E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নন্দীগ্রামে মাটিহাঁসের পল্লীতে এই প্রথম স্ট্রবেরী চাষ শুরু

২০১৫ মার্চ ২২ ১১:৫৪:৫৫
নন্দীগ্রামে মাটিহাঁসের পল্লীতে এই প্রথম স্ট্রবেরী চাষ শুরু

নন্দীগ্রাম(বগুড়া)প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার পল্লীতে এই প্রথম অন্যের জমিতে সুস্বাদু ‘স্ট্রবেরি’ ফলের চাষ করে মাটিহাঁস গ্রামের কৃষক রাজধন চন্দ্র স্বাবলম্বী হতে চলেছে। কোন প্রকারে ঝামেলা ছাড়াই সুস্বাদু ‘স্ট্রবেরি’ ফলের চাষ করছেন তিনি। অণ্যের চাষাবাদ দেখে এফল চাষে তার আগ্রহ হয়।

জেলার পীরগাছা থেকে চারা সংগ্রহ করে রাজধন চন্দ্র অন্যের একবিঘা জমি বছর পত্ত্বনি নিয়ে স্ট্রবেরী চাষ করেছেন। নিজের উৎপাদিত চারা না থাকায় সময়মত চারা বপন করতে বিলম্ব হয়েছে। তারপরেও সঠিক পরিচর্যা করায় ফলন এসেছে অনেক বেশি। ফলগুলো বেশ পরিপুষ্ট হয়েছে। শুধু ফল বিক্রি করে কমপক্ষে ৩লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন চাষী রাজধন চন্দ্র।

উত্তরাধিকার ৭১নিউজের উপজেলা প্রতিবেদক নজরুল ইসলামের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে চাষী রাজধন চন্দ্র বলেন, পীরগাছা গ্রামে আমার শ্যালকের স্ট্রবেরী চাষ দেখে আমার আগ্রহ হয়। শ্যালকের পরামর্শ নিয়ে পীরগাছার বিশ্বনাথের কাছ থেকে ৬হাজার স্ট্রবেরীর চারা সংগ্রহ করেছি। একবিঘা জমিতে ওই চারাগুলো রোপন করি। চারা ক্রয়, চাষ, রোপন, সেঁচ, নেটজাল ও ক্ষেতের বেড়াসহ যাবতীয় পরিচর্যায় একবিঘাতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ১লাখ টাকা। এআবাদে ইনতেফা নামের জিংক ব্যতিত অন্য কোন ঔষধ ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যায়না। তিনি আরো বলেন, স্ট্রবেরী চাষে আগ্রহী অনেক চাষি চারা সংগ্রহ করতে আসে। তবে আমি চারা বিক্রয় করছি না। স্ট্রবেরী ফল বিক্রি করে এপর্যন্ত ১লাখ টাকা আয় হয়েছে।
গাছে ফলন এসেছে দ্বিগুন। এছাড়া ফলগুলো অনেক বেশি পরিপুষ্ট হয়েছে। ৩৫/৪০টি ফলে এক কেজি হচ্ছে। তিনি জানান, প্রথম দিকে মাঘ মাসে প্রতি কেজি স্ট্রবেরী প্রায় ৩’শ টাকা দরে বিক্রি করেছি। বর্তমানে ৮০/১০০টাকা কেজি পাইকারি মূল্যে বিক্রয় করছি। কালিগঞ্জ, আবাদপুকুর, চাপাপুর, গুলিয়া, চাকলমা, হাটকড়ই, পন্ডিতপুকুর, ওমরপুর, নন্দীগ্রামের স্থানীয় হাট-বাজারসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এফলগুলো বিক্রয় করছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, স্ট্রবেরীর চারা সাধারণত অগ্রাহায়ন মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোপন করতে হয়। চারা রোপনের ৩০/৪০ দিনের মাথায় ফলন আসে। ৩ মাস ধরে ফল তোলা যায়। প্রতিটি গাছে ৩বার ফল ধরে। এক মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি ফল পাওয়া যায়।

চাষী রাজধন চন্দ্র জানিয়েছেন, তার চাষ দেখে এউপজেলার অনেক চাষী স্ট্রবেরী চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। স্ট্রবেরী ফল চাষের মাধ্যমে নিজের এলাকার অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটানোর আশা প্রকাশ করেছেন চাষী রাজধন চন্দ্র। তিনি নিজেরেও ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছেন। তার নিজস্ব কোন জায়গা-জমি না থাকা সত্বেও দু’জন শ্রমিককে প্রতিনিয়ত কাজে লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি ও আমার স্ত্রীসহ দু’জন শ্রমিক নিয়ে স্ট্রবেরীর পরিচর্যা করছি। প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতিদিন ২০০টাকা করে দিতে হয়। এচাষের পাশাপাশি তিনি টমেটো, শষা ও মরিচ চাষ করছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মুশিদুল হক জানান, স্ট্রবেরী চাষী রাজধন চন্দ্রের স্ট্রবেরী ক্ষেত পরিদর্শন করা হয়েছে। স্ট্রবেরী চাষে যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এউপজেলার কৃষকেরা অত্যন্ত পরিশ্রমি। তারা যেকোন ফসল চাষ একবার দেখেই চাষবাদ করার চেষ্টা করে। অতিকষ্টে হলেও বিভিন্ন চাষে সফল হতে পারে। চাষীরা স্ট্রবেরী চাষে আগ্রহী হলে কৃষি অফিসের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।

(এমএনআই/এসসি/মার্চ২২,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test