E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খোলা মাঠে রয়েছে ৩ কোটি টাকার সার, কৃষকের প্রতারিত হবার শংকা

২০১৫ জানুয়ারি ২৪ ১২:২১:৩৯
খোলা মাঠে রয়েছে ৩ কোটি টাকার সার, কৃষকের প্রতারিত হবার শংকা

বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালে বিএডিসি’র সরকারি গুদাম ব্যাক্তি মালিকানায় ভাড়া দেয়ায় জায়গা সংকটের কারণে বিসিআইসির তিন কোটি টাকা মূল্যের দুই হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার গত দশ দিন যাবত খোলা আকাশের নীচে পড়ে আছে। এতে ওই সারের গুনগত মান নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলার কৃষি কর্মকর্তারাসহ জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল আলম ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) বরিশাল অফিসের ইনচার্জ আব্দুর রহিম খন্দকার।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সরকারি গুদাম ব্যক্তি মালিকানায় ভাড়া দেওয়ায় এবং তা নিয়ে আইনী জটিলতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিসিআইসি বরিশাল অফিসের ইনচার্জ আব্দুর রহিম খন্দাকার জানান, প্রতিবছর মৌসুমের শুরুতেই এলাকার চাহিদা অনুযায়ী জানুয়ারি মাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় সার পাঠানো শুরু করেন। সে মোতাবেক দশ দিন আগে বরিশালে দুই হাজার মে. টন ইউরিয়া সার এসেছে। যার বাজার মূল্য তিন কোটি টাকা। তবে বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলার তীরে বিএডিসির সরকারি গুদাম না পেয়ে ওই এলকায় খোলা আকাশের নীচে সারের বস্তা রাখতে হয়েছে তাদের। এতে করে বৃষ্টি হলে বা বাতাসে সারের গুনগত মান বিনষ্ট হওয়ায় আশঙ্কায় তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়াও সারের বস্তা দীর্ঘদিন এভাবে থাকলে উপযুক্ত আবহাওয়ার অভাবে সারের গুণগতমান হারানো শঙ্কা রয়েছে বলেও জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মনিরুল আলম জানান, সামনে তাদের বোরো ধানের মৌসুম। এ বছর বরিশালে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের আশা করছেন তারা। সেক্ষেত্রে ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার মে. টন। কোনো কোনো বছর মধ্য ফেব্র“য়ারি থেকে সারের সঙ্কট দেখা দেয়। এ জন্যই তারা বিসিআইসিকে আগাম সার আনার জন্য চাহিদা দিয়েছেন। তবে শুরুতেই সার রাখার গুদাম সঙ্কট হওয়ায় এবং খোলা জায়গায় থাকায় নীচের দিকের সারের বস্তা শক্ত হয়ে যাচ্ছে। ওই সার কিনে ভোগান্তিতে পড়বে কৃষক। গুদাম সঙ্কটের কারণ সম্পর্কে বিএডিসি বরিশাল অফিসের যুগ্ম পরিচালক শাহ নেওয়াজ জানান, সার আমদানি বন্ধ থাকায় মাসে ৪০ হাজার ৭৯৫ টাকা পরিশোধ করার শর্তে ১৯৯৫ সালের ২৯ আগস্ট বিএডিসির তিনটি গুদামের মধ্যে একটি (সার গুদাম-২) স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান খান সন্স গ্রুপের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়।

তিনি জানান, ২০০৫ সালে বিএডিসি সার আমদানি শুরু হলে গুদামটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য খান সন্স কর্তৃপক্ষকে তিন বার নোটিশ দেওয়া হয়। এতে খান সন্সের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। পরে ২০০৯ সালের ২১ জুলাই ফের আরেকটি নোটিশ দেওয়া হয় বিএডিসির পক্ষ থেকে। কিন্তু গুদাম ছাড়তে নারাজ খান সন্স গ্র“প সর্বশেষ নোটিশ পেয়ে ২০০৯ সালের ২৬ আগষ্ট মাসে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করে। ওই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত বিষয়টির ওপর চার মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপরে সর্বশেষ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল গুদাম খালি করে দেওয়ার জন্য খান সন্স গ্র“পকে আরেকটি নোটিশ পাঠায়। ওই নোটিশের কপি নিয়ে খান সন্স গ্র“প উচ্চ আদালতের দারস্থ হলে বিষয়টির ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যা এখনো চলমান। সরকারি গুদাম দখলে রাখার বিষয়ে খান সন্সের পরিচালক আব্দুর রব শাহীনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেনি।

খোলা আকাশের নীচে সার পড়ে থাকার বিষয়টি জেনে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, এ সমস্যা সমাধের জন্য তিনি জরুরী পদক্ষেপ নেবেন।

(টিবি/পি/জানুয়ারি ২৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test