E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের মাধ্যমে আমন কর্তন শুরু, সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ ও শ্রম

২০২২ নভেম্বর ২২ ১৪:৪৪:৪৭
কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের মাধ্যমে আমন কর্তন শুরু, সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ ও শ্রম

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিন্নার হাওরে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে আমন কর্তণ শুরু হয়েছে। এতে যেমন সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ তেমন কমছে শ্রম,লাভমান হচ্ছেন কৃষক। প্রতি বছরের মতো এই হাওরে প্রায় ১শ ২৩ বিঘা জমিতে এবছরও হাইব্রিড জাতের আমন কৃষি যান্ত্রিকরণের মাধ্যমে রোপণ শুরু করেন সফল কৃষি উদ্যেক্তা এস,এম উমেদ আলী ও সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহিন। এই হাওরে সর্ব প্রথম আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার শুরু করেন সফল এই দুই উদ্যেক্তা। রোপা আমনের অধিক ফলনের জন্য হ্ইাব্রিড জাতের বীজ আর উন্নত সব কৃষি যন্ত্র ব্যবহারের কারনে সফলতাও পেয়েছেন এই তারা। এক সময় যেখানে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ খেকে ১৬ মণ আমন ধান পাওয়া যেতো, এখান তা দাড়িয়েছে ২২ থেকে ২৪ মনে।

গত সোমবার (২১ নভেম্বর) উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আজমেরু এলাকার ওই হাওরে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের মাধ্যমে নবান্নের আমন কর্তন কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এবং পাতাকুড়ি এগ্রো’র সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন,নবান্নের এই উৎসবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে রোপা আমণ রোপণ এবং কর্তন অনুষ্ঠানে আমরা এসেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রতিটি ইঞ্চি জমি কাজে লাগিয়ে আমাদের কৃষিকে যেন আমরা অদ্ভিক্ত অঞ্চলে পরিণত করতে পারি তারই এক উজ্জল দৃষ্টান্ত আমরা এখানে দেখেছি। এই জমিতে একেবারে অমন রোপণ থেকে শুরু করে কর্তন পর্যন্ত কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের মাধ্যমে কর্তন করব। পুরো প্রক্রিয়াটির মাধ্যমেই কৃষি যান্ত্রিকীকরণের একটি উদাহরন আমরা দেখেছি। তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেমন শ্রম কমেছে,আমাদের অর্থ যেমন কমেছে,উৎপাদন বেড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে কৃষক লাভমান হচ্ছে। সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের সবকিছু ভর্তুকি দিচ্ছে এবং প্রণোদনা দিচ্ছে এবং এটির মাধ্যমে আমরা এখান থেকে মৌলভীবাজারের সকল কৃষকদেরকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি।

সদর উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, কৃষিতে একটা নিরব বিপ্লব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রষারণ অধিদপ্তর কৃষি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে সেটা হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তির কারণে। আগে যে সিমাবদ্ধতা ছিলো কৃষকের সাথে যোগাযোগ। এখন সরাসরি কৃষক পরামর্শ পাচ্ছে,নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার এগুলো মাঠে বাস্তবায়নের কারণে কৃষকদের অনেক প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। একসময় কৃষক নায্য মূল্য পেতো না এখন কৃষক নায্য মূল্য পাচ্ছে যার কারণে কৃষিতে উৎপাদনও বাড়ছে।

কৃষি উদ্যেক্তা এস.এম উমেদ আলী বলেন, যে জমিতে আমরা ধান কাটছি,সে জমিতেই আমরা মেশিন দিয়ে চারা রোপণ করেছি। আজকে যে ধান আমরা কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার যন্ত্র দিয়ে কাটছি সেটি ব্যবহারে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে যায়। শ্রমিক সঙ্কট প্রতি বছরই লেগে থাকে যেকারণে আমরা যন্ত্রের উপর পরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পরছি। এসব জমিতে আগে বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান পাওয়া যেতো। এখন আমরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আসায় এবং হাইব্রিড পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় এখন বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৪ মণ ধান উৎপাদন হচ্ছে। এখানে সাম্প্রতিক সময়ে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিতে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সে কারণে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার বা শেলো মিশিন পাম্পসহ সবকিছুই ডিজেলের উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি ধানের মূল্য যদি আরেকটু বৃদ্ধি করা হয় তাহলে কৃষক উপকৃত হবে এবং কৃষিতে কৃষকের আগ্রহ বাড়বে।

(একে/এএস/নভেম্বর ২২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test