E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফসলের ক্ষেতে ব্যস্ত বগুড়ার কৃষক

২০১৫ মে ০৫ ১৭:৫৬:০৮
ফসলের ক্ষেতে ব্যস্ত বগুড়ার কৃষক

বগুড়া প্রতিনিধি : রঙ ধরেছে। ফলন হয়েছে সোনা। এ সোনার ঝনঝন শব্দে ঘুম কেড়েছে বোরো চাষিদের। ফসলের ক্ষেতে চির নতুনের আহবানে ব্যস্ততায় অবসর নেই। নতুন ধান ঘর তুলতে মুঠোমুঠো স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছে কৃষক। বগুড়ায় শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা। নতুন ধান ঘরে তুলতে শুরু হওয়ায়  কৃষকের ঘরে আনন্দের বাতাস লেগেছে। জেলায় এবার বাপ্পার ফলন হয়েছে বোরোর।

কৃষি কর্মকর্তাদের মতে চলতি মৌসুমে চাল আকারে উৎপাদন ধরা হয়েছিল ৭ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু, চাষাবাদের পর বাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হবে ৮ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, ধান কাটার সময় পুরো জেলায় আনন্দ বয়ে যায়। কিছু কিছু এলাকায় আবার ধান কাটার জন্য আত্মীয় স্বজন দাওয়াত নিয়ে এসে ধান কাটা শুরু হয়। নতুন ধান ঘরে তোলা ও বাজারে বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে থাকে অনেক কৃষান বধু। গত বছর বগুড়ায় বোরোর ফলন হয়েছে বাম্পার।

আবাহাওয়া অনুকুলের সাথে সাথে সার বীজ সময়মত প্রয়োগ করা হয়েছে। এ কারণে বোরোর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। কৃষি বিভাগের মতে ২০১৩-২০১৪ মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ১ লাখ ৯২ হাজার ৩২০ হেক্টর। আর টার্গেট ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে। চাল আকারে উৎপাদন ৭ লাখ ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ৮ লাখ ১০ হজার ১৮৬ মেট্রিক টন। কৃষি অফিস বলছে এবছরও বোরোর বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। গত মৌসুমে বিঘা প্রতি ফলন পাওয়া গেছে ২২/২৩ মন করে। এবছর এমনই ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। বগুড়া জেলায় চলতি মৌসুমে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে। ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ১৪২ মেট্রিক টন (চাল আকারে)।

আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকুলে থাকায় ফলন পাওয়া যাবে প্রায় ৮ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন। বগুড়া সদরের বাঘোপাড়ার বোরো চাষি ফারু ক হোসেন জানান, ৪ বিঘা জমিতে বোরোর চাষ করা হয়েছে। আগামজাতের এক বিঘা ধান কাটা হয়েছে। দেশীয় জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। ঝড় বৃষ্টির আভাস থাকায় অনেকেই আবার দ্রুত ফলন ঘরে তুলছে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হুয়াকুয়া গ্রামের মুসা মিয়া জানান, বোরোর ভাল ফলন পাওয়া গেছে। কিন্তু, এবার ধানের হাটে দাম নেই। প্রতিমন বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা করে। মৌসুমের শুরু তেই ধানের দাম কম হওয়ার কারণে চাষিরা কতটা লাভবান হবে সে নিয়ে শংকিত। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আগাম রোপণ করা বোরো ধান কাটা শুরু করেছে কৃষক।

পোকামাকড়-রোগবালাই কম, নন ইউরিয়া সারের ব্যবহার, আধুনিক সেচ, কৃষক প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংসহ উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ বেশি হওয়ায় এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে ২১হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১লাখ ২৪হাজার, ৬২১ মেট্রিকটন।বগুড়ার নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার পূর্বপাড়ার শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিমণ পারি ৪৫০ থেকে ৪৭০টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে বিভিন্ন জাতের ধান কাটা শুরু হবে। তিনি আরো জানান, ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে লোকশান গুনতে হবে।বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক চন্ডি দাস কুন্ডু জানান, সময় মত চাষ শুরু হয়েছে।

গত বছরের মত এবারো বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের সাথে যোগাযোগ করছে। চাল আকারে ফলন ৭ লাখ ৫৫ হাজার ১৪২ মেট্রিক টন ধরা হলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোট উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে ৮ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে জেলার ১ শতাংশ ধান কাটা মড়াই শুরু হয়েছে।


(এএসবি/এএস/মে ০৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test