E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরণখোলায় আলুর ফলনে সর্বকালের রেকর্ড

২০১৫ মার্চ ৩১ ১৮:৪৩:১৫
শরণখোলায় আলুর ফলনে সর্বকালের রেকর্ড

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় এবছর আলু চাষে বিপ্লব ঘটেছে। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে প্রায় ২শ মণ। যা শরণখোলায় আলু চাষে সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কৃষকদের সাথে আলাপ করে এতথ্য জানাগেছে। তবে, বাম্পার ফলন পেলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। এতো আলু কিভাবে সংরক্ষণ করবেন এনিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মাঠে রেখেই কমদামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখনও শত মণ আলু মাঠে স্তুপ করা রয়েছে। ফলে আশাতীত ফলন পেয়েও আশানুরূপ লাভ পাচ্ছেন না তারা। একটি হিমাগারের (কোল্ডস্টোরেজ) অভাবে আলু নিয়ে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা।

বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ আলু ৩৬০থেকে ৪০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এবছর ফলন ভাল না হলে আলু রোপন থেকে শুরু করে উত্তোলন পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি মিটিয়ে তেমন লাভ করা যেত না। হিমাগার থাকলে প্রতিমণ আলু ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারতেন কৃষকরা। তাতে দ্বিগুন লাভ করা সম্ভব হতো। আলু চাষের প্রতি ঝুকে পড়তেন উপকুলীয় এলাকার শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলার ধানসাগর, খোন্তাকাটা, রায়েন্দা ও সাউথখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ১২৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তিন হাজার ১২৫ মেট্রিক টন। ফলনে কৃষি অফিসের সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গেছে। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মধ্যে খোন্তাকাটা এলাকায় সবচেয়ে বেশি পরিমান জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। ওই ইউনিয়নের পূর্ব রাজৈর গ্রাম ও দ্বীপচর গ্রামকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় আলুর গ্রাম।


উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের সাবেক কৃষকলীগ নেতা মো. আব্দুল করিম তালুকদার ও রাজৈর এলাকার বাসিন্দা কৃষক নাজমুল আহসান দুলু তালুকদার বলেন, ২০০৭ সালের ঘুর্নিঝড় সিডর এ অঞ্চলের অভিশাপ হলেও বর্তমানে তা কৃষি কাজের জন্য আর্শিবাদ হয়ে দাড়িয়েছে। সিড়র পরবর্তী সময় দেশের বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি এনজিও’র সহায়তায় এ অঞ্চলে কৃষি চাষ শুরু হয়ে তা কৃষি বিপ্লব হিসাবে দেখা দিতে শুরু করে এবং সিড়র পরবর্তীতে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষকরা দাবি করেন। তবে হিমাগার না থাকার কারণে উপজেলার উৎপাদিত আলু কম দামে বাগেরহাট, খুলনা, মংলা, মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর, বরগুনা সহ কাছাকাছি বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে দিচ্ছে। হিমাগার থাকলে বীজআলু এবং তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে পারতেন। আগামী মৌসুমে বীজআলু সংগ্রহের জন্য এ অঞ্চলের কৃষকদের মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন আড়তে ধর্ণা দিতে হবে। তাই একটি হিমাগার প্রতিষ্ঠার জন্য এ অঞ্চলের কৃষকরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অপরদিকে, পূর্ব রাজৈর এলাকার মাঠে আলু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত নারী শ্রমিক নুরজাহান, খাদিজা, ফাতিমা, রাহিমা, জহোরা, হাসিনা, মেহেরুন নেছা, সেলিনা বেগম সহ, অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আলু সংগ্রহের কাজ করে মজুরী হিসাবে দৈনিক ১২০ থেকে ১৩০ টাকার আলু পান। যেখানে একজন পুরুষ শ্রমিকের মজুরী দৈনিক ৪০০/৫০০ টাকা। নারী শ্রমিকরা মজুরী বৈসম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার জানান, শরণখোলায় কৃষকদের দিয়ে বেকারত্ব দুর করা সম্ভব। এখানকার মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা সারা বছরই কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ উপজেলায় একটি হিমাগার স্থাপন করা জরুরী। বিষয়টি উধর্বতন কতৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে।

(একে/এএস/মার্চ ৩১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test