E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ চাষে কৃষকের সাফল্য 

২০২৩ ডিসেম্বর ১৩ ১৭:৫৫:১২
দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ চাষে কৃষকের সাফল্য 

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালীন (নাসিক এন-৫৩) জাতের পেঁয়াজ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, খানসামা, বিরল ও বীরগঞ্জ উপজেলায় অসংখ্য কৃষক এই গ্রীষ্মকালীন (নাসিক এন-৫৩) জাতের পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই চাষিরা ক্ষেত থেকে শুরু করেছেন পেঁয়াজ উত্তোলনের কাজ। এতে এই সংকট মুহুর্তে আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

মুলত: দেশের বেশির ভাগ কৃষক শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করেন। ফলে গ্রীষ্মকাল আসতে আসতে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। বিদেশ থেকে আমদানির পরও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। গত কয়েক বছর ধরে এই অবস্থা চলতে থাকায় কৃষি বিভাগ দেশে গ্রীষ্মকালেও পেঁয়াজ চাষের পদক্ষেপ নিয়েছে।গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ চাষে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে লাখ টাকা আয় করছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা। স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অন্য কৃষকরাও ঝুঁকছেন নতুন গ্রীষ্মকালীন এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ জন্যে ২ হাজার ৫০০ জন কৃষককে প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। হেক্টর প্রতি পেঁয়াজের ফলন ১৭ মেট্রিকটন। আবহওয়া অনুকুলে থাকলে ও কৃষকরা যথাযথ পরিচর্যা করলে ফলন আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরজমিনে দেখা যায়, চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের কৃষক গনেশ চন্দ্র রায় ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলছেন। বেশ হাসি খুশি তিনি।

এ বিষয়ে তিনি জানান, 'সরকারি প্রণোদনা পেয়ে গতবছর থেকে আগাম জাতের গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ চাষ করছি। গতবার পরীক্ষামুলক ভাবে পাঁচ শতক জমিতে লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। বাজারে দামও ছিলো ভালো। তাই এবার ১০ কাঠা জমিতে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ চাষ করেছি। এবারও পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে একেকটি পেঁয়াজের ওজন ২০০ গ্রামের বেশি। আমার দশকাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা ।এখন এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১২০ টাকা তাতে খরচ বাদ দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ হবে।'

বিন্নাকুড়ি এলাকার পেঁয়াজ চাষি নিশি কান্ত রায় বলেন, 'গতবছর থেকে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ চাষ করছি প্রনোদনার আওতায় এবারও ২০ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। বৃষ্টির জন্য কিছু চারা মারা গেছে। তবে, পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। একেকটি পেঁয়াজের ওজন ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম। পেঁয়াজ তুলে বাজারে বর্তমানে দামও ভালো পাচ্ছি।'

পেঁয়াজ চাষি কৃষ্ট মহন্ত জানান, 'আমি প্রথম এবার প্রনোদনার আওতায় দশ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ লাগিয়েছি। প্রথম দিকে বৃষ্টির কারনে আমার খেতের কিছু চারা মারা গিয়েছে। আর এক সপ্তাহ পরে পেঁয়াজ তুলবো ক্ষেত থেকে। আশা করছি, ভালো দাম পাবো।উৎপাদন খরচের থেকে দ্বিগুন দামে বিক্রি হবে পেঁয়াজ।'

চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষক কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, 'চিরিরবন্দর উপজেলার ১৫০ জন কৃষকদের প্রনোদনার আওতায় বীজ সার বিতারণ করা হয়। সেই সাথে বীজতলা তৈরির জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগীতা করা হয়েছে। এখন পেঁয়াজের সংকট কালিন সময়ে কৃষকরা সেই পেঁয়াজ বাজারে নিয়ে আসতে পারছে। বর্তমান বাজারে রপ্তানি করা পেঁয়াজের যে দাম, তাতে গ্রীষ্মকালিন পেঁয়াজ গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখছে। কৃষক ভালো দাম পাচ্ছে।'

(এসএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test