E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বৃষ্টি নেই পানি নেই বিদ্যুতেরও সংকট, আমন আবাদে তীব্র সংকট

২০২৩ জুলাই ২৮ ১২:৪৭:৪৭
বৃষ্টি নেই পানি নেই বিদ্যুতেরও সংকট, আমন আবাদে তীব্র সংকট

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : বৃষ্টি নেই, পানি নেই, বিদ্যুতেরও সংকট থাকায় জমিতে সেচ কাজ না করতে পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আমন আবাদের জন্য যে জমিতে এখন চারা রোপনের জন্য তৈরি হয়ে যেতো, সেই জমিতে পানির অভাবে কৃষকরা লাঙল কিংবা কলের লাঙল কোনটাই নামাতে পারছেন না। এর ফলে তাদের চোখে মুখে নেই হাসি।

কেন্দুয়া উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায় চলতি আমন মৌসুমে ২০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুপাতে কৃষকরা বহু কষ্টে ১ হাজার ২১ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জমিতে পানি নেই। বৃষ্টির বিকল্প হিসাবে বিদ্যুতের মাধ্যমে মটার দিয়ে জমিতে সেচ দেওয়ার সুবিধা থাকলেও বিদ্যুতের অভাব থাকায় কৃষকরা জমিতে সেই সেচও দিতে পারছেন না। গড়াডোবা ইউনিয়নের পাথারিয়া গ্রামের কৃষক শামীম, হারুন ও রবিকুল মিয়া জানান ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রামে ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। যে কারণে প্রচন্ড গরমে দৈনন্দিন কাজেও পানির অভাবে কষ্ট হচ্ছে আবার বিদ্যুতের অভাবে জমিতে সেচের মাধ্যমে পানি সরবারহ করতে পারছেনা।

শামীম মিয়া জানান পানির অভাবে আমাদের গ্রামের সামনের হাওড়ের জমি এখন ফেটে যাচ্ছে চাষাবাদ করতে পারছিনা। দেরিতে আমনের চারা রোপন করলে আমন ধান কেটে এই জমিতে আর সরিষা করা যায় না। যে কারণে আমরা পরেছি দু:শ্চিন্তায়। রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান আকন্দ জানান তার ইউনিয়নে ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। এর ফলে প্রচন্ড গরমে একদিকে যেমন জন জীবন বিপর্যস্ত অপর দিকে পানির অভাবে আমন চাষ ব্যহত হচ্ছে। তিনি বলেন বিদ্যুৎ থাকলে বৃষ্টির বিকল্প হিসাবে সেচ দিয়ে পুষিয়ে নেওয়া যেতো। একেই কথা বলেন গন্ডা, মাসকা, গড়াডোবা, মোজাফরপুর, পাইকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ।

এদিকে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কেন্দুয়া জোনাল অফিসের ডি.জি.এম মুজিবুর রহমান বলেন ৯০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট কিন্তু সে তুলনায় কোনদিন পান ৭ মেগাওয়াট কোন দিন ৮ মেগাওয়াট এবং বৃহস্পতিবার ১০ পেয়েছেন বলে তিনি বাদি করেন। তার দাবি বিদ্যুতের চাহিদা মোতাবেক সর্বরাহ কম থাকায় গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না। তবে একেই কার্যালয়ের এ.জি.এম দাবি করেন ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে আবার সাধারণ জনগণসহ ইউপি চেয়ারম্যানগণ দাবি করেন ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না।

এসব বিষয়ে সমন্বয় ও গ্রাহকের চাহিদা মেটানোর জন্য নেত্রকোনা-৩ আসনের এ.এম.পি অসীম কুমার উকিল বলেন কোনটা বিশ্বাস করব বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে আর জনগণ ও ইউপি চেয়ারম্যানগণ বলছেন গ্রাম পর্যায়ে ২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না।

তিনি বলেন বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট মুঠো ফোনে কথা বলেছি আশা করছি সমাধান হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানার ভাষা বৃষ্টির অভাবে জমিতে পানি নেই আবার বিদ্যুতের অভাবে কৃষকরা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। এর ফলে আমন আবাদের কৃষকরা বেকায়দায় পরেছেন। তিনি বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের দাবি জানান।

(এসবিএস/এএস/জুলাই ২৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test