E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপদাহে নষ্ট হচ্ছে কৃষি ফসল

২০২৪ এপ্রিল ২৩ ১৭:০০:৩৫
চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপদাহে নষ্ট হচ্ছে কৃষি ফসল

শেখ লিটন, চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপদাহ। প্রতিদিনই তাপমাত্রা পারদ ৪০ ডিগ্রির ঘর অতিক্রম করছে। এমন অবস্থায় মাঠের ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা। ফসলে ক্ষতি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত রোদের তেজ, আবহাওয়ার বিরুপ আচরণে আর অনাবৃষ্টিতে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দীর্ঘ হচ্ছে। ক্ষেতে পানি শূণ্যতা দেখা দিয়েছে। যদিও সেচ দিয়ে তা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুলচারা গ্রামের কৃষক মুনতাজ আলী সাড়ে তিন বিঘা জমিতে দেশি জাতের কচুর আবাদ করেছেন। কিন্তু তীব্র তাপ আর বৃষ্টি না হওয়ায় কচু গাছের পাতা কুকড়িয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনাবৃষ্টি আর তীব্র তাপদাহের কারণে এমন ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান কৃষক মুনতাজ আলী। এই কৃষকের ফসলের মতো মাঠে আরও অন্যান্য ফসলে ঠিক একই ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে।

অতিরিক্ত তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে কলা গাছ মরে যাচ্ছে এবং কলার ছড়ি গাছ থেকে পড়ে যাচ্ছে। একইভাবে আমের গুটি ও লিচুর গুটি গাছ থেকে ঝরে পড়ছে। ফলে আম-লিচু ও কলার কাঙ্খিত উৎপাদন নিয়ে কৃষকরা পড়েছে মহা দুশ্চিন্তায়।

এর আগে, ভুট্টার মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ভুট্টা ক্ষেতে পোকার আক্রমণসহ বিভিন্ন রোগ বালায় দেখা দিয়েছিল। এতে কৃষকরা এবার ভুট্টাতে তেমন লাভবান হয়নি বলে জানা গেছে। মাঠে এখন বোরো ধানের কর্মযজ্ঞ চলছে। এই সময় ধানে প্রচুর পরিমাণ পানি লাগে। কিন্তু অতি তাপদাহ আর বৃষ্টি না হওয়াতে এবার ধানে পর্যাপ্ত সেচ পাচ্ছে না। ফলে কৃষক বাড়তি টাকা খরচ করে সেচ দিচ্ছে। এতে ফসলে ব্যয় বাড়ছে। একদিকে অনাবৃষ্টি অপরদিকে কৃষি উপকরণ সার তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়াতে এসকল কৃষকের এখন মাথায় হাত। একই ভাবে এই তীব্র তাপদাহে ক্ষতি দেখা দিয়েছে পান বরজ, ঢেড়স, আখসহ আরও অধিকাংশ ফসলে।

কৃষক মুনতাজ আলী বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপ। আর বৃষ্টি নেই। এতে আমার কচু সব নষ্ট হয়ে গেল। আবার আমের গুটি পড়ে যাচ্ছে। ফলে সব ফসলে তাপদাহের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এখন প্রয়োজন বৃষ্টি। না না হলে ফসল বাঁচবে না।

অপর কৃষক হাজরাহাটি গ্রামের কৃষক হাছান আলী বলেন, আমার পান বরজে পানের পাতা পুড়ে যাচ্ছে। যে পরিমাণ রোদের তাপমাত্রা ফসলের কাজ করাও দুস্কর হয়ে পড়েছে। ধানে প্রতিদিন সেচ দিতে হচ্ছে। তেলের যে দাম আবার সারের দাম সব মিলিয়ে বৃষ্টি না হওয়াতে খুব বিপদে আছি। এখন শুধু অপেক্ষা করছি বৃষ্টির পানির জন্য।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। এমন সময় বৃষ্টি না হলে ফসলের ক্ষতি দেখা দেয়। কিছু কিছু ফসলের ক্ষতি দেখা দিচ্ছে। তবে এই ক্ষতি কাটানোর জন্য জেলা কৃষি বিভাগ থেকে সব রকম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। কৃষকদের বলা হচ্ছে বেশি বেশি করে ফসলে পানি দিতে হবে। সবসময় যাতে ফসলের গোড়ায় পানি থাকে। তাহলে আর তেমন ফসলে ঝুঁকি থাকবে না। এছাড়া ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সব রকম পরামর্শ অব্যাহত আছে।

(এসএল/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test