E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে খরায় পুড়ছে সবজি ক্ষেত, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা

২০২৪ মে ০৭ ১৬:০১:৪৬
ঈশ্বরদীতে খরায় পুড়ছে সবজি ক্ষেত, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। গত ৩০ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। মাসাধিক সময় ধরে তীব্র ও অতি তীব্র দাবদাহে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শাক-সবজির ক্ষেত। চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঝিঙা, বেগুন, করলা, টমেটো, শসা ও মরিচের মতো সবজির ওপর গরমের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। পুড়ে লাল হয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। সবজি আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। দুইবেলা ক্ষেতে সেচ দিয়ে পানি দিয়েও গাছ বাঁচাতে পারছেন না। এতে সবজির উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক। এরইমধ্যে স্বল্পকালীন সময়ে গ্রীষ্মকালীন উৎপাদিত সবজির আমদানি বাজারে কমে গেছে। যেকারণে বেড়ে গেছে বিভিন্ন শাক-সবজির দাম।

ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা, সাহাপুর, গড়গড়ি, চর-গড়গড়ি, আওতাপাড়া, মুলাডুলি ও ভাড়াইমারিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাপকভাবে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির চাষ হচ্ছে। কিন্তু এবারের খরা ও দাবদাহে পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে গাছ।

সোমবার (৬ মে) চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি অধিকাংশ জমিতেই আবাদ হয়েছে। ফলন আসার আগমুহূর্তে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। অধিকাংশ স্থানে প্রখর রোদে বিবর্ণ হয়ে গেছে শাকসবজির গাছ। কিছু মরে গেছে। কমে গেছে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, আসছে না ফলন।

কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঝিঙা, বেগুন, করলা, টমেটো, শসা, মরিচ ও লাউয়ের মতো সবজি গাছগুলো শুকিয়ে মারে যাচ্ছে। কিছু কিছু গাছের পাতার রস এক ধরনের পোকা শুষে নেওয়ায় পাতা কুঁকড়ে গাছ মরে যাচ্ছে। বেগুনে নলি পোকা ছিদ্র করে ঢুকছে। এসব রোগবালাই দমনে চাষিরা কীটনাশক ও পানি দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

ভাড়ইমারি গ্রামের কৃষক রবিউল জানান, তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে করলা, জালি কুমড়া, লাউ ও বেগুন চাষ করেছেন। টানা দাবদাহ ও প্রখর রোদ শাকসবজি গাছের জন্য সহনীয় নয় জানিয়ে ওই কৃষক বলেন, এসময়ে সবগুলো গাছে ফলন থাকার কথা ছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় গাছ বড় হয়নি। উল্টো রোদে পুড়ে করলা, জালি কুমড়া ও বেগুন গাছ মরে যাচ্ছে। বেশিরভাগ গাছই শুকিয়ে গেছে। পানি দিচ্ছি নিয়মিত, কিন্তু সকালে পানি দিলে দুপুরের আগেই শুকিয়ে যায়। বৃষ্টি না হলে কোনও গাছই বাঁচবে না।

মুলাডুলির কৃষক আজিজুল হক বলেন, জীবনে এত গরম দেখিনি। আবাদকৃত ভেন্ডি, শসা ও মরিচ গাছ রোদে পুড়ে যাচ্ছে। আশপাশের পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে। দূরের এলাকা থেকে পানি এনে ক্ষেতে দিচ্ছি। কিন্তু গাছগুলো মরে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এখন গ্রীষ্মকালীন শাক সবজির আবাদ চলছে। তবে বর্তমানে যে দাবদাহ চলছে, তাতে শাকসবজির গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবজির ক্ষেত। গরমে কিছু কিছু গাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ তীব্র তাপপ্রবাহ।

উপজেলা কৃষি অফিসার মিতা সরকার বলেন, কৃষির জন্য চলমান টানা তীব্র দাবদাহ ক্ষতিকর। এতে গাছের বৃদ্ধি হচ্ছে না এবং কিছু কিছু গাছ পুড়ে মরে যাচ্ছে। বৃষ্টির খুবই প্রয়োজন। সমৃদ্ধ কৃষকরা বিপুল টাকা খরচ করে প্রতিদিনই সেচ দিচ্ছে।

(এসকেকে/এসপি/মে ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test