E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বেশী দাম ও গো-খাদ্যের চাহিদা পূরণ

রাজারহাটে আগাম জাতের ধানে বাম্পার ফলন 

২০২২ নভেম্বর ০৮ ১৭:৪৯:১১
রাজারহাটে আগাম জাতের ধানে বাম্পার ফলন 

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট : চলতি আমন মৌসুমে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে আগাম ‘বিনা-১৭’ জাতের ধান রোপন করে বাম্পার ফলন পেয়েছে কৃষকরা। এ জাতের ধান শুরু থেকে কাটা পর্যন্ত মোট ১১০দিন সময় লাগে। এ ধান উত্তোলনের পর  রবি ফসল সরিষা, আলু,  বেগুন-মূলাসহ শাকসবজির আবাদ করা যায়। পাশাপাশি অমৌসুমে ধান কাটায় গো-খাদ্য হিসেবে ধানের খড়ের চাহিদা বাড়ে, সেই সাথে বেশী দামে ধান বিক্রি করে কৃষকরা। গত মৌসুমে এ জাতের ধান রোপন করে লাভবান হওয়ায় এবারো অনেক কৃষক এ ধান রোপন করেছে। তাই ফলনও হয়েছে বাম্পার।

জুলাইয়ের শেষের দিকে ধান রোপন করে অক্টোবরের শেষের দিকে ঘরে ধান তোলা যায়। যা প্রায় একমাস আগেই বিনা-১৭ ধান উঠছে কৃষকের ঘরে। তাই আগাম বিনা-১৭ জাতের ধান কৃষকরা রোপন করছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। কারণ উচ্চফলনশীল হওয়ায় এবছর জাতটির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। কম সময়ে চাষ করা গেছে বলে খরচও হয়েছে অনেক কম। তাই বিনা উদ্ভাবিত স্বল্প সময়ের জাত বিনা-১৭ ধান এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ এলাকায়।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, বনা-১৭ জাতের ধান একরে ফলন প্রায় ৬০/৭০ মণ। যা আমনে চাষ হওয়া অন্য গতানুগতিক জাতের চেয়ে একরে ১০ থেকে ১৫মণ বেশি। পাশাপাশি স্বল্প সময়ের কারণে দ্রুত ধান কেটে রবিশস্যের চাষ করা যাচ্ছে একই জমিতে, যে জমি আগে ইরি-বোরো পর্যন্ত অনাবাদি থাকতো। এ জাতটির কারণে পতিত জমি না থাকায় বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

এ বিষয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুধখাওয়া মৌজার কৃষক আলহাজ্ব ফজলুল হক মন্ডল( ৬৬) বলেন, দুই একর জমিতে বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ করেছি এবছর। ফলন হয়েছে বেশ ভাল। আশা করছি, দুই একরে এবার প্রায় ১২০ মণ ধান উৎপন্ন হয়। এর পর আমি ওই জমিতে আলু চাষ করবো।

প্রথম এ ধান রোপন করা নিয়ে তিনি আরো বলেন, এ জাতের ধান চাষে প্রথমবার ধান রোপনের সময় জমি তৈরি করতে একবার সেচ দিয়েছি, এর পর বৃষ্টির কারণে আর সেচ দেয়া লাগে নাই। ফলন ভাল হওয়ার জন্য ওই জমিতে ৫০ কেজি ইউরিয়া সার একবার ছিটানো হয়, ছত্রাক ও কীটনাশক দেয়া হয়েছে ২বার, যার খরচ গতানুগতিক আবাদের চেয়ে অনেক কম। অন্যান্য কৃষকদের সাথে ধান রোপনের পর আমার জমির ধান কাটা হচ্ছে আরো একমাস আগে। সে তুলনায় অন্যদের আরও ২-৩টি সেচ দিতে হবে। তাদের খরচও অনেক বেশী হবে। একমাস পরিশ্রমও বেশি করতে হবে। আর আমি সে সময়ে আগাম আলু চাষ করবো। বিনা-১৭ জাতের ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় এলাকার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিস জানান, রাজারহাট উপজেলায় এবছর ১১হাজার ৫১৬ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। আর অর্জিত হবে ১১হাজার ৬০০ হেক্টর। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ হয়েছে প্রায় ৩০হেক্টর জমিতে। অক্টোবরের শেষ এবং নভেম্বরের ১ম সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সবগুলো এলাকায় শেষ হবে এ ধান কাটা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সম্পা আকতার বলেন, বিনা ধান-১৭ জাতের ধানসহ বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। যেগুলো গতানুগতিক ধান চাষের এক মাস আগে তোলা যায়। এ ধান ঘরে তুলেই তেল জাতীয় সরিষা সূর্য্যমূখী সহ আগাম রবি শষ্য চাষ করা যায়। তাই এ জাতীয় ধান চাষ করতে উপজেলার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

(পিএস/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test