E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডিজেল-সার-শ্রমিকের ব্যয় বৃদ্ধি

আমন উৎপাদনে ব্যয় বাড়ছে, বিপাকে ঈশ্বরদীর কৃষক

২০২২ আগস্ট ১৯ ১৩:৪৯:৩৫
আমন উৎপাদনে ব্যয় বাড়ছে, বিপাকে ঈশ্বরদীর কৃষক

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : আষাঢ়-শ্রাবণে ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। শ্রাবণের শেষ দিনে সামান্য বৃষ্টি হলেও ধানের চারা রোপণের জন্য মাঠে কাদামাটি তৈরি হয়নি। জমির মাটি ভেজেইনি ঠিকমতো। এদিকে ভাদ্র মাসের আগমণ ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে  আমনের আবাদ নিয়ে চাষিরা পড়েছেন চরম দুঃশ্চিন্তায়। বৃষ্টির প্রত্যাশা ছেড়ে স্যালো মেশিনের পানি সেচ দিয়ে আমনের জমি তৈরিতে কৃষকরা এখন ব্যস্ত। তবে যোগ হয়েছে বাড়তি খরচ। বেশিরভাগ কৃষকই সেচের পানি দিয়ে আমন আবাদ শুরু করেছেন। তবে ডিজেল, সার, জমি চাষ দেওয়া ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঈশ্বরদীর কৃষকরা। উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা এবারে আমন চায়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

বিগত ৪২ বছরের মধ্যে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে এত কম বৃষ্টিপাত হয়নি বলে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, ২০২১ সালে জুন-জুলাই মাসে ঈশ্বরদীতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৭৫ মিলিমিটার। আর ২০২২ সালে দুই মাসে গড় বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৫৫ মিলিমিটার। অর্থাৎ শতকরা হিসাবে গত বছরের তুলনায় এবারে ৭৮ দশমিক ৩০ ভাগ কম বৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাদ্র মাস চলে আসায় সেচ দিয়েই কৃষকরা ধানের চারা রোপণ করছেন। ধানের চারা তুলে রোপণ করছেন।

ঈশ্বরদী কৃষি অফিস জানায়, ঈশ্বরদীতে এবারে ৩ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন আমন ধান আবাদের শেষ সময় চলছে। এখনও মাঠে রয়ে গেছে পাট। পাট তুলে আমন রোপণের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। যেকারণে আমন আবাদের জমি কমে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে সার ও ডিজেল, লাঙ্গল ও শ্রমিকের দাম বাড়ার কারণে কৃষকদের মধ্যে ধান চাষাবাদে খুব বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিতে এখন পর্যন্ত ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি, সার, সেচ, লাঙ্গল ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।

ঈশ্বরদীর মুলাডুলি এলাকার কৃষক হানিফ মোল্লা নিজের জমি চাষাবাদের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের জমিও তার ট্রাক্টর দিয়ে চুক্তিতে চাষ দিতেন। এবারে হঠাৎ করেই তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিপদে পড়েছেন তিনি। বিলকেদার গ্রামের কৃষক রনজিত নিজের জমি আবাদের পাশাপাশি পাওয়ার ট্রলি দিয়ে অন্যের জমি চাষ দেন। তিনি জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বিঘা প্রতি জমিতে এক চাষ দিয়ে ৪৫০ টাকা নিচ্ছেন। আগে ছিল ৩৫০ টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিসার মিতা সরকার জানান, উপসী রোপা আমন ব্রি-ধান-৮৭, ৮০, ৭৫ ও বিনা-১৭ জাতগুলো কৃষকদের দেয়া হচ্ছে। এসব আধুনিক আমন ধান চাষ করে সেচ ছাড়া ও কম সার ব্যবহার করে বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব।

(এসকেকে/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test