E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 টমেটোয় চাষীদের ভাগ্য বদল

২০১৫ জানুয়ারি ২০ ১৩:৩৬:১৬
 টমেটোয় চাষীদের ভাগ্য বদল

নন্দীগ্রাম(বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে টমেটো চাষীদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। অনেকেই টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চলেছেন। চাষাবাদ দেখে টমেটো চাষে ঝুকছেন উপজেলার চাষীরা।

কর্মসংস্থানের অভাবে যারা একসময় সংসার জীবনে পিছিয়ে পড়েছিলেন’ তারাই এখন স্বাবলম্বী হওয়ার পথে। এদের মধ্যে উপজেলার ভাটগ্রাম পঞ্চিমপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব আয়েত আলীর ছেলে আব্দুল গাফ্ফার। বয়স ৩২বছর। তিনি একসময় কর্মসংস্থানের অভাবে সংসার চালাতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। অন্যের টমেটো চাষ দেখে উজ্জীবিত হন গাফ্ফার। মাদ্রাসা শিক্ষায় হাফেজ হওয়ার পর সংসারের হাল করেন তিনি। গাফ্ফার জানান, জামাদারপুকুর এলাকাধিন পলগাছা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আমার শশুর বেশকিছু জমিতে টমেটো চাষ করে আসছেন। তার চাষাবাদ দেখে আমিও টমেটো চাষের পরিকল্পনা করি। পরে স্থানীয় কৃষকদের কাছে পরামর্শ করে ২০১০সালে ভাটগ্রাম মৌজার নিনগ্রাম-নিজামতকুড়ি রাস্তার পার্শ্বে আমার নিজস্ব ৮শতক কাচারি জমিতে প্রথমে সফল জাতের ৪৫০পিস চাঁরা রোপন করি। প্রথম চাষাবাদে খরচ বাদে আমার লাভ হয়েছিল ২৮হাজার টাকা। চাষ করে লাভ হওয়ায় দিনদিন আমার চাষাবাদি জমির পরিমান বাড়াতে থাকি। তিনি জানান, এবার ২৫শতক জমিতে টমেটো চাষ করছি। ভাদ্র মাসের শেষ দিকে বীজতলা করতে হয়। এরপর আশ্বিন মাসের শেষ দিকে ১৩শ ৫০পিস চাঁরা চাষাবাদি জমিতে রোপন করি। রোপনের ১৫দিন পর চাঁরাটি নিড়ানি দিয়ে মাটি দিয়ে গোড়ালি বেঁধে রাখি। ২০দিন পর টমেটো চাঁরার বেঁধে দেয়া গোড়ালি পুরোটাই ভেঙে দিয়ে খৈল, সার, কীটনাশক দিয়ে দ্বিতীয় বারেরমত মাটি দিয়ে গোড়ালি বেঁধে দেই। তারপর ৩৫-৪০ বয়স হলে শেষ বাঁধন দিয়ে মাচালি তৈরী করি। ৫০-৫৫ দিন পর প্রতিটি গাছে ফল ধরে। ৭৫-৮০দিনের মাথায় ফলগুলো তোলার উপযোগী হয়। পশু-পাখিদের হাত থেকে ফলন ও ফসল রক্ষা করার জন্য চাষাবাদি জমির চারপাশে নেট-জাল ব্যবহার করছি। টমেটো চাষি হাফেজ আব্দুল গাফ্ফার আরোও জানান, ২৫শতক জমিতে টমেটো চাষাবাদে আমার খরচ হয়েছে ১৫হাজার টাকা। গতবছর এই জমিতে যা টমেটো হয়েছিল’ তা বিক্রয় করেছিলাম ১লাখ ২০হাজার টাকারমত। এবারও ফলন ভাল হয়েছে। টমেটো তুলে বিভিন্ন হাট-বাজারে খুচরা ও পাইকারি বিক্রয় করি। বর্তমানে হাট-বাজারে কেজিপ্রতি ২০থেকে ২৫টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। পাইকারি প্রতিমন ৭০০টাকা থেকে ৮০০টাকা দরে। এবার গতবছরের তুলনায় ফলন বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশী লাভ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। টমেটো চাষ করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। আব্দুল গাফ্ফারের মত ভাটগ্রামের সেলিম রেজা ৪শতক জমিতে, শামিম আহমেদ ৮শতক জমিতে, ফরিদ উদ্দিন ১৪শতক জমিতে, রফিকুল ইসলাম ৪শতক জমিতে, আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম ৪শতক জমিতে, নিজামত কুড়ির মুনু মিয়া ৫শতক জমিতে ও নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের ডেরাহার গ্রামের আব্দুল হামিদ ২৫শতক জমিতে টমেটো চাষ করছেন। তবে চাষিরা জানিয়েছেন, গতবারের চেয়ে এবার টমেটো গাছে রোগবালাই বেশী দেখা দিয়েছে। যেকারণে চাষাবাদে খরচও বেশী হয়েছে। বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ব্যবহার করেও কোন লাভ হচ্ছেনা। এপ্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মুশিদুল হক বলেন, এধরনের অনেক কৃষক আমাদের কাছে এসেছেন। টমেটো গাছে পোকা-মাকড় রোধে কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ অব্যহত রয়েছে। পাশপাশি মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের সহযোগীতা করতে উঠান বৈঠক, লিফলেট ও মাইকিং করে প্রচার প্রচারনা অব্যাহত রয়েছে।
(এমনস/পিবি/জানুয়ারি ২০,২০১৫)







পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test