কিংবা অন্য কোনভাবে একনাগারে ২০/২৫ দিন পানিতে ডুবে থাকলেও ধান গাছ পচে যায়না। এমনকি লাগানোর পর এ ধানের ফুল আসার আগ পর্যন্ত ৫/৬ বার করে পানিতে ধান ডুবে গেলেও কোনো সমস্যা হয়না। পানি নামার পর ৭/৮ দিন যদি ধান ক্ষেতটিকে আনডিস্টার্ব রাখা যায়, তবে সেখান থেকেই আবার কুশি দেয় এবং ধানের ফলন হয়।

রোপা আমন মৌসুমে প্রচলিত আমন জাতের তুলনায় এ ধানটির ফলন বেশী পাওয়া যায়। ১১৫ দিন জীবনকালের বিনা-১১ জাতের ধানে হেক্টরে ৫ টন ফলন পাওয়া যায়। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বন্যা সহিষ্ণু বিনা-১১ জাতের ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি ও বীজ সংরক্ষণ বিষয়ে শেরপুরে এক প্রশিক্ষণে এসব তথ্য জানানো হয়।

১ অক্টোবর বুধবার শেরপুর খামারবাড়ী মিলনায়তনে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণটির উদ্বোধন করেন বিনা’র গবেষণা পরিচালক ড. মনোয়ার করিম খান। বিনা’র গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ এবং উপ-কেন্দ্র সমুহের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে বিনা ময়মনসিংহ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শেরপুর যৌথভাবে এ প্রশিক্ষনের আয়োজন করে। এতে বিনা-১১ জাতের ধানের উদ্ভাবক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম ছাড়াও অন্যান্যের মদ্যে বক্তব্য রাখেন উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফিরোজ হাসান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জুলকারনাইন প্রমুখ।

প্রশিক্ষণে বিনা-১১ জাতের ধানের উদ্ভাবক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম ধানটির চাষ ও বীজ সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এসময় তিনি জানান, বন্যাপ্রবণ এলাকায় ২০/২৫ দিন জলমগ্ন থাকার পর বন্যার পানি জমি থেকে সরে যাওয়ার পর গাছের শেকড় পচে কালো রং ধারণ করবে। এ অবস্থায় কমপক্ষে ৭ দি জমিতে নামা যাবেনা। ৭ দিন পর যখন নতুন চারা/কুশি গজাবে তখন জমিতে সার প্রয়োগসহ অন্যান্য পরিচর্যা করা যাবে। তিনি বলেন, যেসব জমিতে বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর গাছের পাতায় পলি পড়ে সেখানে পরিস্কার পানি স্প্রে মেশিনের সাহায্যে গাছের পাতা ধুয়ে পরিস্কার করে দিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিনা ধান-১১ উচ্চ ফলনশীল ও জীবনকাল তুলনামুলক অনেক কম হওয়ায় শস্য নিবিড়তা এবং রবি ফসলের আবাদ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বিনা গবেষকরা এ পর্যন্ত লবন ও বন্যা সহিঞ্চু, আগাম জাত সহ ১৫ টি জাতের ধান আবিস্কার করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েকজন কৃষক এসময় সাম্প্রতিক সময়ে পর পর তিন বার পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বিনাধান-১১ চাষের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, তিনবারের বন্যায় ৮/৯ দিন করে পানিতে ডুবে থাকার পরও ফের ধান গাছে কুশি গজানোর কথা বলেন। সকাল-বিকাল দু’টি পৃথক ব্যাচে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণে শেরপুরের ৫ উপজেলার ৬০ জন কৃষক এবং ৮০ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।


(এইচবি/এএস/অক্টোবর ০১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test